রোহিঙ্গা কারা?
আমাদের চলে যেতে হবে ১৪৩০ সালে। আরাকানের স্বাধীন রাজা মিন সাও মন পার্শ্ববর্তী 'বামার' রাজার তাড়া খেয়ে বাংলায় রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। বাংলাতেও তখন রাজনৈতিক অস্থিরতা। বাংলা সালতানাতে রাজনৈতিক অস্থিরতা শেষ হয়, গনেশপুত্র জালালউদ্দিন যদুর ক্ষমতায় আরোহনের মধ্য দিয়ে। সুলতান জালালউদ্দিন যদুর সহায়তায় ২৪ বছর পর আরাকানের রাজত্ব ফিরে পান, রাজা মিন সাও মন, ১৪৩০ সালে। কৃতজ্ঞতা স্বরুপ তিনি মুসলিমদের 'সুলতান' উপাধী ধারন করেন। রাজদরবারে আরব, ইরানি, তুর্কি ও বাংলার মুসলিমদের উচ্চপদে চাকরি দেন। তখন থেকে স্বাধীন আরাকান রাজ্যের সাথে বাংলার যোগাযোগ। তখন থেকে মুসলিমরা আরাকানে।
'আরাকান' শব্দটি 'রাখাইন' শব্দটির অপভ্রংশ। আঞ্চলিক ভাবে উচ্চারণ করা হয়, 'রা খাই'। মুসলিমরা আরাকানকে ডাকতো 'রৌসাং' বা 'রোসাং' বা 'রোহাং'। আর আরাকানে আরব, ইরানি, তুর্কি ও বাংলার অভিবাসী মুসলিমদের একসাথে ডাকা হতো 'রোহিঙ্গা'। পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী আরাকানীদেরও বলা হতো 'রোহিঙ্গা'। তখনকার আরাকান রাজ্যে এখনকার মায়ানমারের রাখাইন স্টেট ছাড়াও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিলো। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বাংলা সালতানাতের দখলে আসে ১৬৬৬ সালে। এখন পর্যন্ত আরাকানের ভাষার সাথে চট্টগ্রামের ভাষার মিল লক্ষণীয়।
আরাকান রাজ্য ১৭৮৫ পর্যন্ত স্বাধীন ছিলো। ১৭৮৫ সালে পার্শ্ববর্তী মান্দালয়-ভিত্তিক বার্মিজ রাজ্য আরাকান দখল করে নেয়। আর মান্দালয় রাজ্য বৃটিশরা দখল করে নেয় ১৮২৬ সালে। বৃটিশরা ১৯৪৮ সালে মায়ানমার ছেড়ে গেলে আরাকান মায়ানমারের একটি স্টেট হয়। মায়ানমার ১৯৬২-২০১১ সাল পর্যন্ত সরাসরি সামরিক শাসনের অধীনে থাকে।
১৯৮২ সালে মায়ানমারের সামরিক সরকার ১৩৫ টি নৃগোষ্ঠীর একটি তালিকা করে। তালিকাভুক্ত নৃগোষ্ঠীগুলোকে মায়ানমারের বৈধ নৃগোষ্ঠী ঘোষনা করা হয়। বাকী নৃগোষ্ঠীসমূহ মায়ানমারের অধিবাসী নয় বলে বিবৃতি দেয়া হয়। বড় তিনটি সহ আরো ১৭-২২ টি নৃগোষ্ঠী এই তালিকা থেকে বাদ পরে। রোহিঙ্গারা দলভুক্ত হয় বাদ পরা তালিকায়। মায়ানমারের 'অদ্ভুত' আইন অনুযায়ী তারা আর মায়ানমারের নাগরিক থাকলো না।
রোহিঙ্গাদের ধরা হয় সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী। জাতিগতভাবে তাদের অবস্থান কুর্দীদের চেয়েও খারাপ। কুর্দীদের নিজেদের কোনো দেশ নেই। তাদের ভূমি চারটি দেশের মধ্যে ভাগেযোগে আছে। আর রোহিঙ্গারা এমন একটি নৃগোষ্ঠী যারা কোনো দেশেরই নাগরিক না। তাদের কোনো দেশ নেই।
মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১৩-১৫ লাখ। আর মায়ানমারের বাইরে আছে আরো ১২-১৫ লাখ। এর মধ্যে বাংলাদেশে ৩-৫ লাখ, সৌদি আরবে ৪ লাখ, পাকিস্তানে ২ লাখ, থাইল্যান্ডে ১ লাখ, মালয়েশিয়াতে ৪০ হাজার, ভারতে ৩৫ হাজার, ইন্দোনেশিয়াতে ১২ হাজার রোহিঙ্গা বাস করছে বলে জাতিসংঘের ধারণা। বর্তমানে রোহিঙ্গারা আরাকান স্টেট এর মোট জনসংখ্যার ৩৫%। সরকারীভাবে দমন করে বাইরে না ঠেলে দিলে তারা ৬০% হতে পারতো।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
'আরাকান' শব্দটি 'রাখাইন' শব্দটির অপভ্রংশ। আঞ্চলিক ভাবে উচ্চারণ করা হয়, 'রা খাই'। মুসলিমরা আরাকানকে ডাকতো 'রৌসাং' বা 'রোসাং' বা 'রোহাং'। আর আরাকানে আরব, ইরানি, তুর্কি ও বাংলার অভিবাসী মুসলিমদের একসাথে ডাকা হতো 'রোহিঙ্গা'। পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী আরাকানীদেরও বলা হতো 'রোহিঙ্গা'। তখনকার আরাকান রাজ্যে এখনকার মায়ানমারের রাখাইন স্টেট ছাড়াও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিলো। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বাংলা সালতানাতের দখলে আসে ১৬৬৬ সালে। এখন পর্যন্ত আরাকানের ভাষার সাথে চট্টগ্রামের ভাষার মিল লক্ষণীয়।
আরাকান রাজ্য ১৭৮৫ পর্যন্ত স্বাধীন ছিলো। ১৭৮৫ সালে পার্শ্ববর্তী মান্দালয়-ভিত্তিক বার্মিজ রাজ্য আরাকান দখল করে নেয়। আর মান্দালয় রাজ্য বৃটিশরা দখল করে নেয় ১৮২৬ সালে। বৃটিশরা ১৯৪৮ সালে মায়ানমার ছেড়ে গেলে আরাকান মায়ানমারের একটি স্টেট হয়। মায়ানমার ১৯৬২-২০১১ সাল পর্যন্ত সরাসরি সামরিক শাসনের অধীনে থাকে।
১৯৮২ সালে মায়ানমারের সামরিক সরকার ১৩৫ টি নৃগোষ্ঠীর একটি তালিকা করে। তালিকাভুক্ত নৃগোষ্ঠীগুলোকে মায়ানমারের বৈধ নৃগোষ্ঠী ঘোষনা করা হয়। বাকী নৃগোষ্ঠীসমূহ মায়ানমারের অধিবাসী নয় বলে বিবৃতি দেয়া হয়। বড় তিনটি সহ আরো ১৭-২২ টি নৃগোষ্ঠী এই তালিকা থেকে বাদ পরে। রোহিঙ্গারা দলভুক্ত হয় বাদ পরা তালিকায়। মায়ানমারের 'অদ্ভুত' আইন অনুযায়ী তারা আর মায়ানমারের নাগরিক থাকলো না।
রোহিঙ্গাদের ধরা হয় সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী। জাতিগতভাবে তাদের অবস্থান কুর্দীদের চেয়েও খারাপ। কুর্দীদের নিজেদের কোনো দেশ নেই। তাদের ভূমি চারটি দেশের মধ্যে ভাগেযোগে আছে। আর রোহিঙ্গারা এমন একটি নৃগোষ্ঠী যারা কোনো দেশেরই নাগরিক না। তাদের কোনো দেশ নেই।
মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১৩-১৫ লাখ। আর মায়ানমারের বাইরে আছে আরো ১২-১৫ লাখ। এর মধ্যে বাংলাদেশে ৩-৫ লাখ, সৌদি আরবে ৪ লাখ, পাকিস্তানে ২ লাখ, থাইল্যান্ডে ১ লাখ, মালয়েশিয়াতে ৪০ হাজার, ভারতে ৩৫ হাজার, ইন্দোনেশিয়াতে ১২ হাজার রোহিঙ্গা বাস করছে বলে জাতিসংঘের ধারণা। বর্তমানে রোহিঙ্গারা আরাকান স্টেট এর মোট জনসংখ্যার ৩৫%। সরকারীভাবে দমন করে বাইরে না ঠেলে দিলে তারা ৬০% হতে পারতো।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
মন্তব্য: ১ টি