নারীর পিরিয়ড সমস্যা ও আমাদের বিকৃত যৌনাচার-
নারীর পিরিয়ড সমস্যা ও আমাদের বিকৃত যৌনাচার-
বসে আছি টিএসসির সামনের সড়ক দ্বীপে। আমার থেকে কয়েকহাত দূরে বসে আড্ডা দিচ্ছে বাসন্তি শাড়ি পড়া দুইজন মেয়ে, তাদের সাথে চার পাঁচ জন ছেলে। এদের মধ্যে দুইজন সম্ভবত প্রেমিক-প্রেমিকা। আড্ডার এক ফাকে প্রেমিকা মেয়েটি প্রেমিক ছেলেটার কানে কানে কি যেন বলল। সেই ছেলেটা আবার তাদের সাথে থাকা অন্য মেয়েটাকে ডেকে কানে কানে কি যেন বলল। এরপর মেয়েদুটো কি যেন বিষয় নিয়ে কানাকানি করল কিছুক্ষন। কানাকানি শেষে প্রেমিকা মেয়েটা দ্রুত পায়ে হেটে চলে গেল রোকেয়া হলের দিকে।
মেয়েটার চলে যাওয়া দেখা শেষ করে আমি আবার তাকালাম ছেলেগুলোর দিকে যেখানে একটা মেয়েও আছে। প্রেমিক ছেলেটার চোখে মুখে কিঞ্চিত চিন্তা ছাপ, একটু চুপচাপ, বার বার তাকাচ্ছে রোকেয়া হলমুখী। আর বাকী ছেলেগুলোর মধ্যে নতুন একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অবশ্য শুধু আলোচনা বললে ভুল হবে, এক ধরনে যৌন সুরসুরি বিষয়ক আলোচনা। ছেলেগুলো সাথে মেয়েটাও এমন রসিয়ে রসিয়ে কথা বলছিল যে, আমি সহজেই বুঝতে পারলাম কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যেহেতু আমি তাদের থেকে খুব বেশি দূরে বসে ছিলাম না।
বাসন্তী শাড়ি পড়া যে মেয়েটা দ্রুত পায়ে রোকেয়া হলের দিকে চলে গেল, সেই মেয়ের পিরিয়ড শুরু হয়েছে হঠাৎ করেই। যেহেতু হঠাৎ করেই শুরু হয়েছে তাই হয়ত তার সেরকম মানসিক প্রস্তুতি ছিল না যার কারনেও সে নিজেও বিব্রত। এবং পিরিয়ড কালীন ব্যবস্থা নিতেই পা বাড়িয়েছে হলের দিকে। কাওকে কিছু না বলে তো আর বন্ধুদের আড্ডা থেকে হুট করে চলে যেতে পারেনা! তাই হয়ত জানিয়েছে প্রেমিক বন্ধুটিকে আর বান্ধবীকে। কিন্তু মেয়েটা যেই বিশ্বাসে কানাকানি করেছে তার বিশ্বাসের দাম দেয়নি তারই মত বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়া অন্য মেয়েটা। আর এই বিষয় নিয়েই চলছে তুমুল আলোচনা। সবার কথা বলার ধরন আর অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে তারা খুব বড় একটা এবং খুব মজার একটা বিষয় আবিষ্কার করে ফেলেছে। একটা মেয়ের পিরিয়ড হয়েছে! সেকি কম বড় বিষয়? সেকি কম বড় যৌনকামনা উদ্রেককারী ঘটনা! প্রথম দিকে প্রেমিক ছেলেটা কিছুটা চুপচাপ থাকলেও কিছুক্ষন পরে সেও যোগ দিয়েছে আলোচনায়। আহা সে কি আলোচনা!
চলছে আলোচনা! সবচেয়ে বেশি কথা বলছে তাদের সাথে থাকা মেয়েটাই। এত বিশ্রী ভাষায় যে কোন মানুষ, একটা মেয়ের স্বাভাবিক ঘটনাকে রসিয়ে রসিয়ে কিছু বিকৃত মন মানসিকতার পুরুষরুপী কুত্তার সামনে উপস্থাপন করতে পারে এই মেয়েকে না দেখলে বিশ্বাস করতে আমার কষ্ট হত। আর ছেলেগুলো যেভাবে মুখে শব্দ করছিল আর হাত এদিক সেদিক ঘষাঘষি করছিল তাতে মনে হচ্ছিল, কার্তিকমাস চলছে আর কিছু কুকুর রাস্তার পাশে জটলা পাকিয়ে ঘেঊ ঘেউ করছে কোন একটা গেটবদ্ধবাড়ির ভেতর দাঁড়িয়ে থাকা মহিলা কুকুর কে দেখে।
আমি সবচেয়ে অবাক হয়েছি প্রেমিক ছেলেটার আচার আচরন দেখে। এই ছেলেটার তো সারাজীবনের জন্য সেই মেয়েটাকে রক্ষা করার দায়িত্ব নেওয়ার কথা, যেহেতু তারা একে অন্যের সাথে প্রেম করছে। কিন্তু সে তার বন্ধুদের কাছ থেকে তার প্রেমিকাকে রক্ষা করতে পারছে না, সে অন্য মানুষদের হাত থেকে রক্ষা করবে কিভাবে? আর রক্ষা তো দূরে থাক তার মধ্যেও তো একজন ঘুমন্ত বিকৃত যৌন কাঙ্খিত পশু বাস করছে!
আমি একটা ব্যাপারে ভাবছি, ছেলেমেয়েগুলোকে দেখেতো অশিক্ষিত মনে হচ্ছে না, বরং উচ্চশিক্ষিতই মনে হচ্ছে। আমি ভালভাবে খেয়াল করলাম তারা ঢাবির স্টুডেন্ট কিনা। খুব একটা ঠাওর করতে পারলাম না। কারন ইদানিং কিছু আবাল পোলাপাইনও ঢাবিতে ভর্তি হয়। এরই মধ্যেও ছেলেগুলো তাদের পরিচিত আরেকটা মেয়েকে নিয়ে কথা বলা শুরু করল তখন শিউর হলাম তারা আর যাই হোক ঢাবির স্টুডেন্ট না।
আমি একজন রীতিমত ভীতু মানুষ। কাওকে কিছু বলতে সাহস পাইনা। পাছে ঝামেলায় জড়িয়ে পরি। তবুও একটু সাহস নিয়ে ছেলেগুলোর কাছে গিয়ে বললাম, " ভাই আপনাদের বাড়িতে নিশ্চয় কারো বোন নেই? আর যদি থাকেও তাদের নিশ্চয় পিরিয়িড হয় না! পিরিয়ড খুব খারাপ জিনিস। না হওয়াই ভাল। কোন মেয়ের পিরিয়িডের কথা শুনলেই যৌন অনুভূতি লাফ দিয়ে উঠে। ভাগ্যিস ভাই আপনাদের বোনদের পিরিয়ড হয় না!" আমি কথা বলছি এরমধ্যেই সেই বাসন্তী শাড়ি পরা মেয়েটা ফিরে এসেছে। আমি তাকে দেখে শুধু বললাম, " আপু আপনি মেয়ে মানুষ না হয়ে শুধু মানুষ হলে ভাল হত। আর সবচেয়ে ভাল হত যদি মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতেন কুত্তা বাদ দিয়ে।" মেয়েটা সম্ভবত খুব অবাক হয়েছে। কি বলছে এই লোকটা!
আমি হাটছি আমার হলের দিকে। মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে কিছু কথা। আচ্ছা আমার মা ফুফু খালা সবাই তো মেয়ে! তাদেরও তো পিরিয়ডে হয়। শুধু তাদের কেন প্রত্যেকটা মেয়েরই তো হওয়ার কথা। তবে এই ব্যাপারটা কিভাবে এত গোপনীয় ব্যাপার! কিভাবে এটা এত বড় ট্যাবু! কিভাবেই বা এই কথা শুনলে যৌন অনুভূতি তৈরি হয়! একটা মেয়ের সব কিছর মধ্যেই কি পুরুষেরা যৌন অনুভূতি খুঁজে পায়? আর এরা কি সত্যিই পুরুষ? হ্যা এরা পুরুষ, তবে পুরুষ মানুষ নয়, এরা পুরুষ কুত্তা।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
বসে আছি টিএসসির সামনের সড়ক দ্বীপে। আমার থেকে কয়েকহাত দূরে বসে আড্ডা দিচ্ছে বাসন্তি শাড়ি পড়া দুইজন মেয়ে, তাদের সাথে চার পাঁচ জন ছেলে। এদের মধ্যে দুইজন সম্ভবত প্রেমিক-প্রেমিকা। আড্ডার এক ফাকে প্রেমিকা মেয়েটি প্রেমিক ছেলেটার কানে কানে কি যেন বলল। সেই ছেলেটা আবার তাদের সাথে থাকা অন্য মেয়েটাকে ডেকে কানে কানে কি যেন বলল। এরপর মেয়েদুটো কি যেন বিষয় নিয়ে কানাকানি করল কিছুক্ষন। কানাকানি শেষে প্রেমিকা মেয়েটা দ্রুত পায়ে হেটে চলে গেল রোকেয়া হলের দিকে।
মেয়েটার চলে যাওয়া দেখা শেষ করে আমি আবার তাকালাম ছেলেগুলোর দিকে যেখানে একটা মেয়েও আছে। প্রেমিক ছেলেটার চোখে মুখে কিঞ্চিত চিন্তা ছাপ, একটু চুপচাপ, বার বার তাকাচ্ছে রোকেয়া হলমুখী। আর বাকী ছেলেগুলোর মধ্যে নতুন একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অবশ্য শুধু আলোচনা বললে ভুল হবে, এক ধরনে যৌন সুরসুরি বিষয়ক আলোচনা। ছেলেগুলো সাথে মেয়েটাও এমন রসিয়ে রসিয়ে কথা বলছিল যে, আমি সহজেই বুঝতে পারলাম কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যেহেতু আমি তাদের থেকে খুব বেশি দূরে বসে ছিলাম না।
বাসন্তী শাড়ি পড়া যে মেয়েটা দ্রুত পায়ে রোকেয়া হলের দিকে চলে গেল, সেই মেয়ের পিরিয়ড শুরু হয়েছে হঠাৎ করেই। যেহেতু হঠাৎ করেই শুরু হয়েছে তাই হয়ত তার সেরকম মানসিক প্রস্তুতি ছিল না যার কারনেও সে নিজেও বিব্রত। এবং পিরিয়ড কালীন ব্যবস্থা নিতেই পা বাড়িয়েছে হলের দিকে। কাওকে কিছু না বলে তো আর বন্ধুদের আড্ডা থেকে হুট করে চলে যেতে পারেনা! তাই হয়ত জানিয়েছে প্রেমিক বন্ধুটিকে আর বান্ধবীকে। কিন্তু মেয়েটা যেই বিশ্বাসে কানাকানি করেছে তার বিশ্বাসের দাম দেয়নি তারই মত বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়া অন্য মেয়েটা। আর এই বিষয় নিয়েই চলছে তুমুল আলোচনা। সবার কথা বলার ধরন আর অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে তারা খুব বড় একটা এবং খুব মজার একটা বিষয় আবিষ্কার করে ফেলেছে। একটা মেয়ের পিরিয়ড হয়েছে! সেকি কম বড় বিষয়? সেকি কম বড় যৌনকামনা উদ্রেককারী ঘটনা! প্রথম দিকে প্রেমিক ছেলেটা কিছুটা চুপচাপ থাকলেও কিছুক্ষন পরে সেও যোগ দিয়েছে আলোচনায়। আহা সে কি আলোচনা!
চলছে আলোচনা! সবচেয়ে বেশি কথা বলছে তাদের সাথে থাকা মেয়েটাই। এত বিশ্রী ভাষায় যে কোন মানুষ, একটা মেয়ের স্বাভাবিক ঘটনাকে রসিয়ে রসিয়ে কিছু বিকৃত মন মানসিকতার পুরুষরুপী কুত্তার সামনে উপস্থাপন করতে পারে এই মেয়েকে না দেখলে বিশ্বাস করতে আমার কষ্ট হত। আর ছেলেগুলো যেভাবে মুখে শব্দ করছিল আর হাত এদিক সেদিক ঘষাঘষি করছিল তাতে মনে হচ্ছিল, কার্তিকমাস চলছে আর কিছু কুকুর রাস্তার পাশে জটলা পাকিয়ে ঘেঊ ঘেউ করছে কোন একটা গেটবদ্ধবাড়ির ভেতর দাঁড়িয়ে থাকা মহিলা কুকুর কে দেখে।
আমি সবচেয়ে অবাক হয়েছি প্রেমিক ছেলেটার আচার আচরন দেখে। এই ছেলেটার তো সারাজীবনের জন্য সেই মেয়েটাকে রক্ষা করার দায়িত্ব নেওয়ার কথা, যেহেতু তারা একে অন্যের সাথে প্রেম করছে। কিন্তু সে তার বন্ধুদের কাছ থেকে তার প্রেমিকাকে রক্ষা করতে পারছে না, সে অন্য মানুষদের হাত থেকে রক্ষা করবে কিভাবে? আর রক্ষা তো দূরে থাক তার মধ্যেও তো একজন ঘুমন্ত বিকৃত যৌন কাঙ্খিত পশু বাস করছে!
আমি একটা ব্যাপারে ভাবছি, ছেলেমেয়েগুলোকে দেখেতো অশিক্ষিত মনে হচ্ছে না, বরং উচ্চশিক্ষিতই মনে হচ্ছে। আমি ভালভাবে খেয়াল করলাম তারা ঢাবির স্টুডেন্ট কিনা। খুব একটা ঠাওর করতে পারলাম না। কারন ইদানিং কিছু আবাল পোলাপাইনও ঢাবিতে ভর্তি হয়। এরই মধ্যেও ছেলেগুলো তাদের পরিচিত আরেকটা মেয়েকে নিয়ে কথা বলা শুরু করল তখন শিউর হলাম তারা আর যাই হোক ঢাবির স্টুডেন্ট না।
আমি একজন রীতিমত ভীতু মানুষ। কাওকে কিছু বলতে সাহস পাইনা। পাছে ঝামেলায় জড়িয়ে পরি। তবুও একটু সাহস নিয়ে ছেলেগুলোর কাছে গিয়ে বললাম, " ভাই আপনাদের বাড়িতে নিশ্চয় কারো বোন নেই? আর যদি থাকেও তাদের নিশ্চয় পিরিয়িড হয় না! পিরিয়ড খুব খারাপ জিনিস। না হওয়াই ভাল। কোন মেয়ের পিরিয়িডের কথা শুনলেই যৌন অনুভূতি লাফ দিয়ে উঠে। ভাগ্যিস ভাই আপনাদের বোনদের পিরিয়ড হয় না!" আমি কথা বলছি এরমধ্যেই সেই বাসন্তী শাড়ি পরা মেয়েটা ফিরে এসেছে। আমি তাকে দেখে শুধু বললাম, " আপু আপনি মেয়ে মানুষ না হয়ে শুধু মানুষ হলে ভাল হত। আর সবচেয়ে ভাল হত যদি মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতেন কুত্তা বাদ দিয়ে।" মেয়েটা সম্ভবত খুব অবাক হয়েছে। কি বলছে এই লোকটা!
আমি হাটছি আমার হলের দিকে। মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে কিছু কথা। আচ্ছা আমার মা ফুফু খালা সবাই তো মেয়ে! তাদেরও তো পিরিয়ডে হয়। শুধু তাদের কেন প্রত্যেকটা মেয়েরই তো হওয়ার কথা। তবে এই ব্যাপারটা কিভাবে এত গোপনীয় ব্যাপার! কিভাবে এটা এত বড় ট্যাবু! কিভাবেই বা এই কথা শুনলে যৌন অনুভূতি তৈরি হয়! একটা মেয়ের সব কিছর মধ্যেই কি পুরুষেরা যৌন অনুভূতি খুঁজে পায়? আর এরা কি সত্যিই পুরুষ? হ্যা এরা পুরুষ, তবে পুরুষ মানুষ নয়, এরা পুরুষ কুত্তা।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.