ছবিতে তুর্কির গণতন্ত্র উদ্ধারঃ মৃত্যুর পরাজয় কোটি জীবনের স্পন্দনে!
বলা হচ্ছে এটিই এ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ দৃশ্য। গণতন্ত্র রক্ষায় কামানের নলে উন্মুক্ত বুক পেতে দেয়া।
হঠাৎ করেই সেনা অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা হয় তুরস্কে। জানা গেছে, ১৪ জুলাই রাত ৯ টা ৩০ এর দিকে সেনা বাহিনীর একটি অংশ বিভিন্ন শহর ও সরকারী দফতরের নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে। প্রথমেই রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় তারা। প্রচার হয় তুরস্কে অভ্যুত্থানের সংবাদ। সেনা নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া পরিস্থিতি চলে রাত ১২ টা পর্যন্ত। যদিও এ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে খুঁজে পায়নি বিদ্রোহীরা। ১২ টার দিকে তুর্কি সিএনএন এ এরদোগানের একটি লাইভ বার্তা প্রচার হয়। তাকে জনগণকে রাস্তায় নেমে বিদ্রোহ দমনের আহ্বান জানান এরদোগান। এরপর থেকেই মূলত পাল্টা জোয়ার তৈরি হয়। দলে দলে সাধারন মানুষ রাস্তায় নেমে সেনা বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করে। বিশেষত কামাল আতাতুর্ক বিমান বন্দরে জড়ো হয় তারা। এখানে এরদোগানকে প্রথম দেখা যায়। ততক্ষনে সেনা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেছে বিমান বন্দর থেকে। অনেকটাই অবিশ্বাস্য তুর্কি বিপ্লবের ভাইরাল ছবি নিয়ে আজকের ব্লগ-
রাত ৯ টা থেকে সাড়ে ৯ টার মাঝেই সেনা নিয়ন্ত্রণে চলে যায় তুর্কি।
গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সেতু ও রোডে সেনা অবস্থান।
বসফিরাস সেতু। এশিয়া ও ইউরোপকে সংযুক্ত করেছে। সেনা নিয়ন্ত্রণ সেখানে।
সর্বাধিক ভাইরাল ছবিটি। এরদোগান জনতাকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান করছেন রাত ১২ টায়।
দলে দলে এসে মানুষজন রাস্তা দখল করে।
সেনা ট্যাংকের গতি রুখতে নিজেদের প্রাইভেট কারগুলো চাকার সামনে দেয় তুর্কিরা। এরপর শুরু হয় ট্যাংক দখল।
সবচেয়ে সাহসের কাজ! ট্যাংকের সামনে গুচ্ছ গুচ্ছ মানুষের অবস্থান।
ট্যাংকের গতিরোধ করছে জনতার একটি দল।
যে ছবিটি থমকে দিয়েছে বিশ্বের চিন্তা শক্তি!
বিজয়ের ব্যাপকতা ঢেকে দিয়েছে নিহতদেরকে! বহু লোক সেনার গুলি ও ট্যাকের নিচে জীবন দিয়েছে। একজন নারী।
শুধু মাত্র লাঠি হাতে স্বশস্ত্র বিদ্রোহ দমনে রাস্তায় এসেছিলেন এই নারী। ব্যাপক ভাইরাল দৃশ্য।
অভ্যুত্থানের ভেতরেই রাষ্ট্রিয় পতাকা নিয়ে বৃদ্ধ নারী পুরুষের মহড়া।
একজন তরুন সেনার হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নিচ্ছেন একজন বৃদ্ধ।
রক্তমাখা শরীরে জড়ানো তুর্কি পতাকা। একজন মানুষের অভিব্যাক্তি।
জনগণ ও পুলিশ সম্মিলিত ভাবে বিদ্রোহীদের আটক করে নিয়ে যায়। ধৃত এক বিদ্রোহী সদস্য।
এক পর্যায়ে রাষ্ট্রিয় টেলিভিশনকে বিদ্রোহী মুক্ত করা হয়। আটক বিদ্রোহীরা।
পশ্চিমা বিশ্ব ও যুক্তরাষ্ট্র কৌশলী ভূমিকায় ছিলো। তুর্কি প্রতিবাদীরা বিদ্রোহের জন্য আমেরিকাকেও দায়ী করছে। ভাইরাল হওয়া একটি পোস্টার।
ভোরের আলো ফুটে উঠতে শুরু হয়েছে। বিদ্রোহীরা বসফরাস সেতু থেকে আত্মসমর্পন করে।
বিদ্রোহীমুক্ত বসফরাস সেতুতে জনতার দখল
একটি স্টিল পিলারের মাথায় তুর্কি পতাকা বেধে এক ব্যাক্তির অভিব্যাক্তি। স্বশস্ত্র বাহিনীকে নিরস্ত্র জনতার মাধ্যমে পরাজিত করার প্রতিক।
ট্যাংকে উঠে উল্লাশ!
ব্যস্ত রাস্তায় পড়ে আছে বিদ্রোহীদের সরঞ্জাম। পরিত্যাক্ত ট্যাংকের ওপর দুজন তুর্কির অভিব্যাক্তি।
সেলফি জ্বর, যুদ্ধ জয়ে?
বিভিন্ন স্থানে ধৃত বিদ্রোহীদের একত্রিত করে গণধোলাই দেয়া হয়।
দুপুর গড়িয়ে গেছে। পরিত্যাক্ত ট্যাংক ঘিরে মানুষের জটলা।
নিখোঁজ সেনা প্রধানের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের বক্তব্য। সেনা প্রধানকে পাওয়া গেছে।
বিকেলে দেশব্যাপী একে পার্টির সমাবেশ। একটি মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী।
বিকেলের সমাবেশে এসেছেন এরদোগান! যেন এক নয়া তূর্কির নয়া প্রেসিডেন্ট!
সমাবেশে উপস্থিত এক প্রবাসী বাংলাদেশীকে প্রিয় লাল-সবুজের পতাকা হাতে উপস্থিত হতে দেখা যায়।
বিপ্লবের নায়ক এরদোগানের বিরুদ্ধেও কিন্তু গণতন্ত্র ও সংবাদ মাধ্যম দমনের অভিযোগ রয়েছে। তেমন একটি পোস্টার ভাইরাল হয় এ দিন।
অগণতান্ত্রিক বিদ্রোহে সমর্থন দেয়নি কোন দলই। ঐক্যবদ্ধ ছিলো গণতান্ত্রিক ধর্মীয় ও সেকুলার শক্তিগুলো।
তুর্কিদের অন্যতম প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা গুলেনকে দায়ী করা হচ্ছে বিদ্রোহের জন্য।
বিদ্রোহ দমনের পরের রাত! এরদোগানের আহ্বানে রাস্তার দখল ধরে রেখেছেন জনগণ। নতুন বিদ্রোহের আশংকা মুক্ত নন তারা।
বরাবরের মতই আমেরিকা বিরোধী একটি পোস্টার।
মারনাস্ত্র বনাম জীবন! যেন শান্তির দাবিতে স্থায়ী প্রতিক হবার নেশায় মৃত্যু ভুলে নেমে এসেছিলো অপরিচিত বিড়ালটিও!
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
মন্তব্য: ৪ টি
১৭ জুলাই ’১৬ বিকাল ০৫:৩৭
আজকের ব্লগে আবেগ আছে বটে। তবে অনেক সত্যও তুলে এনেছেন। অন্তত এজন্য ধন্যবাদ।