হালাল বিমানঃ একটি ভাল স্বপ্নের অপমৃত্যু
দারুন এক স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটলো। বিমান মানেই অশ্লীল ড্রেসের যৌন আবেদনময়ী বিমানবালা। মদ খাওয়ার অবারিত সুযোগ। বিমান মানেই ইসলাম নিষিদ্ধ খাবারের ছড়াছড়ি। এসব চিন্তাকে ছুড়ে ফেলে গত জানুয়ারীতে মালয়েশিয়াতে শুরু হয়েছিল শতভাগ শরিয়া ভিত্তিক বিমান পরিবহন সংস্থা "রায়ান এয়ার"। মুসলমাদের শরীয়াকে আকাশেও প্রতিপালনের এক দারুন সুযোগ।
কিন্তু সা্রা দুনিয়ার "Islam Phobia" র আরেক শিকার হয়ে এই শরিয়া ভিত্তিক এয়ারলাইন্স "Rayani Air" কে ঠুনকো অযুহাতে গতকাল বন্ধ করে দেয়া হলো। হাস্যকর অভিযোগ ! মালয়েশিয়ান সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ "নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা " -এই দুটি অযুহাতে আগামী তিন মাসের জন্য রায়ান এয়ারের লাইসেন্স স্থগিত করেছে। অবশ্য মুখে বলা হচ্ছেঃ
"শেষ মুহূর্তে ফ্লাইট বাতিল করা, যাত্রা শুরু করতে নিয়মিত বিলম্ব করা এবং বিমানচালকদের ধর্মঘটের কারণে বেসরকারি এই বিমান কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে"।
যখন শরিয়া ভিত্তিক এই বিমান ব্যবস্থাপনা শুরু হয়েছিল- ঠিক তখনই ইসলামী চিন্তাবিদরা এটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের আশংকা করেছিলেন। কয়েকজন স্কলারে পক্ষ থেকে মালয়শিয়ান সরকারকে চিঠি দিয়ে এই হালাল বিমান ব্যবস্থাপনার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়েছিল। একই সাথে এই প্রজেক্ট সফলতার সাথে এগ্যে নেয়ার আহবান করা হয়েছিল। ধারনা করা হচ্ছিল- মালয়েশিয়াতে এই নতুন আইডিয়া বাস্তবায়িত হলে- মুসলিম দেশগুলোতে বিমান ব্যবস্থাপনায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধিত হবে।
রায়ানি এয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর জামহারি এই সেবা উদ্বোধন করে জানিয়েছিলেন,-
"প্রথমবারের মতো তাঁরা মালয়েশিয়ায় পুরোপুরি ইসলামী শরিয়াভিত্তিক এবং ইসলামী নিয়মনীতি অনুযায়ী বিমান চালু করেছেন। আর এ জন্য তাঁরা গর্বিত। ভবিষ্যতে তাঁদের শরিয়াভিত্তিক সেবার মান আরো উন্নত করা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।"
শুরু হলো মিডিয়ার প্রোপাগান্ডা। এ ধরনের সাম্প্রদায়িক বিমান কি অসাম্প্রদায়িক আকাশে উড়তে দেয়া যায় ? গবেষনা শুরু হয়ে গেল কি করে এই মুসলিম অগ্রযাত্রা বন্ধ করা যায়।
কি সুবিধা ছিল হালাল বিমানে ?
ইসলামের বিধান' মেনে চলার অঙ্গীকার করেই যাত্রী পরিবহন শুরু করেছিল রায়ান এয়ার৷ মদ নিষিদ্ধ ছিল বিমানে, যাত্রীদের দেয়া হতো ‘হালাল' খাবার। মুসলিম বিমানবালাদের পরতে হতো হিজাব৷অমুসলিম বিমানবালাদের শালীন পোষাক পড়তে হতো। বিমানে নামাযের আলাদা স্পেস ছিল। যাত্রীদের সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে লিখা ইসলামী সাহিত্য পড়তে দেয়া হতো। বড় একটা ইসলামী লাইব্রেরী ছিল।
বলা হচ্ছে- পশ্চিমাদের চাপে মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ ঠুনকো অযুহাতে মুসলমানদের এক নতুন স্বপ্নের সমাধি করে দিলো। বিশেষ করে ইয়াহুদীবাদী শক্তি এর পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছে। অনেকে সন্দেহ পোষন করছে- এই সেবা বন্ধ করতে পেছন থেকে ছুড়ি চালিয়েছে "গালফ এয়ার"। বাহরাইন ভিত্তিক এই বিমান সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহের সালমান আল জাবের আল মুসাল্লাম সম্পর্কে ইয়াহুদী কানেকশন নিয়ে বাজারে অনেক কথায় প্রচলিত আছে।
হালাল বিমানের বিমানের অধিকর্তারা!
হালাল বিমানে এই খাবারগুলো দেয়া হতো।
বিমানের ভেতরে বিমানবালা !
মালয়েশিয়ার এই বিমান সংস্থাটির আশা ছিল - খুব শীঘ্রই সমগ্র মালয়েশিয়ার সকল শহরে যাত্রীসেবা দেয়ার পাশাপাশি মধ্যেপ্রাচ্যে এই সেবাকে ছড়িয়ে দেয়া। মুসলিম যাত্রীদের হালাল সেবা দেয়ার পাশাপাশি অমুসলিম যাত্রীদের কাছে ইসলামের সুমহান আদর্শকে রিপ্রেজেন্ট করার মহান ব্রত ছিল।
আপাত কুচক্রীদের ইন্ধনে বন্ধ হয়ে গেল এই নতুন সেবা। তবে মুসলমান হৃদয়ে যে আইডিয়া তৈরী হয়েছে- তা বন্ধ করবে কি দিয়ে? আমরা আশা করি খুব শীঘ্রই এই আইডিয়া পৃথিবীর কোন দেশে কোন মুসলিম শাসক বাস্তবায়িত করবেন ইনশাআল্লাহ।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
মন্তব্য: ৫ টি
১৫ জুন ’১৬ বিকাল ০৫:৪৭
বন্ধ হওয়াটাই স্বাভাবিক। সাম্প্রদায়িক বিভাজন দূর করার মুক্ত বিশ্বে এমন ঠুংকো অজুহাতে ধর্মভিত্তিক বিমান? আর কোন ধর্মের ভিত্তিতে বিমান আছে দেখান। আপনারা শুধু বিশ্বকে বিভাজনের রাস্তাই দেখিয়েছেন।