যৌথ প্রযোজনায় হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় শীল্প
বড় দেশের আগ্রাসন পৃথিবীতে নতুন না হলেও পার্শ্ববর্তী ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন পরিচালনায় নানা দিক থেকেই নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ সীমানা হিসেবে বাংলাদেশ ভারত সীমানাকে চিহ্নিত করা হয়। আপনি কি ভাবতে পারেন, যে এই বিপজ্জনক সীমানার মাঝে নেই ভারত পাকিস্তান চিরো বৈরি দেশের সীমানাও! অথচ মুক্তিযুদ্ধের সহায়ক দেশটিই নির্দয় ভাবে বাংলাদেশের সীমানায় বাংলাদেশীদের হত্যা করে যাচ্ছে। বড় দেশের অত্যাচারে যোগ করা ভারতীয় নতুন মাত্রার অন্যতম জল আগ্রাসন। জলসীমার আন্তর্জাতিক আইনকে তোয়াক্কা না করে অগণিত বাধ ও ড্যাম নির্মান করে খুবই অমানবিকতা প্রদ্ররশন করছে বাংলাদেশের সাথে। অন্যান্য বছর ভয়াবহ বৃষ্টিপাতের পরেও এবারের বৃষ্টিহীন বর্ষায় তাই ভারতের ছেড়ে দেয়া জলে ভেসে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অনেকেই এই ভয়াবহ বন্যার সাথে কোন তুলনা খুঁজে পাননা।
সাংস্কৃতিক আগ্রাসন নতুন না হলেও ভারত তার সাংস্স্কৃতিক আগ্রাসনে এবার নতুন ধাপে এগোচ্ছে। বেশ কয়েক বার যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নির্মিত হবার ইতিহাস থাকলেও এবার বিশাল বাজেটের দুটি যৌথ সিনেমা নির্মান করেছে ভারত-বাংলাদেশের নামে। সিনেমা অঙ্গনে নায়িকা সংকটের কথা বলে ভারতীয় নায়িকা গ্রহণের পুরনো চল ভেঙ্গে এবার নাটকের মত বিশ্বমানের খাতেও বাংলাদেশে আমদানি হচ্ছে কলকাতার অভিনেত্রী। বাংলাদেশে নিজের যেখানে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও ওয়াল্ডক্লাস নাট্য অভিনেত্রী রয়েছেন সেখানে ভারতের একটি রাজ্য ভিত্তিক নায়িকা যুক্ত করে বাংলাদেশী নাটক নির্মান অবশ্যই বাংলাদেশের ভাব মর্যাদায় আঘাত। সাধারনত যোউথ প্রযোজনার নামে নির্মিত সিনেমা গুলোতে কলকাতার অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের প্রাধান্য দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশের দর্শক সুবিধা পুরোপুরি গ্রহণ করলেও অভিনয়ে বাংলাদেশ বরাবর বঞ্চিত ছিলো। ফলে সিনেমার ব্র্যান্ডিং অংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে ও তাদের সুবিধায় চলেছে। অন্যদিকে নাটকে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও এক্ষেত্রে যৌথ ব্র্যান্ডিং সুবিধা বাংলাদেশের পক্ষে আসার কথা ছিলো। তা হয়নি। কলকাতার সাথে যৌথ নাটক না জমলেও এক অখ্যাত অভিনেত্রীকে মোশাররফ করিমের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে নির্মান করা হচ্ছে নাটক।
জাতিগত পার্থক্য আছে বলেই স্বকীয়তার প্রশ্ন ওঠে। স্বকীয় বিলিয়ে দিলে এবং স্বকীয় অহংকার বিলিয়ে দিলে স্বাধীনতা বোধে আঘাত লাগবে সেটাই স্বাভাবিক।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
মন্তব্য: ২ টি