শিশুকালে যখন বন্ধদের সাথে আড্ডা দিতাম, খেলতাম, ঘুরতাম তখন সবচেয়ে বেশি অসাম্প্রদায়িক সময় পার করেছি। আমার কাছে প্রিয় আমার ধর্ম। সেই ধর্মকে অপমান করে অশ্লীল আনন্দ নেয়ার মানুষ চারপাশে ছিলোনা। বড় হতে হতে বন্ধুদের মাঝে যেসব পরিবর্তন দেখেছি সেগুলোর মাঝে সবচেয়ে বেশি নাড়া দেয় তাদের সাম্প্রদায়িক হয়ে ওঠা। যখন বুঝতে পারলাম এদেশে সংখ্যাগুরু আর লঘু বলে আলাদা টার্ম আছে। যখন বুঝলাম আমার বন্ধুরা আমার মত নয়। বুঝলাম আমি অসহায় ও দূর্বল। তখন থেকেই অনেকটাই আলাদা থাকতে হয়। পূজোর গল্পগুলো, আশীর্বাদের দিন গুলো ভাগ করা বন্ধ হয়। আমি আলাদা হতে থাকি। আরো আলাদা। যখন আপন বিষয়গুলো আপন করা মানুষ কাছে ঘৃণা ও অশ্রদ্ধায় বিষয় তখন দুটির যেকোন একটিকে হালকা করার প্রয়োজন দেখা দেয়। এভাবেই কাছের মানুষ গুলো দূরে যেতে থাকে। সরে যাবার ভিত্তি বিবেচনায় দেশের বিশাল অংশকে এলিট ও অহংকারী মনে হয়। মন একটি অনিশ্চিত ও দূরবর্তী সমাজে বসবাসে কী যাতনা, মাত্রা বোঝা সহজ নয়।

খ,
চারিদিকে কোপ ও চাপাতির আবহাওয়া। যেখানে সংখ্যাগুরু ভিন্ন মতাবলম্বীদের মানবতা স্বীকৃত নয়। নিরাপদ নয়। সেখানে সংখ্যালঘু ভাবনার স্থান নাই। বৈশ্বিক জঙ্গিবাদকে যত্নের সাথে ধর্ম থেকে আলাদা করার উপায় নষ্ট করেছে মুসলিমরাই। জঙ্গিবাদের মূলমন্ত্রই অমুসলিমদের ঘৃণা করা থেকে আগত। সেক্ষেত্রে একদিকে মুসলিমরা অমুসলিম সম্প্রদায় বিশেষত হিন্দুদের ঘৃণার চোখে দেখার সত্যকে অস্বীকার করতে পারেনা। অন্যদিকে এই মনোভাব থেকে আসা জঙ্গিবাদী মন্ত্রকেও অস্বীকার করতে পারেনা। এভাবেই জঙ্গিবাদের স্বর্গ হচ্ছে মুসলিম দেশগুলো ও সেখান থেকে আগত মানুষরা। বাড়ির পাশে পুরোহিতকে হত্যা করাকে যারা ধর্মীয় কাজ স্বাব্যস্ত করে তারাই পশ্চিমা দেশগুলোতে মাইগ্রেশন করে সেখানেও এ কাজ গুলো করে। মুসলিম সমাজে ঘৃণার বিস্তার ঘটে প্রাইমারী লেভেল থেকে। যে ব্যাক্তি যত মাত্রায় ঘৃণা করে সে তত ধার্মিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। আজ আমার দিকে তেড়ে আসা চাপাতির সাথে কিছু শব্দ উচ্চারিত হয়। স্বয়ং ভগবান ও সাথে একটা আরবি শব্দ যুক্ত করে 'আল্লাহু আকবার'! মুসলিমদের নিকট খুবই সম্মানিত শব্দ।

'আল্লাহু আকবার' শব্দটি আপনার কাছে মূল্যবান। আমার কাছে তদ্রুপই বিপদের সংকেত। প্রশ্ন হল, 'আল্লাহু আকবার' শব্দকে ভয় করা, ঘৃণা করা করার অধিকার কি আমার নেই? কিংবা আমার এই ভয় দূর করার পথ কি বাতলে দেবেন আপনি?


ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ