শাফিউল কায়েসের উপন্যাস"নীহারিকা"পর্ব-০১
ক্লাসের পিছনের বেঞ্চে বসে আছি আমি,পাশ থেকে একটি মেয়ে বলে উঠলো
-এই!
-হুম!
-৮৩ রোল নাম্বারে'র প্রোক্সিটা দিয়ে দিও।
আমি অজান্তে বললাম,
-ঠিক আছে।
১২ টায় একটা ক্লাস শেষ হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু হটাৎ করে
ক্লাসটি ২ টায় দিয়ে দেয় ম্যাডাম।
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি তবুও কারো সাথে তেমন পরিচয় হয়নি সাজিদ আর দুই একজন বন্ধু ছাড়া।তাছাড়া মেয়ে বন্ধবীদের সাথে কোন পরিচিতি পর্ব হয় নি।অনেকে কথা বলছে পরিচয় হয়েছে আমি যে
অসহায়দের মত দূর থেকে চেয়ে রই।
আজকের দিন অনেক প্রেমিক/প্রেমিকা ব্যস্ত প্রেম বিনিময়ে।
তবে মেয়েটিকে আমি যেদিন ক্লাসে প্রথম দেখি, সেদিন থেকে তার আমার মনটা শুধু তার দিকে থাকে।
এর নাম কি প্রেম!
তাহলে আমিও তার প্রেমে পড়ে গেছি।
আমার চোখে সে অনেক সুন্দরী, উচ্চতা খুব একটা বেশি না, আমার উচ্চতার সাথে মিলে যায় অনেকটা।
তাকে দেখলে মনে হয় সে আমার অনেক দিনের পরিচিত কেউ একজন,কোন এক দুর্ঘটনায় হারিয়ে গিয়েছিলো তাকে যেনো আবার যেনো খুঁজে পেয়েছি!
ক্লাসে সে সবার সাথে অনায়াসে মিশতে পারে, ঠিক আমার উল্টো।
অনেক ভালো একটি মেয়ে,তাকে দেখলে যে কেউ তার প্রেমে পড়ে যাবে,যেমন আমিও আজ তারা প্রেমের ফাদে পরে গেছি।
আমি আর সাজিদ বসে আছি ক্যাম্পাসের একটি বেঞ্চে, ক্লাসে যে মেয়েটি প্রোক্সি দিতে বললো সে আমার পাশে এসে বসে।প্রথমে সাজিদের সাথে কথা তারপর আমার মধ্যে,এরপর আমাদের মধ্যে কথোপকথন হয়।
সেই মেয়েটি আমাদের পাশে এসে বসলো।আমি তখন মোবাইলে গেম খেলতে ছিলাম।
সাজিদঃকিরে নীহারিকা?
-এইতো ভালো। তোর কি খবর?
-এইতো চলছে।
ওদের মধ্যে কথোপকথন চলছে।আমি নিশ্চুপ হয়ে আমার মোবাইলে গেম খেলছি।
-কি নাম তোমার?
-আকাশ।
-তোমার বাসা যেনো কোথায়?
-ঠাকুরগাঁও।
-অনেক দূর!হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
অনেক সুন্দর তাই না।
-হুম।
-তোমার নামটা?
-নীহারিকা!
-অনেক সুন্দর নাম।বাসা কোথায় তোমার?
-খুলনা।
ফেসবুক আইডি লেনদেন হয় ওদের দুজনার।
রাত থেকে শুরু হয় ম্যাসেঞ্জারে আকাশ আর নীহারিকা'র কথোপকথন। তার পর মোবাইল কলে কথা চলে দুজনার মাঝে।
আকাশ সকাল সকাল ৮টায় ঘুম থেকে উঠে দেখে তার মোবাইলে ১০টা মিস কল। কে আবার এতবার কল দিলো এই সকালে।অন্যকারো নাম্বার থেকে কল আসেনি, এসেছে মনের
মানুষ,স্বপ্ন ও বাস্তবের শুভাকাঙ্ক্ষী নীহারিকা।।সে বিস্মিত হয়!
আকাশ তাড়াতাড়ি কল ব্যাক করলো।
-আপনার একাউন্টে যথেষ্ট পরিমানে টাকা নেই!
সে তাড়াহুড়া করে বিকাশ থেকে টাকা ফ্লাক্সি নেয়।
-হ্যালো।(আকাশ)
-হ্যালো। এখনো ঘুমে নাকি?(নীহারিকা)
-হুম।ঘুমের মধ্যে।
-আজ ক্লাস কয়টায়?
-সকাল ৮.৩০।
-তাহলে এখনো ঘুমে।
-উঠতেছি।
-আচ্ছা, তাড়াতাড়ি রেডি হও।
-তুমি কি করো?
-আমি বের হচ্ছি ভার্সিটি যাওয়ার জন্য।
-ওকে।আসো তাহলে। ফোন রাখলাম
-ওকে।
সে এমনি প্রত্যেকদিন সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি করে।
রাত জেগে জেগে শুধু ফেসবুক আর ম্যাসেঞ্জারে ব্যস্ত। মেসে ওয়াইফাই থাকায় নতুন বিনোদনে জড়িয়ে থাকায় অতি সহজে সময় কোন পাশে চলে যায় সে বলতেই পারে না।
খালার রান্না এখনো শেষ হয়নি।সে গোসল করে ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়। সকালে না খেয়ে ভার্সিটি'র উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
সে ভার্সিটি ক্যাম্পাস থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে থাকে।মেস থেকে ক্যাম্পাসে আসতে সময় লাগে ১২-১৫ মিনিট।ক্যাম্পাস থেকে দূরে থাকার কারণও আছে।
ক্যাম্পাসে ঢুকতে না ঢুকতেই তার মোবাইলে কল আসলো।
নীহারিকা ফোন করেছে।
-হ্যালো।কোথায় তুমি?
-এইতো ক্যাম্পাসে ঢুকতেছি। তুমি কোথায়?
-আমি ক্যাম্পাসে। আমাদের ক্লাসরুমে।
-স্যার। আসচ্ছেন কি?
-না। এখনো আসেনি।
-ওকে।আমি আসতেছি
-ওকে।
-----------(চলবে)---------
♦নীহারিকা নামটি কোন মেয়ের নামের সাথে মিলে গেলে আন্তরিক ভাবে দুঃখিত! ♦
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
মন্তব্য: ২ টি