জীবিত একরাম আর ফিরে আসবে না জানি, কিন্তু মৃত একরামদেরও একটা বিরাট শক্তি আছে!
পার্থক্য হচ্ছে পঁচাত্তরের সেই ঘাতক বুলেট আপনার বাবাকে আজীবন বাঙালির কাছে মহাপুরুষের পরিচিতি দিয়েছে। আর সেদিন রাতে তাহিয়া-নাহিয়ানের বাবার বুকে গর্জে উঠা বুলেট তাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার তকমা দিয়ে দিবে। আমি একথা বলছি না যে, একরামুল হক নির্দোষ। আবার এটাও বলছি না যে, সে ইয়াবা কারবারের সাথে জড়িত। আমি শুধু এটা বলতে চাইছি, ভুল বা অন্যায় কে করে না? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন, আপনার দ্বারা কখনো কোন ভুল হয়নি? বঙ্গবন্ধুও কি ভুলের ঊর্ধে ছিলেন? হয়তো আমরা মানুষ বলেই এমন দাবি করতে পারি না। আর এখানেই মানুষ আর অন্য সৃষ্টিতে পার্থক্য। এটাই মানুষের শ্রেষ্টত্ব।
একরাম ইয়াবা কারবারে জড়িত এটা তার বড় অপরাধ নয়, তার সবথেকে বড় অপরাধ সে অপরাধের পাশাপাশি ক্ষমতাবান হয়ে উঠতে পারেনি। যদি পারতো আপনি এবং আপনার র্যাব তাকে কিছুই করতে পারতো না। হাতের কাছেই নজির আছে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, পাঁচ বছরের শিশু থেকে পঁচাশি বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত জানে এদেশের ইয়াবার প্রবাদপুরুষ কে? কিন্তু আপনার এই শুদ্ধি অভিযান তার একটা পশম উপড়ানোর ক্ষমতাও রাখে না। মাদকের খুচরা কারবারিদের উপর র্যাব যেখানে মূর্তিমান বিভিষিকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, সেখানে সেই র্যাবই আবার গডফাদারদের নিম্নাঙ্গ তৈল মর্দন করে। এটা চরম হিপোক্রিচি।
যে র্যাব দিয়ে আপনি দেশে শুদ্ধি অভিযানে নেমেছেন, সেই র্যাবও কি সর্বশুদ্ধ! আমি প্রায়শই বলি- ইতিহাসের সব থেকে বড় শিক্ষা হচ্ছে ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। আপনি কি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সেভেন মার্ডারের কথা বিস্মৃত হয়ে গেছেন? র্যাব যেখানে আইনরক্ষা বাহিনীর পোশাকে গুন্ডার ভুমিকা পালন করেছিল, মনে পড়ে কি শীতলক্ষ্যার বুকে ক'দিন পরপর ভেসে উঠেছিলো ভাড়াটে খুনি র্যাবের হাতে নির্মম মৃত্যুর শিকার হওয়া হতভাগ্য মানুষের লাশ! আপনার বিচার বিভাগই তো সেদিন অভিযুক্ত র্যাব সদস্যদের দন্ড দিয়েছিলো! গোটা দেশের সামনে সেদিন যে র্যাবের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছিলো, সেই বিতর্কিত একটা বাহিনীর উপর এমন গুরু দায়িত্ব অর্পন করা আপনার বুদ্ধিমত্তাকেই শুধু প্রশ্নবিদ্ধ করে না, আপনার রাজনীতিক দূরদর্শীতা উপরও সন্দেহের অবকাস তৈরী হয়। আমরা সব সময় চাইবো, সময়ের পালাবাদলে বদলে যাওয়া পরিস্থিতির হাত ধরে এমন দিন যেন আমাদের কখনোই দেখতে না হয় যে, এই কুখ্যাত র্যাব একদিন আপনার উপরেও ছড়াও হয়েছে।
বিচার বহির্ভুত এইসব হত্যাকান্ডের ব্যাপারে আমার বরাবরই আপত্তি আছে। এটা যতটা না মানবিক কারণে, তদপেক্ষা বেশি যৌক্তিক কারণে। প্রথমত; বিচারবিহীন হত্যার দ্বারা একজন অপরাধিকে শেষ করা গেলেও, মুল অপরাধের গোড়ায় পৌছানো যায় না। কারণ এই প্রক্রিয়ায় একজন অপরাধির সাথে বড় একটা অপরাধ চক্রও আড়াল হয়ে যায়। দ্বিতীয় কারণ; যারা এই বিচারবহির্ভুত হত্যা করে তারা নিজেরাই যেখানে বিতর্কিত, সেখানে তাদের অস্ত্র যে বরাবরই অপরাধীর বুকে নিশানা করবে, কখনোই যে নিরপরাধীর বুক ভেদ করবে না, তারা যে অর্থের কাছে বিক্রি হবে না তার নিশ্চয়তা কি? আর যদি কেবলমাত্র মানবিকতার উপর ফোকাস করি তাহলে বলতে হয়, একজন সিরিয়াল কিলারেরও আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার আছে। বিচারবিহীন হত্যা কোনভাবেই এই সভ্য পৃথিবীর আচরন হতে পারে না।
মৃত্যুর ঠিক আগ মুহুর্তে একরাম তার মেয়েকে ফোনে বলেছিলো "বেশিক্ষন লাগবে না, আমি চলে আসবো ইনশাহআল্লাহ"। একরামের মেয়েকে বলা ফিরে আসার কথায় দৃঢ়তা ছিলো না। অন্তত জীবিত ফিরে আসার কথা তো ছিলোই না সেটা। জীবিত একরাম ফিরে আসার আর কোন সম্ভাবনা নেই, কিন্তু মৃত একরামরা ফিরে আসার নজির আছে। ২০০২ সালে বিএনপি জামায়াত-সরকার অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছিল। একই সরকার ২০০৪ সালে র্যাব গঠন করে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রায় এক সহস্রাধিক মানুষ হত্যা করেছিল। এছাড়া জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে অকথ্য নির্যাতন করে পঙ্গু করে দিয়েছিল অনেককে। তবে এই হতভাগ্যদের মধ্যে যতটা না অপরাধি ছিলো, তদপেক্ষা বেশি ছিলো একরামের মতো প্রতিহিংসার শিকার! একটা শক্তিশালী রাজনীতিক দল এক দশকের ব্যবধানে একটা বাজার কমিটির ন্যায় ক্ষুদ্র আর দুর্বলা হয়ে পড়া বিএনপি'কে দেখে এই কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় মৃত একরামদের একটা বিরাট শক্তি আছে!
পঁচাত্তরের আগস্টের এক রাতে ধানমন্ডির বাড়িতে আপনার পিতার উপর ঘাতকের গর্জ উঠা কয়েকটি বুলেট আপনাকে যেমন সারা জীবন তাড়া করে বেড়িয়েছে, তেমনি সেদিন রাতে একরামের উপর গর্জে উঠা বুলেটও তার দুই কন্যাকে আমৃত্যু তাড়া করে বেড়াবে। পার্থক্য একরামের দুই কন্যার ভাগ্য এতটা প্রসস্ত হবে না, যতটা আপনাদের দু'বোনের বেলায় হয়েছিলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ভুল বা অন্যায় যেই করুক না কেন এর মুল্য আপনাকে চড়া দামে শোধ করতে হবে। আমরা সাধারন মানুষরা সময়ের কাছে যে কতটা অসহায় একরাম হত্যা পরবর্তি ঘটনাগুলোয় এই সত্যটাই বারবার অনুধাবন করছি। কিচ্ছু করার নেই। হাত-পা অসাড় হয়ে আসছে। বিবেকবোধ তো হারিয়েছি বহু আগে। প্রতিবাদের ভাষাও আর অবশিষ্ট নেই। শুধু বারবার মনে হচ্ছে একরামের উপর গর্জে উঠা বুলেট অভিশাপ হয়ে আওয়ামীলীগের উপর না ফিরে আসে!
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
একরাম ইয়াবা কারবারে জড়িত এটা তার বড় অপরাধ নয়, তার সবথেকে বড় অপরাধ সে অপরাধের পাশাপাশি ক্ষমতাবান হয়ে উঠতে পারেনি। যদি পারতো আপনি এবং আপনার র্যাব তাকে কিছুই করতে পারতো না। হাতের কাছেই নজির আছে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, পাঁচ বছরের শিশু থেকে পঁচাশি বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত জানে এদেশের ইয়াবার প্রবাদপুরুষ কে? কিন্তু আপনার এই শুদ্ধি অভিযান তার একটা পশম উপড়ানোর ক্ষমতাও রাখে না। মাদকের খুচরা কারবারিদের উপর র্যাব যেখানে মূর্তিমান বিভিষিকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, সেখানে সেই র্যাবই আবার গডফাদারদের নিম্নাঙ্গ তৈল মর্দন করে। এটা চরম হিপোক্রিচি।
যে র্যাব দিয়ে আপনি দেশে শুদ্ধি অভিযানে নেমেছেন, সেই র্যাবও কি সর্বশুদ্ধ! আমি প্রায়শই বলি- ইতিহাসের সব থেকে বড় শিক্ষা হচ্ছে ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। আপনি কি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সেভেন মার্ডারের কথা বিস্মৃত হয়ে গেছেন? র্যাব যেখানে আইনরক্ষা বাহিনীর পোশাকে গুন্ডার ভুমিকা পালন করেছিল, মনে পড়ে কি শীতলক্ষ্যার বুকে ক'দিন পরপর ভেসে উঠেছিলো ভাড়াটে খুনি র্যাবের হাতে নির্মম মৃত্যুর শিকার হওয়া হতভাগ্য মানুষের লাশ! আপনার বিচার বিভাগই তো সেদিন অভিযুক্ত র্যাব সদস্যদের দন্ড দিয়েছিলো! গোটা দেশের সামনে সেদিন যে র্যাবের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছিলো, সেই বিতর্কিত একটা বাহিনীর উপর এমন গুরু দায়িত্ব অর্পন করা আপনার বুদ্ধিমত্তাকেই শুধু প্রশ্নবিদ্ধ করে না, আপনার রাজনীতিক দূরদর্শীতা উপরও সন্দেহের অবকাস তৈরী হয়। আমরা সব সময় চাইবো, সময়ের পালাবাদলে বদলে যাওয়া পরিস্থিতির হাত ধরে এমন দিন যেন আমাদের কখনোই দেখতে না হয় যে, এই কুখ্যাত র্যাব একদিন আপনার উপরেও ছড়াও হয়েছে।
বিচার বহির্ভুত এইসব হত্যাকান্ডের ব্যাপারে আমার বরাবরই আপত্তি আছে। এটা যতটা না মানবিক কারণে, তদপেক্ষা বেশি যৌক্তিক কারণে। প্রথমত; বিচারবিহীন হত্যার দ্বারা একজন অপরাধিকে শেষ করা গেলেও, মুল অপরাধের গোড়ায় পৌছানো যায় না। কারণ এই প্রক্রিয়ায় একজন অপরাধির সাথে বড় একটা অপরাধ চক্রও আড়াল হয়ে যায়। দ্বিতীয় কারণ; যারা এই বিচারবহির্ভুত হত্যা করে তারা নিজেরাই যেখানে বিতর্কিত, সেখানে তাদের অস্ত্র যে বরাবরই অপরাধীর বুকে নিশানা করবে, কখনোই যে নিরপরাধীর বুক ভেদ করবে না, তারা যে অর্থের কাছে বিক্রি হবে না তার নিশ্চয়তা কি? আর যদি কেবলমাত্র মানবিকতার উপর ফোকাস করি তাহলে বলতে হয়, একজন সিরিয়াল কিলারেরও আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার আছে। বিচারবিহীন হত্যা কোনভাবেই এই সভ্য পৃথিবীর আচরন হতে পারে না।
মৃত্যুর ঠিক আগ মুহুর্তে একরাম তার মেয়েকে ফোনে বলেছিলো "বেশিক্ষন লাগবে না, আমি চলে আসবো ইনশাহআল্লাহ"। একরামের মেয়েকে বলা ফিরে আসার কথায় দৃঢ়তা ছিলো না। অন্তত জীবিত ফিরে আসার কথা তো ছিলোই না সেটা। জীবিত একরাম ফিরে আসার আর কোন সম্ভাবনা নেই, কিন্তু মৃত একরামরা ফিরে আসার নজির আছে। ২০০২ সালে বিএনপি জামায়াত-সরকার অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছিল। একই সরকার ২০০৪ সালে র্যাব গঠন করে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রায় এক সহস্রাধিক মানুষ হত্যা করেছিল। এছাড়া জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে অকথ্য নির্যাতন করে পঙ্গু করে দিয়েছিল অনেককে। তবে এই হতভাগ্যদের মধ্যে যতটা না অপরাধি ছিলো, তদপেক্ষা বেশি ছিলো একরামের মতো প্রতিহিংসার শিকার! একটা শক্তিশালী রাজনীতিক দল এক দশকের ব্যবধানে একটা বাজার কমিটির ন্যায় ক্ষুদ্র আর দুর্বলা হয়ে পড়া বিএনপি'কে দেখে এই কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় মৃত একরামদের একটা বিরাট শক্তি আছে!
পঁচাত্তরের আগস্টের এক রাতে ধানমন্ডির বাড়িতে আপনার পিতার উপর ঘাতকের গর্জ উঠা কয়েকটি বুলেট আপনাকে যেমন সারা জীবন তাড়া করে বেড়িয়েছে, তেমনি সেদিন রাতে একরামের উপর গর্জে উঠা বুলেটও তার দুই কন্যাকে আমৃত্যু তাড়া করে বেড়াবে। পার্থক্য একরামের দুই কন্যার ভাগ্য এতটা প্রসস্ত হবে না, যতটা আপনাদের দু'বোনের বেলায় হয়েছিলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ভুল বা অন্যায় যেই করুক না কেন এর মুল্য আপনাকে চড়া দামে শোধ করতে হবে। আমরা সাধারন মানুষরা সময়ের কাছে যে কতটা অসহায় একরাম হত্যা পরবর্তি ঘটনাগুলোয় এই সত্যটাই বারবার অনুধাবন করছি। কিচ্ছু করার নেই। হাত-পা অসাড় হয়ে আসছে। বিবেকবোধ তো হারিয়েছি বহু আগে। প্রতিবাদের ভাষাও আর অবশিষ্ট নেই। শুধু বারবার মনে হচ্ছে একরামের উপর গর্জে উঠা বুলেট অভিশাপ হয়ে আওয়ামীলীগের উপর না ফিরে আসে!
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.