সব মুসলিমদের সন্ত্রাসী হতে হবে!
এমন একটা পৃথিবীর কথা ভাবুন তো, যেখানে পুরো মুসলিম বিশ্বই আইএস হয়ে গেছে! প্লীজ আমাকে কটু কথা আর বলবেন না। সে যুগ বোধহয় শেষ করে দিলেন মিঃ জাকির নায়েক। স্পষ্ট ভাষায় সমগ্র মুসলিম বিশ্বকে তিনি সন্ত্রাসে নেমে পড়তে বলেছেন। ভাবুন অবস্থাটা!
শুধু এতটুকুতে সীমাবদ্ধ থাকলে না হয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে শুধরে নেয়া যেত। কিন্তু তা কি হল? হতে দিলো? না। বিশাল এক জনগোষ্ঠী রীতিমত সন্ত্রাসীর উৎসাহদাতার পক্ষে ঝাঁপিয়ে পড়লো! জাকিরীয় যুক্তিতেই সবাই প্রমাণ করলেন, 'হ্যাঁ মুসলিমদের সকলেরই সন্ত্রাসী হওয়া উচিৎ'।
আমেরিকা যদি সন্ত্রাস হয় তাহলে তারচেয়ে বড় সন্ত্রাস হতে বদ্ধ পরিকর এইসব মুসলিমরা? যেন আর বাকী নেই ধ্বংস হওয়ার! সময় বোধ হয় খুব কাছে। এখনও কিছু মুসলিম সন্ত্রাসী হতে অস্বীকার করছেন সেও খুব আশা জাগানিয়া নয়। অতীতে এত মুসলিম কখনই কি সন্ত্রাস পক্ষে ছিলো? আমরা দেখেছি অতীতে আমেরিকার সন্ত্রাস প্রতিরোধে বিশাল বিশাল সমাবেশ করেছে মুসলিমরা। বিপরিত দিকে আইএস কিংবা তালেবানের বিরুদ্ধে তারা সমাবেশ করেনি। জাকির নায়েক বিতর্কের পর এ কথা বলার সময় বোধ হয় এসেছে যে, সামনে আইএস ও তালেবানের পক্ষে বিপুল সমাবেশ করে রেকর্ড ভেঙ্গে দেবে বিপুল মুসলিম। সম্ভবত সে যুগ অতি নিকটে।
এত কিছু বলা হল, কিন্তু আসল কথাটা এখনও বলে উঠতে পারলাম না। কথা হল, এইসব তৎপরতা যত বাড়ছে অমুসলিম বিশ্ব তত সিকিউরিটি হীন হয়ে পড়ছে।
আমরা বলতে চাইনা- মুসলিম মুক্ত বিশ্ব চাই। সে দিন না আসুক। সকলের সম্মতি ফিরে আসুক। আমরা যেন সন্ত্রাসকে 'সন্ত্রাস' শব্দেই সীমাবদ্ধ রাখতে পারি। ডিকশেনারিতে সমার্থক হিসেবে নতুন শব্দ যোগ করতে না হয়।
যেন বলতে পারি- 'সন্ত্রাসমুক্ত বিশ্ব চাই'।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
১৪ জুলাই ’১৬ বিকাল ০৩:৩৬
দাদা, আপনার উদ্বেগ এত চরম পর্যায়ে এসে পৌছেছে যে রীতিমত ভয় হচ্ছে যুক্তি দিয়ে কিছু লিখে আমিও সন্ত্রাসের পক্ষে পড়ে যাই কিনা। সে যাই হোক ব্যাক্তিগত ভাবে জাকির নায়কের অনেক কিছুই আমি পছন্দ করিনা। তবে যে প্রক্রিয়ায় ও যে কথাকে ভিত্তি করে তাকে সন্ত্রাসে উস্কানিদাতা বলা হচ্ছে সেটা সাধারন সেন্সে অত্যন্ত হাস্যকর।
আপনি যদি কখনোও ডাঃ জাকির নায়েকের স্পীস শুনে থাকেন। যদি বুঝতে পারেন তিনি কিভাবে প্রমাণ দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন তাহলে অবশ্যই আপনি তার এই সন্ত্রাস হওয়ার আহ্বানকে সন্ত্রাসের সাথে যুক্ত না করে সম্পূর্ণ বিপরিত অর্থ পেতেন। আপনি খুব ভালো করেই জানেন, ডিবেট কিংবা বৈজ্ঞানিক তত্ব উপস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রায়ই নিজের অবস্থানকে বিপক্ষ অবস্থানে নিয়ে তুলনা করা হয়। সেক্ষেত্রে 'ধরি আমি উমুক' বাক্য ব্যবহার করে একটা অবস্থান গ্রহণ করা হয়। ডাঃ জাকির নায়েক ঠিক এই কাজটাই করেছিলেন। তার ঐ স্পীসে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান জানিয়েছিলেন তিনি। তিনি পুলিশের উদাহরন দিয়েছিলেন। তিনি আইন ও আদালতের উদাহরন দিয়েছিলেন। তারপর তার কথাটা ছিলো- সন্ত্রাসীর কাছে পুলিশকে সন্ত্রাসী মনে হয়। একই ভাবে অসৎ ও মন্দ লোকেরা সৎ ও ভালো লোকদের সন্ত্রাসী বলে গণ্য করে। তিনি সন্ত্রাসীদের চোখের সেই সন্ত্রাস তথা শান্তিবাদীকে মিন করেছিলেন সেদিন। সেই বক্তব্যগত 'সন্ত্রাস' পুরোটাই আসল সন্ত্রাসের বিপরীত। ঠিক যেভাবে আজ জাকির নায়েককে যেভাবে সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে।
-আমাকে ভুল বুঝার আগে ঐ লেকচারটি শুনে আসুন। আশা করি পুরো দৃশ্যপট আপনার সামনে ফুটে উঠবে। জাকির নায়েক যদি বৈশ্বিক সন্ত্রাসে উস্কানি দেন তাহলে উপমহাদেশীয় জাকির বিতর্ক ছাপিয়ে গোটা আমেরিকাসহ বিশ্বময় এই ঝড় বয়ে যেত। কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন রুপে আমরা ঝড় দেখছি শুধুই ভারতীয় উগ্র গোষ্ঠীর মাঝে। যারা অগণিত সন্ত্রাস তৈরি, সন্ত্রাস উস্কে দেয়া ও তাতে নেতৃত্ব দেয়ার মত মামলার আসামী।
বিশ্ব সব সময় সন্ত্রাসের বিপক্ষে ছিলো, আছে, থাকবে। অনেক ধন্যবাদ।