মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন
মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অভিযান চালিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট হয়েছে সারা দেশবাসী। মাদকের করাল আগ্রাসনে যখন দেশের তরুণ সমাজ তাদের পথ হারাতে বসেছিল তখন শেখ হাসিনার এই পদক্ষেপ জাতিকে আশার আলো দেখিয়েছে। শুধু চুনোপুটি নয় মাদকসম্রাটরাও এখন বাঁচতে পারবে না। এমনই একজন গডফাদার ছিলেন কক্সবাজারের একরাম। সে যুবলীগের সভাপতি ছিল। তার এই পরিচয়ও তাকে গ্রেপ্তারের হাত থেকে বাঁচাতে পারে নি। তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার বাহিনীর সাথে র্যাবের বন্দুকযুদ্ধে সে মারা যায়।
শেখ হাসিনা প্রশংসা পেতে পারেন। উনি মাদকবিরোধী অভিযানে কোন দলীয় স্বজনপ্রীতি করেন নি। দোষ যে করবে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। গতকাল শেখ হাসিনার দেয়া একটি ঘোষণা এই যুদ্ধে আরো প্রাণ দিবে। বাংলাদেশ নিশ্চয়ই মাদক্মুক্ত হবে।
মাদক ব্যবসায় জড়িত ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি গডফাদার ও সিন্ডিকেটের সদস্যদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০’-এর অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলাদা আদালত গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (২০ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর পৃথক দুই প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। সেই নীতি বাস্তবায়নে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বর্তমানে চলমান মাদকবিরোধী কার্যক্রমের ফলে মাদকের চোরাচালান ও এর ব্যবহার বন্ধ করে তরুণদের সামাজিক অবক্ষয়ের হাত হতে রক্ষা করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ জানান তিনি।
বিদ্যমান মাদকদ্রব্য আইনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে উল্লেখ করে সেগুলো দূর করা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০-এ মাদক অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে এই আইনে কোনো ব্যক্তির দখলে/কর্তৃত্বে বা অধিকারে মাদকদ্রব্য পাওয়া না গেলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ কম।
ফলে মাদক ব্যবসায় জড়িত মাস্টারমাইন্ডরা সহজেই পার পেয়ে যায়। তাই মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতাকারী ও মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা রেখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করা হচ্ছে। সংশোধিত আইনে মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষক ও মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখার প্রস্তাব করা হবে। তাছাড়া এ আইনে মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষক ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকেও আইনের আওতায় আনার জন্য মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ তদন্তে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে।’
মাদকদ্রব্য ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকার সবসময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে। মাদকের আগ্রাসন প্রতিরোধে মাদক চোরাকারবারী, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী ও মাদক চোরাচালান সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এছাড়াও যানবাহন ও মাদক স্পটগুলোতে তল্লাশি অভিযান চলছে। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হচ্ছে। মাদক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যেন ভয়াবহ মাদকের প্রতি আকৃষ্ট না হয়, সেজন্যও মাদকের কুফল সম্পর্কে জনসচেতনামূলক কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে।
মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদের জয় হবেই।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.