ধর্ম নিয়ে আগ্রাসনঃ সংখ্যালঘু যাবে কোথায়?
যতবার এদেশে ধর্ম নিয়ে আলোড়ন হয়েছে ঠিক ততবারই গ্রামের সংখ্যালঘুরা শেষবারের মনে ঘর দেখে নিয়েছেন! শহরে সামান্য কিছু ঘটলে ছড়ায় বেশি। অন্যদিকে গ্রামের বড় কিছুও পত্রিকায় আসেনা। ফলে সারা দেশের সংখ্যালঘুর মানসিক অবস্থা কারো দৃষ্টিগোচর হয়নি, হবেও না। কেন হঠাত ধর্ম নিয়ে উদ্দীপনা শুরু হল?
রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে!?
পার্শ্ববর্তী ভারতের বহু সমালোচনা আমাদের দেশে হয়। আমি নিজেও সে সব সমালোচনায় অংশ নিয়ে থাকি। বিশেষত যখন সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয় ওদেশে। কিন্তু বিশ্ময়কর ব্যাপার কি জানেন?
ঐ দেশে কট্টর মৌলবাদীদের সংখ্যালঘু বিরোধী অপতৎপরতা ঐ দেশের আইনত দ্বারা কোন মতেই সমর্থিত নয়। সেখানে সবাই সমান। সেকুলার সংবিধান কারো ধর্ম দেখে বিচার করেনা। আবার সেকুলার সংবিধানে বিচারের ক্ষেত্রে ধর্মও কোন ইস্যু নয়। বরং সামাজিক বা রাষ্ট্রিয় অন্যান্য অপরাধ হিসেবে গৃহীত হবার সুযোগ রাখে। যেমন কারো ঘড় পুড়ালো। এখানে ধর্মকে ছাড়িয়ে যখন মানবিকতা নিয়ে আদালত বসবে, স্বাভাবিক ভাবেই সে তার সামনে দুই পক্ষ মানুষ পাবে।
অন্যদিকে আদালত যখন জানবে তার সামনে একদল লোক আছে যারা রাষ্ট্রধর্মের লোক ও অন্যদল সংখ্যালঘু, তখন তাকে স্বাভাবিক ভাবেই রাষ্ট্রীয় পক্ষকে 'মূল্যায়ন' করতে হবে।
এই যখন অবস্থা, ঠিক তখন খোদ রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে আন্দোলন দানা বাধার পূর্বমুহুর্তে গ্রামের পর গ্রাম হিন্দুরা উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক নয় কি? তাদের কাছে, এ যে একটা যুদ্ধের পূর্ব মুহুর্ত! যেখানে সাম্প্রদায়িক উপাদানই ভরপূর!!!
কোথায় যাবে এদেশের সংখ্যালঘুরা?
রাষ্ট্রধর্ম বাতিল হওয়া মানে কি ইসলাম নিষিদ্ধ হওয়া? যদি তাই হয়, তাহলে হিন্দু ধর্ম কি বর্তমানে এদেশে নিষিদ্ধ? কিংবা, এমন মানসিকতার দিক থেকে আসলেই নিষিদ্ধ নয় কি?? রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে যারা মাতামাতি করছেন তারা দয়া করে এর জবাব দিয়ে যাবেন। সংখ্যালঘুদেরকে আর কত কোণঠাসা করলে আপনারা 'ধর্মীয় স্বাধীন' হবেন? কত নির্যাতনের পথ করে আপনারা নিজ ধর্মকে রক্ষা করবেন?
আজ আপনাদের মানসিকতার কাছে আমাদের প্রশ্ন শুধু একটাই। হিন্দু কিংবা বৌদ্ধকে কোণঠাসা করার নামই কি ধর্মের সেবা? যদি আপনার কাছে তা-ই হয়। তাহলে জেনে রাখুন আপনার নবী মুহাম্মাদ থেকে আপনি বহু দূরে অবস্থান করছেন। কারন তিনি সকল ধর্মের সমান ধর্মীয় স্বাধীনতা স্বীকার করেই মদীনা সনদ রচনা করেছেন।
সবাই ভালো থাকুন। ভালো থাকতে দিন।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
২৭ মার্চ ’১৬ বিকাল ০৫:৩৩
কি বল্লবো বুঝতে পারছি না। আপনি যদি আগেই ভয়ে অস্থির থাকেন আর সবাইকে একসাথে দোষ দেন তাহলে কিছু বলার থাকেনা।
রাষ্ট্রধর্ম আরো বহু রাষ্ট্রে আছে সেখানে কি অন্য ধর্মকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে? বরং সঠিক কথা বলুন। সঠিক দাবী করুন। রাষ্ট্রের দ্বায়িত্ব জনগনের নিরাপত্তা দেয়া। ভ্যাট বিরোধী আন্দোলনে যদি গাড়ীর ড্রাইভাররা ভয়ের কথা বলে আন্দোলন বন্ধের দাবিতে হরতাল ডাকত। মুক্তিযুদ্ধের সময় নিহত হবার কথা বলে যদি সাধারন মানুষ মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে দাঁড়াতো??
আসলে আমরা বাঙ্গালীরা কী চাই আর কি দাবী করি তা নিজেরাই জানিনা। রাষ্ট্রধর্ম ছিলো। এখন তা বাতিল করা হলে কেউ কেউ সংক্ষুব্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করবেন, এতে অবৈধ কিংবা আতংকিত হয়ে পড়লে সেটা রাষ্ট্রধর্ম কিংবা মুসলিমদের দোষ নয়। অবশ্যই নিরাপত্তা দেয়ার দ্বায়িত্ব সরকারের। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকুক কি নাই থাকুন।
২৭ মার্চ ’১৬ বিকাল ০৫:৩৫
ধর্মকে মানবিকতার বিরুদ্ধে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। রাষ্ট্রধর্ম মানেই সাম্প্রদায়িকতা না। অনেক রাষ্ট্রেই রাষ্ট্র ধর্ম আছে। সেখানে অমানবিকতা ভরে যায়নি।