“যুদ্ধাপরাধী নুলা থেকে প্রিন্স মুসার গল্প”-১
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসহায় বাঙ্গালীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো বৈরি দানব পাকিস্তানী হানাদার! কিন্তু এই হানাদারদের সহায়তা করেছিলো এদে জন্মানো কিছু কুলাঙ্গার। বর্তমান সরকার এসব কুলাঙ্গাগারের বিচার করছে। জাতি হিসেবে আমরা অর্জন করেছি আমাদের সম্মানের অধিকার। কিন্তু আদৌ কি সকল রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধী আইনের আওতায় আসছে? সত্যি বলতে কি- 'না'!
এখনও বহু চিহ্নিত ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধী নানা ভাবে প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় নিরাপদে আছে। তেমনই ভয়ঙ্কর এক যুদ্ধাপরাধী নুলা মুছা যাকে বর্তমানে প্রিন্স মুসা নামে সকলেই চেনে। দেশের শীর্ষ ঢনাড্য ব্যাক্তি এই নুলা মুছা ফরিদপুরে সংগটন করেছে ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ। সহযোগী হয়েছে বহু যুদ্ধাপরাধের!
আসুন সংশ্লিষ্ট প্রত্যক্ষ স্বাক্ষীদের কাছেই জেনে নেই এই যুদ্ধাপয়ারাধী নুলা রাজাকারের কিছু কীর্তি-
সাংবাদিক প্রবীর সিকদার বলেন, “আমি খুব স্পষ্ট করেই বলেছি, নুলা মুসার ব্যাপারে তদন্ত সংস্থা আগ্রহী নয়।”
“ও (মুসা) হইতাছে শেখ হাসিনার আত্মীয়। প্রবীরদার (সাংবাদিক প্রবীর সিকদার) তো পাও গেল। এখন এইটা আগাবে, আমার বিশ্বাস হয় না।- যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম আবু ইউসুফ সিদ্দিকী পাখী
“ওই মুসারে আমি বুকে লাত্থি দিয়া গর্তের মধ্যে ফেলায় দিছিলাম স্বাধীনতার পরের দিন। ফরিদপুরে মুসার বাড়ির লগে সেই গর্তটা এখনও আছে,”- বাচ্চু রাজাকারের যুদ্ধাপরাধের রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ইউসুফের
“মুসা বিন শমসের সরাসরি যুদ্ধাপরাধী। যুদ্ধাপরাধী হিসেবেই সে চিহ্নিত। সত্যি কথা বলতে কি, এটা আমাদের ব্যর্থতা যে, তাকে আমাদের যেভাবে চিহ্নিত বা উপস্থাপন করার দরকার ছিল, আমরা সেটা করিনি।”- ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেন
“মুসা বিন শমসের খুবই ক্লেভার। শুনেছি সে একটি মেয়েকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না পেলে কীভাবে তদন্ত করব?”- তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক
“আমি নিজে গিয়েছিলাম। তারা তো অভিযোগ আমলেই নিচ্ছে না। তাই দায় এড়াতে ওইসব বলছে। অন্যদের যেমন আগে গ্রেপ্তার করে তদন্তে নেমেছিলেন, নুলা মুসার ক্ষেত্রে সেটা করুন, দেখবেন কত মানুষ মুখ খোলে।” - সাংবাদিক প্রবীর সিকদার
“মুসার যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি ফরিদপুরে ওপেন সিক্রেট, রাখঢাকের কোনো বিষয় না। এটা নিয়ে সংশয়ের কোনো সুযোগ নেই। বিশেষ করে যারা সে সময় শহরে অবরুদ্ধ ছিল, তারা সবাই জানে।” - ‘মুক্তিযুদ্ধে ফরিদপুর’ বইয়ের লেখক, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান
“ফরিদপুর অঞ্চলে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশে সশস্ত্র অবস্থা তার ছিল। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। আজ হোক কাল হোক, তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।”- ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম
এত স্বাক্ষ্য ও স্বাক্ষীর পরও দীর্ঘদিন থেকে প্রায়ই শোনা যায় নুলা মুছা বা প্রিন্স মুসার বিরুদ্ধে যথেষ্ট অভিযোগ ও স্বাক্ষ্য খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি! তবে কি বিচারের বাণী ক্ষমতাবানের পায়ে লুটিয়ে পড়েছে? মুক্তিযুদ্ধও রেহায় পায়নি??
সূত্রঃ
১. দৈনিক জনকন্ঠে (তুই রাজাকার)
২. দৈনিক মানবজমিন, ২০ ডিসেম্বর ২০১০
৩. ১৯১ পাকিস্তানী যুদ্ধপরাধী(এম এ হাসান)
৪. মুসার ‘যুদ্ধাপরাধ’: সাক্ষীরা ‘প্রস্তুত’, ‘পাচ্ছে না’ তদন্তকারীরা (বাংলা নিউজ ২১/৩/১৭)
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
মন্তব্য: ২ টি
০৮ এপ্রিল ’১৭ রাত ১১:১৯
মুক্তি সংগ্রাম পরিনত হোক হোক জাত-পাত-শ্রেণী মুক্ত সাধারন সংগ্রাম!