নূন আনতে পান্তা ফুরায়!
৯৫-৯৬ সালের কথা। সারা বাংলাদেশেই চলছে অভাব অনটনের রমরমা সময়। তিনবেলা পেট পুরে খাবে,এমন পরিবার খুব কমই ছিল গ্রামে গঞ্জে। কি অভাব! ভাষায় প্রকাশ করা কষ্টকর। একবেলা খেলে আরেক বেলা না খেয়ে থাকতে হত। যাদের ঘরে ধান-চাল থাকতো সারাবছর,তাদের আবার নগদ টাকার অভাব যে ছিলনা, সেটা বলা যাবেনা। ফলে সকালে গরম ভাতের সাথে তরকারী থাকলেও দুপুরে সম্ভব হতোনা। ফলে অধিকাংশ দিনই দুপুরে পান্তা ভাত খেতে হতো। কাঁচা মরিচের সাথে পিয়াজ ছিল পান্তার সহযোগি নিত্তদিনের তরকারী। আবার যারা কাঁচা মরিচ খেতোনা তাদের পছন্দের ছিল শুকনা মরিচ। এখনকার মতো তেলে ভাজা নয় সেটা ছিল আগুনে পোড়ানো শুকনো মরিচ। প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরে আমন ধানের লাল রংয়ের পান্তা ভাত খেতে ভালোই লাগতো। প্রচন্ড গরমের দিনে দুপুর বেলা পান্তা ছিল প্রতিটা পরিবারের আবশ্যিক খাবার।কারন অভাব অনটন পাশাপাশি পান্তা ভাত খেলে শরীরটা ঠান্ডা থাকে। ঐ সময় বরিশালের বড় বড় ইলিশ মাছ ছিল,প্রতিকেজি মাত্র ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। তারপরও কোনদিন দেখিনাই সকালে অথবা দুপুরে পান্তা ভাতের সাথে ইলিশ মাছ খেতে। সকালে পান্তা ভাত খেতে হতো রাতের বাশি তরকারী দিয়ে আর দুপুরে খেতে হতো মরিচ ও পিয়াজ দিয়ে। আবার এমনো হয়েছে কিছু পরিবারের ক্ষেত্রে যে,লবণ অন্য বাড়ি থেকে ধার করে পান্তা খেতে হয়েছে।
এমনি একটা গল্প হলো,নূন আনতে পান্তা ফুরায়! আমাদের গ্রামে একজন বৃদ্ধ মহিলা ছিল,তাকে সবাই জেলের মা বলে ডাকতো। তার কাজই ছিল দুপুর সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুপুরের খাবার খাওয়া। তো একদিন জেলের মা পাশের বাড়িতে উপস্থিত যথারীতি দুপুর বেলা। গিয়াই চিল্লাপাল্লা শুরু করে দিছে,খাইতে দেবার জন্য। বাড়িওয়ালী মহিলা বিণয়ের সাথে তাকে বললো,খাইতে দেবার মতো পান্তা ভাত ছাড়াতো কিছুই নাই খালা। তোমার বাড়িতে পান্তা ভাত ছাড়া কি অন্য কিছু কোনদিন খাইতে দিছো! তারাতারি পান্তাই নিয়া আসো। গামলা ভর্তি করে জেলের মা কে পান্তা দিয়ে বাড়িওয়ালীর আর কোন খবর নাই। কিছুক্ষন পরে অন্য বাড়ি থেকে ধার করে নূন নিয়ে এসে দেখে,গামলা ভর্তি পান্তা শেষ! খালা ক্যামনে কি? খালা কয়,তোমার যে অবস্থা তাতে,নূন আনতে পান্তা ফুরায়। খালা যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন তাকে দেখলেই গ্রামবাসীরা বলে উঠতো,নূন আনতে পান্তা ফুরায়। এটিকে একটি প্রবাদ বাক্যও বলতে পারেন,যার সারমর্ম হলো, গ্রামের অভাব অনটনের চিত্র!
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
এমনি একটা গল্প হলো,নূন আনতে পান্তা ফুরায়! আমাদের গ্রামে একজন বৃদ্ধ মহিলা ছিল,তাকে সবাই জেলের মা বলে ডাকতো। তার কাজই ছিল দুপুর সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুপুরের খাবার খাওয়া। তো একদিন জেলের মা পাশের বাড়িতে উপস্থিত যথারীতি দুপুর বেলা। গিয়াই চিল্লাপাল্লা শুরু করে দিছে,খাইতে দেবার জন্য। বাড়িওয়ালী মহিলা বিণয়ের সাথে তাকে বললো,খাইতে দেবার মতো পান্তা ভাত ছাড়াতো কিছুই নাই খালা। তোমার বাড়িতে পান্তা ভাত ছাড়া কি অন্য কিছু কোনদিন খাইতে দিছো! তারাতারি পান্তাই নিয়া আসো। গামলা ভর্তি করে জেলের মা কে পান্তা দিয়ে বাড়িওয়ালীর আর কোন খবর নাই। কিছুক্ষন পরে অন্য বাড়ি থেকে ধার করে নূন নিয়ে এসে দেখে,গামলা ভর্তি পান্তা শেষ! খালা ক্যামনে কি? খালা কয়,তোমার যে অবস্থা তাতে,নূন আনতে পান্তা ফুরায়। খালা যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন তাকে দেখলেই গ্রামবাসীরা বলে উঠতো,নূন আনতে পান্তা ফুরায়। এটিকে একটি প্রবাদ বাক্যও বলতে পারেন,যার সারমর্ম হলো, গ্রামের অভাব অনটনের চিত্র!
নূন আনতে যাদের পান্তা ফুরায়,তারা আর যাইহোক শখ বশত পানিভাত খায়নাই। পান্তা আর পানি ভাতের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। গরম ভাতের মধ্যে পানি ঢেলে দিলেই পান্তা হয়নারে দাদা! আগামী কাল সকালে কিংবা দুপুরে তরকারীর অভাববোধ দূর করার জন্য বেঁচে যাওয়া ঠান্ডা ভাতে পানি দিলেই পরদিন সকালে বা দুপুরে সেটা পান্তা ভাত হয়।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
মন্তব্য: ২ টি