পার্বত্য চট্টগ্রামবাসী লক্ষ লোকের মরণ ফাঁদ কাপ্তাই বাঁধ
কাপ্তাই বাঁধ
কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের কাজ ১৯৫২ সালে শুরু হয় এবং শেষ হয় ১৯৬২ সালে।এতে পার্বত্য চট্টগ্রামের মোট ৩৬৯টি মৌজার ১৫২টির মোট ১৮ হাজার পরিবারের প্রায় ১ লক্ষ লোক উদ্বাস্ত হয়।এই ১৮ হাজার পরিবারের ১০ হাজার পরিবার কর্ণফুলী, চেংগী,কাসালং এবং আর ছোট ছোট কয়েকটি নদী উপনদীর অববাহিকার চাষী এবং বাকী ৮ হাজার পরিবার জুম চাষী।ক্ষতিগ্রস্ত সর্বোচ্চ লোককে পূনর্বাচনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম ম্যানুয়েল সংশোধন করা হয় এবং সংশোধিত ধারায় বলা হয় যে,এখন থেকে কোনো পরিবারকে ১০ একরের বেশি কৃষি জমি বন্দোবস্ত দেওয়া যাবে না।কিন্তু এই বিধি অগ্রাহ্য করে চাকমা রাজার নামে ২৫ একর জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়।
কাপ্তাই হ্রদের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি জুম্ম পরিবার নতুন রাঙামাটি শহরের পাশে জংগল পরিষ্কার করে বসতবাড়ি এবং ফলের বাগান তৈরি করেছিলো।রাজাকে ৭৫ একর জমি পূরণ করে দেওয়ার জন্য এইসব ক্ষতিগ্রস্ত লোকের জমিও রাজার নামে বন্দোবস্ত দেয়া হয়।পরবর্তীতে ঐসব লোককে তাদের আবাদকৃত জমি আবার রাজার কাছ থেকে ক্রয় করতে হয়েছিলো।এখন এই ৭৫ একর জমি সবটাই নতুন রাঙামাটি শহরের মধ্যে পড়েছে।এ জমি এখন খুবই মূল্যবান হয়েছে।
কর্ণফুলী প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ৩২.০০০ একর কৃষি জমি কাপ্তাই হ্রদে ডুবে যাওয়ার কথা ছিল,কিন্তু বাঁধটি বন্ধ করে দেয়া হলে ৫৪.০০০ একর কৃষি জমি ডুবে যায়।এই জমি পার্বত্য চট্টগ্রামের মোট কৃষি জমি প্রায় ৪০%।
ক্ষতিগ্রস্ত জুম্মদের পুনর্বাচনের জন্য কাসলং সংরক্ষিত বনের ৪০ বর্গমাইল এলাকা dereserve করা হয় এবং সেখানে মাত্র ১০,০০০ একর জমি পাওয়া যায়।তবুও সকল ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাচন করা সম্ভব হয়নি।বাঁধ নির্মাণের ফলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের নামমাত্র ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিলো।প্রতি একর জমির জন্য জমির শ্রেণীনুযায়ী ২০০ টাকা হতে ৬০০ টাকা,একটি ফলবান বৃক্ষের জন্য উর্ধ্বে ১০ টাকা, অফলবান বৃক্ষের জন্য ৫ টাকা,প্রতিটি বসতবাড়ির জন্য গড়ে ৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।
ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যা করা হয়েছিল তা ছিল আরো হতাশাব্যাঞ্জক।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.