মুক্তচিন্তার মতাদর্শ প্রচার যদি অপরাধ হয়, তবে জঙ্গিবাদে উৎসাহদান মহা অপরাধ!
আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানের উপর সহিংস হামলার ঘটনাকে আমি সমর্থন করি না। কিন্তু একজন প্রবীণ সাংবাদিকের উপর এরকম বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় আমার যতটা সহানুভূতি আসার কথা ছিলো, ঘটনা পরবর্তী মাহমুদুর রহমানের পাবলিক সিম্পেথি পাওয়ার অপকৌশল দেখে সেটা আর আসেনি। জনরোষের হাত থেকে কোনরকম বেঁচে মাহমুদুর রহমানের প্রথম কথা ছিলো "ইসলামের জন্য আমি একা জীবন দিবো"! হায়রে ইসলাম!! গলির মোড়ে ভিখারী থেকে নির্বাচনী প্রার্থী, রাজনীতিক দল থেকে সাজা প্রাপ্ত আসামি সবাই ইসলামের ব্যাবহার করে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি জন্য। গণধোলায়ের হাত থেকে বাঁচার জন্য রেপিস্টও পাবলিকের হাতে-পায়ে ধরে বলে "আল্লাহর রওয়াস্তে আমাকে ছেড়ে দাও!!"
তিনি আহত সিংহের মতো হুংকার দিয়ে বলেছে তিনি ইসলামের জন্য একা জীবন দিবেন!! পঁয়ষট্টি বছরের বয়োবৃদ্ধ মাহমুদুর রহমান ইসলামের জন্য এখনো মুখের দাঁড়িটা পর্যন্ত রাখতে পারেননি, কিন্তু তিনি ইসলামের জন্য জীবন দিতে পারবেন! আদত তিনি ভেবেছেন ইসলামের কথা বললে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলামানের দেশ হিসেবে মানুষ দলমত নির্বিশেষ তার জন্য রাস্তায় নেমে পড়বে। হয়তো পড়তোও, কিন্তু ইসলামকে ব্যবহার করে ইতিপূর্বে তিনার বহু স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা এদেশের জনসম্মুখে প্রকাশ হয়ে আছে। মানুষ এখন এসব ভন্ডামি আর খায় না। তাই মাহমুদুর রহমানের চোড়া মিজাইল লক্ষ্যচ্যুত হয়েছে।
বাংলাদেশে হলুদ সাংবাদিকতার জনক মাহমুদুর রহমান তার সাংবাদিকতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে নজির সৃষ্টি করেছে, এদেশের ইতিহাসে তার সমকক্ষ আর কেউ নেই। এই মাহমুদুর রহমানই সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে 'ব্লগার' শব্দটিকে 'নাস্তিক' শব্দের সমর্থক বানিয়ে ফেলেছে। এদেশে যত ব্লগার এবং মুক্তমনা লেখক হত্যার ঘটনা ঘটেছে তার সব ক'টার জন্য মাহমুদুর রহমানের উপর খুনের চার্জ লাগানো যেতে পারে। মতাদর্শকে মতাদর্শ দিয়ে মোকাবেলা করতে হয়। কিন্তু এই নিয়মটি মাহমুদুর রহমান নিজেই ভেঙেছেন। আজ মাহমুদুর রহমানকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে আমরা অবশ্যই বিচলিত হতাম, যদি না তার উস্কানিতে হুমায়ুন আজাদের উপর প্রাণঘাতি হামলা হতো। যদি না রক্তাক্ত হুমায়ুন আজাদকে দেখে পত্রিকা অফিসে বসে মাহমুদুর রহমান দাঁত কেলিয়ে হাসতো।
যুদ্ধপরাধেদের বিচার এদেশের মানুষের দীর্ঘ চল্লিশ বছরের অপেক্ষার ফসল ছিলো। স্বাধীনতার পর প্রতিটি শহীদের পরিবার, প্রত্যেকটি শহীদের সন্তান অধীর হয়ে অপেক্ষায় ছিলো স্বজন হত্যার বিচারে জন্য। জন্মযুদ্ধে পিতৃহারা সন্তানটির প্রতিটি নির্ঘুম রাত জানে কতটা কষ্টে কেটেছে তাদের বিগত চল্লিশ বছরের প্রত্যেকটি প্রহর। এর মাঝে বহু কিছু ঘটে গেছে। মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়ার অপরাধে যারা এদেশের মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের উপর অবনর্ননিয় নির্যাতন করেছিলো, হত্যা, ধর্ষণ, লুট, দখলদারী করে যারা পাকিস্তানিদের বাঙালির জাতিগত উত্থানকে চিরকালের জন্য রুখে দেয়ার মিশন সম্পন্ন করার দোসর ছিলো, সেই দেশদ্রোহী রাজাকারদের বিচারের পরিবর্তে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়েছিলো। অবশেষে বাঙালি যখন তাদের ন্যায্য পাওনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার পেতে শুরু করলো, তখন এই মাহমুদুর রহমান রাজাকারদের বাঁচানোর জন্য উলঙ্গ সমর্থনে নেমেছিলো।
যুদ্ধাপরাধের বিচার যারা করবে একদিন তাদেরও ফাঁসিতে ঝুলানোর হুমকি, কাবা শরীফের গিলাব বদলানোর অনুষ্ঠানের আর মিশরের আল-আজাহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ছবিকে সাঈদির মুক্তির মিছিল বলে পত্রিকায় খবর চেপে মানুষকে ধোকা দেয়া, বাংলাদশ নামক রাষ্ট্রের কোন অস্তিত্ব নেই বলে রাষ্ট্রীদ্রোহীতা, ধর্মীয় উস্কানি ছড়িয়ে মুক্তমনা লেখক-প্রকাশকসহ অসংখ্যা মানুষ হত্যার মদদ যোগানোসহ অগনিত অপরাধের অপরাধী এই মাহমুদুর রহমান।
হুমায়ুন আজাদ, ব্লগার রাজিব, বিজ্ঞান লেখক অভিজিত রয় এরা নাস্তিক। দেশের প্রচলিত আইনে নাস্তিকতা যদি অপরাধ হয়, তাহলে দেশের আইনই তার বিচার করবে। তার জন্য জঙ্গিবাদকে উস্কে দিয়ে হত্যার মতো ঘটনার মদদ দিয়ে মাহমুদুর রহমান ততটাই অপরাধ করেছে, যতটা অপরাধ ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে মাহমুদুর রহমানের উপর হামলাকারীরা করেছে। কুষ্টিয়ায় আওয়ামিপন্থি সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরীর ওপর ছাত্রদলের হামলা ততটাই অপরাধ, বিএনপিপন্থি সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের ওপর ছাত্রলীগের হামলা যতটা অপরাধ। হুমায়ুন আজাদের মরদেহ দাফনে মুন্সীগঞ্জের মৌলবাদীদের বাধা দেয়ায় উল্লাস প্রকাশ করে গোলাম আজমের মরদেহে জুতা নিক্ষেপকে নিন্দা করে আপনি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার পথে হেটেছেন। আমরা এর সবগুলোরই বিরোধীতা করি।
মুক্তচিন্তা বা অসাম্প্রদায়িক মতাদর্শ প্রচার করা যদি অপরাধ হয়, তবে ধর্মীয় উস্কানির মাধ্যমে জঙ্গিবাদের উৎসাহদান মহা অপরাধ। অপরাধের বিচারের ভার তো মাহমুদুর রহমান নিজের কাধে তুলে নিয়েছেন, কিন্তু মহা অপরাধের বিচার যেন রাষ্ট্র নিশ্চিত করে।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
তিনি আহত সিংহের মতো হুংকার দিয়ে বলেছে তিনি ইসলামের জন্য একা জীবন দিবেন!! পঁয়ষট্টি বছরের বয়োবৃদ্ধ মাহমুদুর রহমান ইসলামের জন্য এখনো মুখের দাঁড়িটা পর্যন্ত রাখতে পারেননি, কিন্তু তিনি ইসলামের জন্য জীবন দিতে পারবেন! আদত তিনি ভেবেছেন ইসলামের কথা বললে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলামানের দেশ হিসেবে মানুষ দলমত নির্বিশেষ তার জন্য রাস্তায় নেমে পড়বে। হয়তো পড়তোও, কিন্তু ইসলামকে ব্যবহার করে ইতিপূর্বে তিনার বহু স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা এদেশের জনসম্মুখে প্রকাশ হয়ে আছে। মানুষ এখন এসব ভন্ডামি আর খায় না। তাই মাহমুদুর রহমানের চোড়া মিজাইল লক্ষ্যচ্যুত হয়েছে।
বাংলাদেশে হলুদ সাংবাদিকতার জনক মাহমুদুর রহমান তার সাংবাদিকতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে নজির সৃষ্টি করেছে, এদেশের ইতিহাসে তার সমকক্ষ আর কেউ নেই। এই মাহমুদুর রহমানই সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে 'ব্লগার' শব্দটিকে 'নাস্তিক' শব্দের সমর্থক বানিয়ে ফেলেছে। এদেশে যত ব্লগার এবং মুক্তমনা লেখক হত্যার ঘটনা ঘটেছে তার সব ক'টার জন্য মাহমুদুর রহমানের উপর খুনের চার্জ লাগানো যেতে পারে। মতাদর্শকে মতাদর্শ দিয়ে মোকাবেলা করতে হয়। কিন্তু এই নিয়মটি মাহমুদুর রহমান নিজেই ভেঙেছেন। আজ মাহমুদুর রহমানকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে আমরা অবশ্যই বিচলিত হতাম, যদি না তার উস্কানিতে হুমায়ুন আজাদের উপর প্রাণঘাতি হামলা হতো। যদি না রক্তাক্ত হুমায়ুন আজাদকে দেখে পত্রিকা অফিসে বসে মাহমুদুর রহমান দাঁত কেলিয়ে হাসতো।
যুদ্ধপরাধেদের বিচার এদেশের মানুষের দীর্ঘ চল্লিশ বছরের অপেক্ষার ফসল ছিলো। স্বাধীনতার পর প্রতিটি শহীদের পরিবার, প্রত্যেকটি শহীদের সন্তান অধীর হয়ে অপেক্ষায় ছিলো স্বজন হত্যার বিচারে জন্য। জন্মযুদ্ধে পিতৃহারা সন্তানটির প্রতিটি নির্ঘুম রাত জানে কতটা কষ্টে কেটেছে তাদের বিগত চল্লিশ বছরের প্রত্যেকটি প্রহর। এর মাঝে বহু কিছু ঘটে গেছে। মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়ার অপরাধে যারা এদেশের মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের উপর অবনর্ননিয় নির্যাতন করেছিলো, হত্যা, ধর্ষণ, লুট, দখলদারী করে যারা পাকিস্তানিদের বাঙালির জাতিগত উত্থানকে চিরকালের জন্য রুখে দেয়ার মিশন সম্পন্ন করার দোসর ছিলো, সেই দেশদ্রোহী রাজাকারদের বিচারের পরিবর্তে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়েছিলো। অবশেষে বাঙালি যখন তাদের ন্যায্য পাওনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার পেতে শুরু করলো, তখন এই মাহমুদুর রহমান রাজাকারদের বাঁচানোর জন্য উলঙ্গ সমর্থনে নেমেছিলো।
যুদ্ধাপরাধের বিচার যারা করবে একদিন তাদেরও ফাঁসিতে ঝুলানোর হুমকি, কাবা শরীফের গিলাব বদলানোর অনুষ্ঠানের আর মিশরের আল-আজাহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ছবিকে সাঈদির মুক্তির মিছিল বলে পত্রিকায় খবর চেপে মানুষকে ধোকা দেয়া, বাংলাদশ নামক রাষ্ট্রের কোন অস্তিত্ব নেই বলে রাষ্ট্রীদ্রোহীতা, ধর্মীয় উস্কানি ছড়িয়ে মুক্তমনা লেখক-প্রকাশকসহ অসংখ্যা মানুষ হত্যার মদদ যোগানোসহ অগনিত অপরাধের অপরাধী এই মাহমুদুর রহমান।
হুমায়ুন আজাদ, ব্লগার রাজিব, বিজ্ঞান লেখক অভিজিত রয় এরা নাস্তিক। দেশের প্রচলিত আইনে নাস্তিকতা যদি অপরাধ হয়, তাহলে দেশের আইনই তার বিচার করবে। তার জন্য জঙ্গিবাদকে উস্কে দিয়ে হত্যার মতো ঘটনার মদদ দিয়ে মাহমুদুর রহমান ততটাই অপরাধ করেছে, যতটা অপরাধ ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে মাহমুদুর রহমানের উপর হামলাকারীরা করেছে। কুষ্টিয়ায় আওয়ামিপন্থি সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরীর ওপর ছাত্রদলের হামলা ততটাই অপরাধ, বিএনপিপন্থি সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের ওপর ছাত্রলীগের হামলা যতটা অপরাধ। হুমায়ুন আজাদের মরদেহ দাফনে মুন্সীগঞ্জের মৌলবাদীদের বাধা দেয়ায় উল্লাস প্রকাশ করে গোলাম আজমের মরদেহে জুতা নিক্ষেপকে নিন্দা করে আপনি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার পথে হেটেছেন। আমরা এর সবগুলোরই বিরোধীতা করি।
মুক্তচিন্তা বা অসাম্প্রদায়িক মতাদর্শ প্রচার করা যদি অপরাধ হয়, তবে ধর্মীয় উস্কানির মাধ্যমে জঙ্গিবাদের উৎসাহদান মহা অপরাধ। অপরাধের বিচারের ভার তো মাহমুদুর রহমান নিজের কাধে তুলে নিয়েছেন, কিন্তু মহা অপরাধের বিচার যেন রাষ্ট্র নিশ্চিত করে।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.