মোল্লার দোড়

নিনেদ কুমার মসজিদের সামনে ফার্মেসি দেয়ার পর থেকেই হুজুরের কটুক্তি নিত্য দিন সইতে হয়। 'মালাউন আর যায়গা পাইলো না'। 'মসজিদের সামনে পূজা করতে দোকান দিছে'। এমন হরেক আঘাত। নিনেদ অবশ্য ইমাম সাহেবকে বেশ শ্রদ্ধা করেন। আর এতেই বুঝি যাচ্ছেতাই বলার একটা অঘোষিত লাইসেন্স হাসিল করেছেন তিনি!
সেদিন ইমাম সাহেব নামাজ শেষে পাড়ার এক মহিলার কোলে বাচ্চাকে ফু দিচ্ছিলেন। এমন সময় তার ১২ বছরের ছেলে সাইকেলের সাথে এক্সিডেন্ট করে হুজরা খানার দিকে দৌড়ে এলো। ইমাম সাহেবের অবস্থা তখন দেখে কে? হৈ চৈ ফেলে দিলেন। মুহুর্তেই ইমাম সাহেবের শান্ত ভঙ্গি অশান্ত হয়ে গেল। ফু ফা ছেড়ে ছেলের কাটা পায়ে তেল থেকে শুরু করে পানি যাতীয় তরল এনে ডলতে লাগলেন। নিনেদ খুব সন্তর্পনে ইমাম সাহেবের দিকে এগোলেন।
বিনীত হয়ে হুজুরকে তার দোকানে আমন্ত্রণ করলেন চিকিৎসার জন্য। হুজুর না না করে একসময় রক্তের বেগ দেখে রাজি হয়ে গেলেন। সেই প্রথম ছেলের সাথে প্রতিবেশী দোকানে পা ফেললেন হুজুর।
সপ্তাহ খানেক পর ছেলের ক্ষত শুকিয়ে গেলে ব্যান্ডেজ খোলার ব্যাপারে হুজুরকে বললেন নিনেদ। হুজুরের কড়া জবাব- শহরের ভালো ডাক্তার দিয়ে খুলব। তোমার দোকানে আর যাচ্ছিনা!
নিনেদ শুধু বুঝল ধর্মের নিষেধ হবে হয়তো। যদিও আরেকটা কঠিন প্রশ্ন তার মন বারবার করে বসে। নিনেদ প্রশ্রয় দেয়না। যদি ধর্মহানি ঘটে যায়! নিনেদের মন আজ বারবার নিনেদকে জিজ্ঞেস করছে, 'ধর্ম কি মানুষকে মানুষের সম্মান থেকে বিরত করতে পারে?'
এ প্রশ্নের উদয় হলেই ভগবানের নাম জপে নিজ কাজে মন দেয় নিনেদ। তখন তার সামনেই মসজিদে ঢুকে হুজুর নামাজের ডাক দিতে মাইক হাতে নেন।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
২৩ জানুয়ারি ’১৬ সন্ধ্যা ০৬:১৩
আপনার গল্পটি সকল ধর্মান্ধদের জন্যই প্রাসঙ্গিক। তবুও আপনি শুধু ইসলামের বিষয়গুলোই সংযুক্ত করেন কেন দাদা? আমার মনে হয়নি কোন পুরোহিত এই কাজগুলো মুসলিমের সাথে করলে আলাদা কিছু হত। সেটাও তো মানবতা বিরুদ্ধ হত, তাইনা? আমার জানা মতে এই আচরন গুলো জাত পাত থেকেই আসে। সেটাও হিন্দু ধর্ম থেকেই। অনেক উদাহরন আছে এসব অত্যাচারের। এই টাইপ হুজুরেরা যা করে সেগুলো ঐ কাজ থেকেই এসেছে। আমার জানা মতে ইসলাম কোনদিন মানুষকে ঘৃণা করতে শেখায় না। আপনি পড়ে দেখুন বিধর্মিরাও নবিজীর সেবা থেকে বঞ্চিত হতেন না। আশা করি ধর্মীয় আঘাত দেবেন না।
২৪ জানুয়ারি ’১৬ রাত ০২:১১
দাদা! মনের মতন একখান দিছেন। পড়েই শান্তি পাইলাম। এইভাবেই চলতেছে।