একে তো মেয়েমানুষ, তার ওপর স্কুটি চালায়!

ঘটনাটি বৃহস্পতিবার সকালের। ধানমন্ডি ১১ নম্বর সড়কে সানিডেইল স্কুলের ফটকের সামনে। সফটওয়্যার প্রকৌশলী তানিয়া আলম স্কুটিতে করে সন্তানকে স্কুলে পৌঁছাতে গিয়েছিলেন। সন্তানের সামনেই হঠাৎ এক ট্রাফিক পুলিশ তানিয়ার উদ্দেশে আপত্তিকর ও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করতে থাকেন। অভিযোগ নিয়ে ট্রাফিক ফাঁড়িতে গেলেও তিনি বিচার পাননি।
তানিয়া এ নিয়ে অভিযুক্ত ট্রাফিক পুলিশের ছবিসহ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তিনি বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম সাইফুল। ওই পুলিশ সদস্য অন্য গাড়িচালকদের তাঁকে ধাক্কা দেওয়ার জন্য উসকে দিচ্ছিলেন। সাইফুল বলছিলেন, ‘মারেন ভাই মারেন। একে তো মেয়েমানুষ, তার ওপর স্কুটি চালায়। ডেইলি দুইটা বাচ্চা নিয়া দিতে আসে। মারেন। মারলে কোনো সমস্যা নেই। আমি বলছি মারলে কোনো সমস্যা নেই।’
এই ঘটনায় তানিয়ার সন্তান ভয় পেয়ে যায়। তিনি সন্তানকে সানিডেইল স্কুলে পৌঁছে দিয়ে ফের ওই পুলিশ সদস্যের কাছে যান। তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি ট্রাফিক আইন ভেঙেছেন কি না বা তাঁর কোনো অপরাধ আছে কি না। পরে তিনি পুলিশের ওই সদস্যের একটি ছবি তুলে ৩২ নম্বরে ট্রাফিক ফাঁড়িতে যান।
তানিয়া বলেন, ফাঁড়িতে ঢুকেই তিনি বুঝতে পারেন, ঘটনাটির ব্যাপারে সবাই জানেন। তিনি পুলিশের সহকারী কমিশনার আকরাম হাসানের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি সাধারণ ডায়েরি না করতে পরামর্শ দেন তানিয়াকে। তানিয়া বলেন, আকরাম হাসান তাঁকে বলেছেন, অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে, পুলিশই তদন্ত করবে। তাই তিনিই বিষয়টি মীমাংসা করে দেবেন। তিনি অভিযুক্ত ট্রাফিক পুলিশকে ডাকেন। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেন।
আজ এই খবরটি প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছে। এই যদি হয় আমাদের অবস্থা, আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থা তাহলে নারীদের অধিকার কোথায়? বলার সময় তো কেউ কম করে বলে না। সবাই নারী বান্ধব সরকার। অথচ এখন দেশে জয় বাংলা বলে নারী নির্যাতন করা হয়।
শুনেছি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন জয় বাংলা বলে নারী নির্যাতনকারীদের ভিডিও তাদের হাতে এসেছে। কই আমরা তো তার কোন প্রতিফলন দেখতে পাইনি। প্রতিদিনই নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বেশিরভাগ সরকারদলীয় লোকদের দ্বারা হচ্ছে। আমরা আশা করি পুলিশের মাধ্যমে এর প্রতিকার হবে। অথচ পুলিশ প্রশাসনের একজন নয় সবাই মিলেই নারী নির্যাতনে অভ্যস্ত। তারা অভিযোগ নিতে পর্যন্ত রাজি না।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.