সিনেমার শ্যুটিং এর মত খুন হচ্ছে চট্টগ্রামে
বেলা আড়াইটা। ব্যস্ত সড়কের আশপাশে মানুষের জটলা। চার-পাঁচজন যুবক ধাওয়া করছেন এক কিশোরকে। যুবকদের একজনের হাতে পিস্তল, অন্যজনের হাতে ছুরি। একপর্যায়ে সড়কে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায় ওই কিশোর। যুবকেরা প্রথমে তার মাথায় পিস্তল ঠেকান। এরপর পিঠে ছুরিকাঘাত করেন। রক্তমাখা শরীর নিয়েও দৌড়াতে থাকে সে। কিছুদূর গিয়ে লুটিয়ে পড়ে। কিশোরটি বাঁচার আকুতি জানালেও কেউ এগিয়ে আসেনি। মিনিট দশেকের মধ্যে এ কাণ্ড ঘটিয়ে চলে যান খুনি যুবকেরা। এরপর হাসপাতালে নিতে নিতে নিস্তেজ, ঠান্ডা শরীর। চিকিৎসক বললেন, ‘মৃত’।
গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরের জামালখান মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর মুখ থেকে ঘটনার বর্ণনা জানা যায়। ঘটনাস্থল কোতোয়ালি থানার আওতাধীন। নিহত কিশোর আদনান ইসফারের (১৫) বাসা ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ৩০০ গজ দূরে। ঘটনার পরপর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া যুবকেরা চলে গেলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রামে এর আগেও কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। খুন করে লাশ ড্রামে ঢুকিয়ে সিমেন্ট দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সুদীপ্তকে খুন করা হয়েছে দিনে দুপুরে মাইক্রোবাসে করে একদল লোক এসে।
শুধু কি চট্টগ্রামে? সারাদেশেই হচ্ছে খুন খারাবি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা বলে তো লাভ নেই। ওটা যে কোন সময়ের চাইতে ভালো। পুলিশ একবার বলবে সব আমাদের নিয়ন্ত্রনে। আবার বলবে আমরা একা পরবো না। একবার বলবে সন্ত্রাসীদের জিরো টলারেন্স আবার আমরা জানতে পারবো সন্ত্রাসীরাই বলে, পুলিশকে না জানিয়ে আমরা কোন কাজ করি না। পুলিশের ভয় তাদের দেখিয়ে লাভ নাই।
অবশ্য পুলিশদের কথা কী হবে! মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই বলেছেন তারা বেডরুমের নিরাপত্তা দিতে পারবেন না। বেড্রুমের নিরাপত্তা না দেন, এটলিস্ট রাস্তার নিরাপত্তা দেন। রাস্তায় লাগানো হয়েছে কোটি কোটি খরচ করে সিসি ক্যামেরা। এর সিংহভাগই অকেজো। ঐ দিয়ে কোন ফুটেজ ধরা পড়ে না। বায়োমেট্রিক সিমের ব্যবস্থা করা হলো জনগণকে হেনস্থা করে। কী লাভ হল? সন্ত্রাসী কি একটুও কমেছে? বরং বেড়েছে।
পুলিশ যে পারে না তা না। পারে। পারে সাধারণ কলেজ ছাত্রদের পরীক্ষার দাবীতে করা আন্দোলনে গুলি চালিয়ে ছাত্রদের অন্ধ করে দিতে। বিরোধীদলের কর্মীদের গুলি করে মেরে ফেলতে বা পঙ্গু করে ফেলতে।
ধিক পুলিশ! ধিক আইন-শৃঙ্খলা! ধিক মানবতা!
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.