জালিয়ানওয়ালাবাগ গণহত্যাঃ ব্রিটিশদের নৃশংস রূপ
জালিয়ানওয়ালাবাগে নিহতদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ, ছবি: India Mart
ইংরেজরা এদেশে শোষন নির্যাতন চালিয়েছে প্রায় ২০০ বছর। তাদের অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে প্রাণ দিয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। তন্মধ্যে জালিয়ানওয়ালাবাগের এই হত্যাকান্ড ব্রিটিশ উপনিবেশ ইতিহাসের অন্যতম ঘৃণ্য অধ্যায়। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হামলাইয় সেদিন মৃত্যুবরণ করেন প্রায় ২৫০০ সাধারণ নিরস্ত্র মানুষ। জালিয়ানওয়ালাবাগের বিদ্রোহের পটভূমি একদিনের নয়, বহু পুরোনো। বাণিজ্য করতে এসে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যেদিন সিরাজ উদ দৌলাকে করে পরাজিত করে বাংলার ক্ষমতা গ্রহণ করে তখন থেকেই।
সিরাজ উদ দৌলা, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। ১৭৫৭ সালে তিনি ইংরেজদের কাছে পরাজিত হন, এর মাধ্যমে ডুবে এই স্বাধীনতার সূর্য প্রায় ২০০ বছরের জন্য।
ভারতের মানুষের দুঃখ দুর্দশা ও কিছু সুযোগ সুবিধার কথা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরতে ১৯১৪ সালের ২৪ শে জুন পাঞ্জাবী নেতা সিংহ লালা লাজপত রায়ের নেতত্বে কয়েকজন ভারতীয় নেতা ব্রিটেনের উদ্দশ্যে রওনা দেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লয়েড জর্জ তাদের কথা শুনে কোন কর্ণপাত করেনি। এক পর্যায়ে গলা ধাক্কা খাওয়ার মতোই ফিরে আসলেন ভারতীয় প্রতিনিধি দল। লালা লাজপত ভাবলেন সাত সাগর পারি দিয়ে এসে খালি হাতে ফিরে যাওয়া ঠিক হবে না তাই তারা লন্ডনে বসবাসরত ভারতীয়দের কাছে তাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরবেন ভেবে লন্ডনে সপ্তাহখানেক থেকে যান। লন্ডনে বসবাসরত ভারতীয়দের কাছে তারা ব্যাপক সাড়াও পেলেন।
কংগ্রেস নেতা লালা লাজপত রায়, ছবি:Hind Grapha
পণ্য বিক্রির বাজার নিয়ে বৃহৎ শক্তির দুই দেশ ব্রিটেন ও জার্মানির বাধলো বিবাদ বিবাদ থেকে বিশ্বযুদ্ধ। বিশ্বযুদ্ধের শুরুতেই জার্মানির কাছে বেশ শক্ত হাতেই মার খেতে লাগলো ব্রিটিশ সৈন্য। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রধান কলোনি ভারত। যুদ্ধের এই ডামাডোলে ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষেরা যদি বিগড়ে যায় তাহলে তাদের নিরস্ত্র করা কঠিন হয়ে পরবে ব্রিটিশ হারাবে তার বৃহত্তম সাম্রাজ্য। প্রধানমন্ত্রী এই ভেবে ভারতীয় প্রতিনীধি দলকে ফের ডেকে এবার সযত্নে আপ্যায়ন করে নাগরিক সুবিধা, সেনাবাহিনীতে চাকুরিসহ বিভিন্ন প্রস্তাব দেওয়া হলো প্রথমে লালা লাজপত প্রস্তাব গ্রহণ না করলেও প্রতিনিধিদলের অন্যদের কথায় ভারতীয়দের দুঃখ দুর্দশার কথা বিবেচনা করে প্রস্তাবে রাজি হলেন দেশে ফিরে আসলেন। এবার তাদের কথায় হাজার হাজার ভারতীয় যুবকদের চাকুরীতে যোগ দিল ব্রিটিশদের পক্ষ হয়ে বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেবার জন্য। বিশ্বযুদ্ধের ফলে সেনাবাহিনীতে ব্রিটিশদের পর্যাপ্ত অফিসার না পাওয়ায় কিছু ভারতীয়দেরকে অফিসার পদে নেওয়া হলো।
বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলো ব্রিটিশরা ঠিকই বিজয় অর্জন করলো কিন্তু নেমে এলো ভারতবাসীদের উপর সেই পুরোনো বর্বরতা। যে সব ভারতীয়দেরকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়া হয়েছিল তাদের সবাইকে করা হলো চাকুরিচ্যুত। এমনকি যুদ্ধে আহত সৈন্যদেরকেও সরকারি চিকিৎসা সুযোগ্ থেকে বঞ্চিত করা হলো। বন্ধ করা হলো সকল হাসপাতাল যুদ্ধের আর্থিক ক্ষতি পূরণের জন্য বাড়িয়ে দেওয়া হলো সরকারী রাজস্ব কর।
ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের কষ্টও বাড়তে লাগলো। উত্তর ভারতে দেখা দিলো ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। হাজার হাজার মানুষ খাবারের সন্ধানে শহরে এসে ভিড় জমাতে লাগলো। পেটে অন্ন নেই, পরনে কাপড় নেই। মা বোনের আব্রু রক্ষার জন্য হন্যে হয়ে পুরুষেরা ছুটতে লাগলো এক দুয়ার থেকে অন্য দুয়ার। বিক্ষুব্ধ জনতা বড়লাটের বাসভবনে হামলা করলো, আক্রমন করলো থানায়। পুড়িয়ে দিল কাছারি ঘর।
শিল্পীর কল্পনায় জালিওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড ছবি: Scroll.in
অবস্থা বেগতিক দেখে বড়লাট ভারত রক্ষা আইন জাড়ি করলেন। এ আইনে গ্রেফতার করা হলো শত শত যুবক কে। ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা তখন গোখলে তার সাথে যোগ হলেন সত্যাগ্রহী আন্দোলনের নেতা ব্যারিস্টার গান্ধী। গোখলে ও গান্ধী দেখা করলেন লর্ড উইলিংকটনের সাথে। তুলে ধরলেন তাদের অভিযোগ। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। অবস্থা আরো বেগতিক দেখে জারি করা হলো রাওয়ালাট আইন। রাওয়ালাট আইন ব্রিটেনের এক কুখ্যাত আইন যার উদ্দেশ্য হলো রাজদ্রোহমূলক অপরাধী বলে সরকার যাকে চিহ্নিত করবে তার কোন বিচার নেই সাক্ষী ডাকারও অবকাশ নেই। এই আইনের বিরুদ্ধে ৩০ মার্চ পালন করা হলো হরতাল। গান্ধীর সত্যাগ্রহী নীতির মাধ্যমেই পালিত হলো হরতাল হিন্দুদের উপবাস ও মুসলমানদের নফল রোজার মাধ্যমে।
৬ এপ্রিল ১৯১৯ সাল। গান্ধীজীর আহ্বানে আবার হরতাল ডাকা হলো। গান্ধীর হরতালের এই আহ্বান ছড়িয়ে পড়লো ভারতের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে দিল্লি থেকে বোম্বে আহমেদাবাদ পাঞ্জাব পর্যন্ত।
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, ছবি:Zenith Watches
ইংরেজ শাসকদের অত্যাচারে পাঞ্জাবের অবস্থা তখন আগ্নেয়গিরিতে পরিণত হয়েছে। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত, ধনী গরিব, কৃষক জমিদার কেউ রেহাই পাইনি ইংরেজদের হাত থেকে। ডাঃ সত্যপাল ও ব্যারিস্টার সাইফুদ্দিন কিচল পাঞ্জাবের দুই কৃতি সন্তান দেশ বরেণ্য নেতা। এদিকে পাঞ্জাবের গভর্নর তার অধিনস্ত সামরিক বাহিনীর সকল অফিসারদের ডাকলেন যে করেই হোক পাঞ্জাবে হরতাল পালন করতে দেওয়া যাবে না। তাই গভর্নর সত্যপাল ও সাইফুদ্দিন কিচলকে বিভিন্ন ব্যক্তিগত প্রতিপত্তির প্রলোভন দেখালেন হরতাল পালন না করার জন্য। তারা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন।
এদিকে অশান্ত পাঞ্জাবকে শান্ত করা এবং ৬ তারিখ হরতালে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে গান্ধীজী রওনা হলেন পাঞ্জাবের উদ্দেশ্য। ব্রিটিশ গুপ্তচরের কাছ থেকে জানতে পারলো গভর্নর গান্ধী আসার খবর। খবর পেয়ে রেল স্টেশনেই আটকিয়ে দেওয়া হলো গান্ধীকে, পাঞ্জাবে ডুকতে দেয়া হলো না। যথারীতি ৬ তারিখের হরতাল পালিত হলো।
৯ এপ্রিল ১৯১৯ সাল। পাঞ্জাববাসী খবর পেলো গান্ধীকে পাঞ্জাবে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এ খবর শুনে আন্দোলনের মাত্রা বেড়ে গেল তীব্র থেকে তীব্রতর। এদিকে গান্ধীর ঢুকতে না দেওয়ার প্রতিবাদে শত শত মানুষ রাজপথে নেমে এলো। পুলিশি বাধার মুখে পড়লো মিছিল, ডাকা হলো সেনাবাহিনী। এগিয়ে এলেন জননেতা সত্যপাল। সেনাবাহিনীকে কথা দিলেন তারা সহিংস আন্দোলন করবেন না। সেনাবাহিনী পনের মিনিট সময় বেঁধে দিলো আন্দোলনকারীদের থামাতে। সত্যপালের কথায় সবাই থেমে গেল কিন্তু পনের মিনিট শেষ না হতেই সেনাসদস্যরা গুলি শুরু করলো। নিহত হলেন তিনজন।
জালিয়ানওয়ালাবাগের দেয়ালে এখনো গুলির চিহ্ন সাক্ষী হিসেবে রয়েছে ছবি: littleindia
১০ এপ্রিল ১৯১৯। পাঞ্জাবে এই নারকীয় হত্যাকান্ডের খবর পৌঁছে গেলো অমৃতসরে। অমৃতসরে খবর পৌঁছা মাত্রই শুরু হলো জনসাধারণের বিক্ষোভ। এবার অমৃতসরের রাস্তায় নামানো হলো ব্রিটিশ সৈন্য। গুলি চালাতে লাগলো অবিরাম। শহরে যখন এরকম পরিস্থিতি জনতা পেলো না তাদের প্রাণ প্রিয় দুই নেতা সত্যপাল ও কিচলুকে। ইতিমধ্যেই ডেপুটি কমিশনার আরভিং তাদের কে সামান্য অজুহাতে বাংলোতে ডেকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিরস্ত্র মানুষ সেদিন বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছিল ব্রিটিশ সেনাদের গুলিতে ছবি:Total War: Alternate Reality Wiki - Fandom
১১ই এপ্রিল ১৯১৯ সাল। ভারতীয় ইংরেজ সেনাবাহীনির ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডায়ার এসে পৌঁছলেন অমৃতসরে। অশান্ত অমৃতসরকে ঠান্ডা করতেই তাকে ডেকে এনেছে স্থানীয় প্রশাসন। স্থানীয় নেতা মকবুল মুহম্মদ গেলেন কমিশনার আরভিং এর বাংলোয়। জানতে চাইলেন তাদের প্রাণ প্রিয় দুই নেতা ডঃ সত্যপাল ও ব্যারিস্টার কিচলুর কথা। আরভিং তাদের গ্রেফতারের কথা অস্বীকার করলেন। গতকালের গুলিতে নিহত ছয় জনের লাশ সৎকারের জন্য নিতে চাইলেন মকবুল, আরভিং প্রথমে দিতে অস্বীকৃতি জানালেও সৎকার্যে চার জনের বেশি বের হতে পারবে না শর্ত সাপেক্ষে রাজি হলেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডায়ার, ছবি: Hindustan Times
১২ এপ্রিল ১৯১৯ সাল। ডেপুটে কমিশনার, পুলিশ কমিশনার সহ অন্যান্য কমিশনার হাজির হলেন ডেপুটি কমিশনারের বাংলোতে। জেনারেল ডায়ারকে অবহিত করা হলো গত তিন দিনের ঘটনা। সব শুনে, পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে চলে গেলে কি হবে ভেবে শিউরে উঠলেন ডায়ার। ভাবতে লাগলে যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সূর্য অস্তমিত হয় না তা আজ ডুববে। বিদ্রোহীদের দমন করার দায়িত্ব তিনিই নিলেন। গ্রেপ্তার করা হলো বাকি সব স্থানীয় নেতাদের। ১২০ জন ব্রিটিশ সেনা ও ৩১০ জন দেশীয় সেপাই নিয়ে গঠন করলেন ট্রপ। ডায়ার জারি করলেন এক সামরিক ঘোষনা, ঘোষনায় জারী হলো শহরের আশেপাশে হিংসাত্মক কিছু ঘটলেই ধরে নেওয়া হবে শহরবাসীই তা করেছে।
১৩ এপ্রিল ১৯১৯ সাল। জেনারেল ডায়ার সকালের দিকেই নতুন ফরমায়েস জাড়ি করেন প্রশাসনের লিখিত অনুমতি ছাড়া অমৃতসরের বাইরে কেউ বেরতে পারবে না এমনকি শহরের বাইরে থেকেও কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। দিনের বেলা শহরে কিংবা শহরের আশেপাশে কোন প্রকার সভা-জমায়েত চলবে না।
দেয়ালে গুলির স্মৃতিচিহ্ন ছবি: Maps of India
সপ্তাখানেক আগেই ঘোষনা কর হয়েছিল বৈশাখী মেলার দিন জালিয়ানওয়ালাবাগে সভা বসবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করা হবে। ডায়ার তার নয়া ফরমানে শহরের কয়েকটা নির্দিষ্ট স্থানের উল্লেখ করেছিল। অমৃতসর থেকে মাইল সাতেক দূরে সর্ণমন্দির এই মন্দির থেকে আধা মাইল দূরেই জালিয়ানওয়ালাবাগ। জনতা ভেবেছিল শহর থেকে ব্রিটিশ সেনারা এত দূরে হয়তো আসবে না। সারা পাঞ্জাবে বছরে একটি মাত্র উৎসব এই বৈশাখী মেলা। জালিয়ানওয়ালাবাগের এই বৈশাখী মেলাতে জমায়েত হয়েছে হাজার পঁচিশেক মানুষ। অন্যান্য বারের মতো মেলায় এবার আনন্দ নেই সবার মুখেই থমথমে ভাব। গুপ্তচর খবর দিলো ডায়ারকে জালিয়ানওয়ালাবাগে শহরবাসী হাজির হচ্ছে বিদ্রোহ করতে। বাংলোর বাইরে এসে ডায়ার দেখতে পেলেন শহরবাসী জালিয়ানওয়ালাবাগের দিকেই যাচ্ছে।
এত বিদ্রোহীদের একসাথে পাওয়া যাবে ভেবেই আনন্দে জেনারেল ডায়ার বেরিয়ে পরলেন দুটো সাজোয়া যান ও শ'খানেক সৈন্য নিয়ে। জালয়ানওলাবাগে বৈশাখী মেলায় প্রবেশ-বাহিরের জন্য একটামাত্র সরু গলি। ডায়ারের সাজোয়া যান গলির মুখেই থামাতে হলো এগিয়ে চললেন সেনাদের নিয়ে। এদিকে গ্রাম থেকে যারা মেলায় এসেছে তাদের অনেকেই শহরে ঘটে যাওয়া ব্রিটিশদের বর্বরতার ঘটনা জানে না হংসরাজ তাদের কে এই বর্বরতার ঘটনা একের পর এক বলে যাচ্ছে। মিনিট পাঁচেক হাটার ওর জেনারেল ডায়ার পৌছলেন বাগে নির্দেশ দিলেন একটা গুলিও যেন বাজে না খরচ হয়, এবার বিদ্রোহীরা শিক্ষা পাবে ভবিষ্যতে আর বিদ্রোহ করার সুযোগ পাবে না।
তারপর ঘটে গেল ইতিহাসের কলঙ্কময় অধ্যায়। একটানা চালানো হলো ১ হাজার ৬৫০ রাউন্ড গুলি। শেষ হলো ডায়ারের অভিযান। মৃত আর মুমূর্ষেরা পরে রইলো রক্তাক্ত প্রান্তরে। বুলেটবিদ্ধ দেহ থেকে রক্ত ঝরতে ঝরতে একসময় তা হলো নিষ্প্রাণ। অনেক ক্লিষ্ঠ কন্ঠ শেষ আর্তনাথ করে অন্ধকার হলো স্তব্ধ।
এরপর ধীরে ধীরে জালিয়ানওয়ালাবাগের এই পৈশাচিক হত্যাকান্ডের খবর ছড়িয়ে পরলো ভারতবর্ষের এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। সমস্ত ঘটনা শান্তিনিকেতনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কানে গেল। তাঁর প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে একদা ব্রিটিশ সরকার যে 'নাইট' উপাধি দিয়েছিল এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে তিনি তার এই উপাধি পরিত্যাগ করলেন। বিশ্ববাসী যখন এ পৈশাচিক হত্যাকান্ডের কথা জানতে পারলো জেনারেল ডায়ারের সমালোচনার ঝড় উঠলো অনেক জল্পনা কল্পনাশেষে বছর দুয়েক পর জেনারেল ডায়ারকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।
জালিয়ানওয়ালাবাগের ভয়ানক ও মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনায় ব্রিটিশ শাসনের প্রকৃত নগ্ন রূপের প্রকাশ হয়ে পড়ে। চাপে পড়ে ডায়ারকে চাকুরিচ্যুত করলেও সরকার জেনারেল ডায়ারের কাজকে সমার্থন করে।ইংল্যান্ডে এই সেনা কর্মকর্তা জোরালো সমর্থন পেয়েছিলেন। ইংল্যান্ডের মানুষজন এটা দেখছিলো এভাবে যে ডায়ার তার দায়িত্ব পালন করেছেন।
ডায়ারের সমর্থনে তহবিল সংগ্রহ শুরু হয়েছিলো। ২৬ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করা হয়েছিলো। ব্রিটেনে ফিরে আসার তাকে দামি পাথর খচিত তরবারি উপহার দেয়া হয়েছিলো যাতে খোদাই করা ছিল – Saviour of Punjab অর্থাৎ পাঞ্জাবের রক্ষাকর্তা।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.