শায়েস্তা খাঁর চট্টগ্রাম অভিযান
শিল্পীর তুলিতে শায়েস্তা খান, ছবিঃ abac-bd.com
শায়েস্তা খান ছিলেন বাংলার মুগল সুবাহদার। ১৬৭৮-৭৯ খ্রিস্টাব্দে এক বছরের সামান্য বেশি সময়ের বিরতিসহ দীর্ঘ ২৪ বছর তিনি এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। বাংলায় সুবাহদার হিসেবে তাঁর কার্যকালের মেয়াদই দীর্ঘতম। শায়েস্তাখানের আসল নাম ছিল মির্জা আবু তালিব। জাহাঙ্গীর তাঁর রাজত্বের একুশতম বছরে তাঁকে ‘শায়েস্তা খান’ উপাধিতে ভূষিত করেন।
সম্রাট শাহজাহান, ছবিঃ Quora
সিংহাসনে আরোহণের পর সম্রাট জাহাঙ্গীরের ছেলে আওরঙ্গজেব তাঁকে উচ্চতর পদমর্যাদা দান করেন এবং উত্তরাধিকার যুদ্ধে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে মর্যাদাপূর্ণ আমীর-উল-উমারা (আমীরদের বা অভিজাতদের প্রধান) উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৬৬৩ খ্রিস্টাব্দে মীরজুমলার মৃত্যুর পর শায়েস্তা খান বাংলার সুবাহদার নিযুক্ত হন।
সম্রাট আওরঙ্গজেব, ছবিঃ Jugantor
শায়েস্তা খান ৬৩ বছর বয়সে প্রথম বাংলায় আসেন। তাঁর ছয়জন দক্ষ পুত্র শাসনকাজে তাঁকে সহায়তা করেছেন। তাঁদের প্রত্যেকেই এক বা একাধিক সরকারের ফৌজদারের দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। যার ফলে একই পরিবার বাংলার সব বিভাগ কার্যকরভাবে শাসন করেছিলেন।
প্রধানত চট্টগ্রাম জয়ের জন্যই বাংলায় শায়েস্তা খানের বিশাল খ্যাতি। মুগলদের বাংলা বিজয়ের আগে চট্টগ্রাম আরাকানিদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে সুবাহদার ইসলাম খান চিশতি বাংলা ও আরাকানের মধ্যে সীমানা নির্ধারণকারী ফেনী নদী পর্যন্ত অঞ্চল উদ্ধার করেছিলেন। জাহাঙ্গীরের কয়েকজন সুবাহদার চট্টগ্রাম দখল করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
আরাকানি সৈন্যরা নৌ-চালনা ও নৌ-যুদ্ধে দক্ষ ছিল। যার ফলে আরাকানের রাজাগণ কখনই মুগল সুবাহদারদের শান্তিতে থাকতে দেন নি। মাঝে মাঝেই তারা বাংলায় নৌ-অভিযান পাঠাতেন এবং তাদের গতিপথের অন্তর্ভুক্ত এলাকার যে কোন অংশে লুঠপাট চালাতেন। এমনকি কখনও কখনও তারা রাজধানী শহর ঢাকায়ও আক্রমণ করতেন। ওলন্দাজ ও ইংরেজদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় তাদের বাণিজ্যিক প্রাধান্য হারিয়ে ফেলার পর পর্তুগিজরাও সতেরো শতকের গোড়া থেকে জলদস্যুতা শুরু করেছিল।
পর্তুগিজ জলদস্যুরা আরাকানে আশ্রয় লাভ করত। আরাকানের রাজা তার শত্রুর অধীন বাংলার সীমান্ত অঞ্চল লুঠ করার জন্য মগ জলদস্যুদের সঙ্গে পর্তুগিজদেরও নিযুক্ত করতেন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত জলদস্যুদের যাত্রাপথে নদীগুলির দুই তীর অর্থাৎ উপকূলীয় জেলাগুলি প্রায় জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছিল। জলদস্যুরা ধনসম্পদের সঙ্গে হিন্দু ও মুসলমান, পুরুষ, নারী ও শিশুদের ধরে নিয়ে যেত এবং ওলন্দাজ, ইংরেজ এবং ফরাসিদের মতো বিদেশী বণিকদের কাছে এবং দাক্ষিণাত্যের বন্দরগুলিতে বন্দিদের দাস হিসেবে বিক্রি করত।
শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তাঁকে পর্তুগিজ জলদস্যুদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়েছিল। পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য সুবাহদার ত্রিমুখী কর্মসূচি প্রণয়ন করেন:
প্রথমত, তিনি নওয়ারা বা রণতরীগুলি পুনর্গঠিত করেন,
দ্বিতীয়ত, পর্তুগিজদের নিজের দলে টেনে আনার চেষ্টা করেন, এবং
তৃতীয়ত, তারা যেন তাঁকে সাহায্য করে অথবা অন্তঃতপক্ষে নিরপেক্ষ থাকে এ উদ্দেশ্যে তিনি ওলন্দাজ কোম্পানিকে তাঁর দলে টানার চেষ্টা করেন।
পর্তুগিজ নাবিকরা ছিল আরাকানি নৌ-বাহিনীর প্রধান অবলম্বন। তাই শায়েস্তা খান (ফিরিঙ্গিদের) তাদের মুগল দলে টানার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। হুগলী, লরিকল (ঢাকা থেকে প্রায় ৪০ কিমি. দক্ষিণে) এবং অন্যান্য জায়গায় বসবাসকারী তাদের স্বদেশবাসীর মাধ্যমে তিনি চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গিদের কাছে লোভনীয় প্রস্তাব পাঠান। তিনি তাদের চাকরি, পুরস্কার এবং এগুলির চেয়ে যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, স্থায়ী ও নিশ্চিন্ত জীবনের প্রস্তাব দেন। শায়েস্তা খান হুগলির ওলন্দাজ প্রধানকেও ডেকে পাঠান এবং তাকে বলেন যে, বাংলায় বাণিজ্য করে তারা প্রচুর মুনাফা অর্জন করে বিধায় আরাকানের বিরুদ্ধে অভিযানে নিজেদের জাহাজ নিয়ে তাদের অংশগ্রহণ করা উচিত।
বাটাভিয়ার (জাকার্তা) ওলন্দাজ গভর্নর জেনারেলের অনুমোদন ছাড়া ওলন্দাজ প্রধান কোন ইতিবাচক উত্তর দিতে না পারায় শায়েস্তা খান ওলন্দাজদের একটি জাহাজে বাটাভিয়ায় একজন দূত পাঠিয়েছিলেন। খাজা আহমদ নামে এই দূতকে ওলন্দাজ গভর্নর-জেনারেলকে এই কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হয় যে, ওলন্দাজরা যদি সুবাহদারকে তাঁর উদ্যোগে সাহায্য না করে তবে সমগ্র মুগল সাম্রাজ্যে তাদের বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সকল প্রস্ত্ততি সম্পন্ন করে শায়েস্তা খান প্রথমে সন্দ্বীপ দ্বীপটি জয় করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। চট্টগ্রামের বিরুদ্ধে অভিযানের ঘাঁটি ছিল ভুলুয়া(নোয়াখালী), তবে এটা ছিল স্থলবাহিনীর জন্য ঘাঁটি। পক্ষান্তরে আরাকান ছিল মূলত একটি নৌ-শক্তি। স্থল ও জল উভয় দিক থেকেই চট্টগ্রাম আক্রমণ করা ছিল আবশ্যক। সুতরাং নৌ-বাহিনীর জন্য একটি ঘাঁটির প্রয়োজন ছিল এবং সন্দ্বীপ ছিল একটি আদর্শ নৌ-ঘাঁটি।
শায়েস্তা খান তাঁর নৌ-সেনাপতিকে সন্দ্বীপ আক্রমণের আদেশ দেন এবং তিনি ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরে সন্দ্বীপ আক্রমণ করেন। সন্দ্বীপের শাসক ছিলেন মুগলদের এক পলাতক প্রাক্তন নাবিক, ৮০ বছর বয়স্ক দিলওয়ার খান। তিনি শৌর্য ও দক্ষতার সঙ্গে যুদ্ধ করে পরাজিত হন। সন্দ্বীপ দখল করে মুগলদের শাসনাধীন করা হয়। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গিরাও মুগলদের পক্ষে চলে আসে।
মুগলদের জন্য সৌভাগ্যক্রমে তখন চট্টগ্রামের মগ রাজা ও সেখানকার পর্তুগিজদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আরাকানি রাজার তীব্র রোষ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পর্তুগিজরা তাদের পরিবার, জাহাজ এবং কামান নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে এসে ভুলুয়ার (নোয়াখালী) মুগল সেনাপতির কাছে আশ্রয় গ্রহণ করে। শায়েস্তা খান পর্তুগিজ সেনাপতিকে অভ্যর্থনা ও সম্মান জানান। তিনি তাকে নগদ ২০০০ টাকা পুরস্কার ও ৫০০ টাকা মাসিক বেতন প্রদান করেন। তার অনুগামীদেরও উপযুক্ত বেতন-ভাতাসহ মুগল সরকারের চাকরিতে নিযুক্ত করা হয়। বাটাভিয়ার ওলন্দাজ গভর্নর জেনারেল তার কোম্পানির সাহায্যের ব্যাপারেও শায়েস্তা খানকে আশ্বস্ত করেছিলেন। তারা আরাকানের রাজধানী ম্রোহং-এ তাদের বাণিজ্য কুঠি বন্ধ করে দেয়, তাদের কর্মচারীদের প্রত্যাহার করে নেয় এবং তাদের জাহাজগুলির গতিপথ আরাকান থেকে অন্যান্য স্থানে পাল্টে দেয়। চট্টগ্রাম অভিযানে কাজে লাগানোর জন্য ওলন্দাজ কোম্পানি শায়েস্তা খানকে দুটি জাহাজ পাঠান। তবে সেগুলি এসে পৌঁছার আগেই শায়েস্তা খান চট্টগ্রামে আরাকানিদের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন।
শায়েস্তা খান ১৬৬৫ খিস্টাব্দের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে তাঁর দীর্ঘ দিন ধরে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম অভিযান প্রেরণ করেন। তাঁর পুত্র বুজুর্গ উমেদ খানকে সার্বিক নেতৃত্ব দেওয়া হয় এবং নৌ-সেনাপতি ইবনে হোসেনকে নৌ-বাহিনীর নেতৃত্ব প্রদান করা হয়। সুবাহদার নিজে রসদ সরবরাহের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেনাবাহিনী ও নৌ-বাহিনী একই সময়ে একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে স্থল ও সমুদ্রপথে যাত্রা করে। স্থল বাহিনীকে জঙ্গল কেটে রাস্তা তৈরি করে অগ্রসর হতে হয়েছিল। সমুদ্রে এবং পরে কর্ণফুলী নদীতে একটি বড় যুদ্ধে পর্তুগিজদের সাহায্য নিয়ে মুগলরা বিজয়ী হয়।
আরাকানী নৌ-বাহিনী পরাজিত হলে তাদের নাবিকরা পালিয়ে যায় এবং তাদের কেউ কেউ দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করে। চট্টগ্রাম দুর্গ অবরোধ করা হয় এবং ১৬৬৬ খিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি তা মুগল অধিকারে আসে। পরের দিন বুজুর্গ উমেদ খান দুর্গে প্রবেশ করেন এবং চট্টগ্রামকে মুগল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। এটি একজন ফৌজদারের অধীনে মুগল প্রশাসনিক কেন্দ্রে পরিণত হয় এবং সম্রাটের অনুমতি সাপেক্ষে এর নাম পরিবর্তন করে ইসলামাবাদ রাখা হয়। প্রধানত মগ-পর্তুগিজ জলদস্যুদের লুঠ-তরাজ, অত্যাচার নিপীড়ন থেকে মানুষ রক্ষা পাওয়ায় চট্টগ্রাম জয় সারা দেশে অবর্ণনীয় আনন্দ বয়ে আনে। হাজার হাজার অপহূত ও ক্রীতদাসে পরিণত বাঙালি কৃষকদের মুক্তিলাভ ছিল এই বিজয়ের অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল।
শায়েস্তা খান পাশ্ববর্তী পাহাড়ি রাজ্যগুলির গোষ্ঠীপতিদের বিদ্রোহ দমন করেন। তারা মীরজুমলার মৃত্যুর পর অস্থায়ী শাসকদের শাসনামলের বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল। শায়েস্তা খানের রাজমহলে পৌঁছার সংবাদ পাওয়া মাত্রই কুচবিহারের রাজা কর প্রদানের অঙ্গীকার করে তাঁর কাছে আনুগত্য পত্র পাঠান। সুবাহদারের পুত্র ইরাদাত খান কামরূপ পুনর্দখল করেন; হিজলির বাহাদুর খানকে বন্দি করা হয় এবং তিনি বিশাল অঙ্কের অর্থ প্রদান করে মুক্তিলাভ করেন। জৈন্তিয়া এবং ত্রিপুরার রাজারাও আনুগত্য স্বীকার করে হাতি ও অন্যান্য উপঢৌকন পাঠান। পার্বত্য রাজ্য মোরাঙ্গও (কুচবিহারের পশ্চিমে এবং পূর্ণিয়ার উত্তরে) আনুগত্য স্বীকার করেন এবং কর দিতে অঙ্গীকার করেন।
শায়েস্তা খান একজন নির্মাতাও ছিলেন। তিনি রাজধানী শহর ঢাকা ও তার বাইরে বেশ কয়েকটি মসজিদ, সমাধি এবং অট্টালিকা নির্মাণ করেছিলেন। তাঁর নির্মিত অট্টালিকাগুলির মধ্যে রয়েছে:
(ক) অনাবাসিক বণিক, পথিক ও দর্শনার্থীদের জন্য ১৬৬৪ খিস্টাব্দে নির্মিত ছোট কাটরা। এর সীমানার ভিতরে এক গম্বুজ বিশিষ্ট একটি ছোট মসজিদ রয়েছে, যাতে যথেষ্ট স্থাপত্য শিল্পবিষয়ক রুচিবোধ দেখতে পাওয়া যায়। শায়েস্তা খান একটি প্রাসাদ, মসজিদ এবং মিটফোর্ড থেকে লালবাগ পর্যন্ত বিস্তৃত বুড়িগঙ্গার পাশাপাশি পোশতা নামে অভিহিত একটি বড় বাঁধ নির্মাণের বিশাল পরিকল্পনা করেছিলেন। কাটরা এবং মসজিদটির ধ্বংসাবশেষ এখনও বিদ্যমান। কাটরার প্রাঙ্গণে একটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট বর্গাকার পুরাতন কবর রয়েছে। এটিকে শায়েস্তা খানের কন্যা চম্পা বিবির কবর বলে মনে করা হয়।
শায়েস্তা খানের আমলে ১৬৬৪ সালে ছোট কাটরা নির্মিত হয়েছিল সরাইখানা হিসেবে, ছবিঃ আমরা ঢাকা
(খ) মিটফোর্ড হাসপাতালের (বর্তমানে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ)কাছে বুড়িগঙ্গার তীরে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট ও কোণায় মিনারসহ একটি মসজিদ।
লালবাগ দূর্গ, ছবিঃ bd.geoview.info
(গ) লালবাগ দুর্গের (সম্রাট আওরঙ্গজেবের নামানুসারে আওরঙ্গাবাদ দুর্গ নামে অভিহিত) সম্প্রসারণ করেন। শাহজাদা মুহম্মদ আজম এ দুর্গের নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন, তবে তিনি এটি সম্পূর্ণ করে যেতে পারেন নি। দুর্গের প্রাচীরঘেরা প্রাঙ্গণে শায়েস্তা খান বিবি পরীর সমাধি নির্মাণ করেন। কথিত আছে যে, ইরান দুখ্ত নামে পরিচিত বিবি পরী ছিলেন শায়েস্তা খানের কন্যা।
পরী বিবির মাজার, ছবিঃ Trip Advisor
(ঘ) চকবাজার মসজিদ, সাতগম্বুজ মসজিদ এবং নারায়ণগঞ্জের অদূরে লক্ষ্যার তীরে খিজিরপুর মসজিদের মতো ঢাকা ও তার পাশ্ববর্তী এলাকার অন্য আরো কয়েকটি মসজিদের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িত।
শায়েস্তা খাঁর সাত গম্বুজ মসজিদ, ছবিঃ উইকিপিডিয়া
তাঁর দক্ষ সেনাপতিত্ব, ন্যায়বিচার এবং জনকল্যাণের অগ্রগতি সাধনের জন্য সমসাময়িক ও পরবর্তীকালের ঐতিহাসিকবৃন্দ শায়েস্তা খানের প্রশংসা করেছেন। তাঁর উদারতা, বদান্যতা এবং ধর্মপ্রাণতার উপরও তাঁরা গুরুত্ব প্রদান করেছেন। তিনি একজন কবি ও পন্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর নির্মাণ কার্যাবলি পরবর্তীকালে শায়েস্তা খানী রীতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। শস্যের কম মূল্যের জন্যও তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। শস্যের দাম এত কম ছিল যে, টাকায় আটমণ চাল বিক্রি হতো। ঢাকা ত্যাগ করার সময় তিনি নগরীর পশ্চিম তোরণে নিম্নলিখিত লিপিটি উৎকীর্ণ করিয়েছিলেন: ‘শস্যের এ ধরনের সস্তা বিক্রয়মূল্য প্রদর্শনকারীই একমাত্র এ তোরণ উন্মুক্ত করবে’। সমসাময়িক মানুষ তাঁকে শ্রেষ্ঠত্বের আদর্শরূপে বর্ণনা করেছেন।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.