স্বপ্নের পদ্মা সেতু, প্রমাণ করেছি আমরাও পারি

পদ্মা সেতু কেবল পদ্মার ওপারের মানুষের স্বপ্ন নয়। এটা এখন সারা বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন। এটা একটি চ্যালেঞ্জের নাম। বিশ্বব্যাংকসহ সারা বিশ্বকে আমরা চ্যালেঞ্জ করেছি। এবং আমরা সফল হচ্ছি।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু আরও বেশি দৃশ্যমান হয়েছে চতুর্থ স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে। এর ফলে সোয়া ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের বৃহত্তম সেতুর ৬০০ মিটার অংশ গত রবিবার দৃশ্যমান হয়েছে। অচিরেই জাজিরা প্রান্তে বসানো হবে পাঁচ নম্বর স্প্যান। এখন এটিতে রঙের কাজ চলছে এবং তা শেষ হলে ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারে বসানো হবে। নতুন বসানো স্প্যানটির আগে পদ্মা সেতুর তিনটি স্প্যানে ৪৫০ মিটার দৃশ্যমান ছিল।
পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রের অন্ত ছিল না। দেশি-বিদেশি বহু মহল এই কাজকে থামিয়ে দিতে চেয়েছিলো। ওরা চেয়েছিলো বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে কলঙ্কিত করতে। কিন্তু না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কাছে পরাজিত হয়েছে সব ষড়যন্ত্রকারীরা। চুনিকালি পড়েছে তাদের মুখে।
গত শনিবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে চতুর্থ স্প্যানটি শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে নেওয়া হয়। রবিবার ভোরে এটি ৪১ ও ৪২ নম্বর খুঁটির কাছাকাছি আসে। সকাল পৌনে ৭টার দিকে স্প্যানটি পুরোপুরি খুঁটির ওপর স্থাপন করা হয়। ৪২টি স্প্যান জোড়া দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করা হচ্ছে। সেতুর প্রতিটি স্প্যান খুঁটিতে তোলার পুরো কাজ সম্পন্ন হয়েছে ভাসমান ক্রেন আর প্রযুক্তির সাহায্যে। শক্তিশালী ক্রেনের সাহায্যে স্প্যানগুলো সেতুর খুঁটির কাছে আনা হয়েছে।
গত রবিবার স্থাপিত স্প্যানটি ১৫০ মিটার লম্বা ও ১৩ মিটার প্রস্থ এবং ৩ হাজার ২০০ টন ওজনের। এটি ৩ হাজার ৭০০ টন ওজনের ভাসমান ক্রেনের সাহায্যে আনা হয়। স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তে পিলারের কাছে পৌঁছতে দুই দিন লেগেছে। এ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর মূল প্রকল্পের কাজের ৫৮ শতাংশ শেষ করেছে সেতু বিভাগ।
পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহনের পাশাপাশি ট্রেনও চলবে। পদ্মা সেতুতে রেললাইন বসানোর জন্য ইতিমধ্যে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তিও হয়েছে। দেশের বৃহত্তম এই সেতু নির্মাণ হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে রাজধানীসহ অন্য অংশের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা সাড়ে ৩ কোটি মানুষের ভাগ্যে এ সেতু আশীর্বাদ বলে বিবেচিত হবে। বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় স্বপ্নের এই সেতু নির্মিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলক অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়। নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু তৈরির সক্ষমতা দেখিয়ে প্রমাণ করতে চলেছি আমরাও পারি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ইতিমধ্যে মিথ্যা বলেও প্রমাণিত হয়েছে।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.