রোজা কি? বাঙ্গালীর রোজা কী?
রোজা নিয়ে কী আর আলাপ করবেন? এইদেশ আজব একটা দেশ। এইখানে যেকোন টপিকস ধরেন, তার দুইতা আলোচনা ভালো জমবে। একটা আলোচনা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিষয়ের প্রকৃত অবস্থা নিয়ে। আর অন্যটা দশীয় প্রেক্ষিতে। আমরা দারুন এক জাতি। বিশ্বের যেকোন ভালো জিনিস আমাদের এইখানে এসে বাঙ্গালীকরন হয়। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যাকে বলে মেড ইন জিঞ্জিরা আর কি!
আরবদের রোজার মানে যদি এই হয় যে শত বছরের শত্রুকে রোজার মাসে হাতে পেয়েও ছেড়ে দেয়া, সেখানে বাঙ্গালীর রোজা হল টেবিলের নিচ দিয়ে ঘুষ গ্রহন করা। রোজার নিদর্শন আর কি! আগে মিথযা বলতে কোন ভাবনা না থাকলেও এই মাসে বাঙ্গালীর মিথ্যা চলে ঘুরায় পেচায়ে। তবু সেটা চলতে হবে। এই বাধ্যবাধকতাই রোজার বাঙ্গালীকরন করেছে।
অনেক ব্যাখ্যা হল। এবার আসি মূল কথায়। রোজা আসলে মানুষের চাহিদা বাড়বে সেটাই স্বাভাবিক। আরব দেশগুলোতে রোজা আসলে ক্রেতাকে রোজাদার বিবেচনা করে পন্যে ছাড় দিয়ে বিক্রি করা হয়। এখানে অন্তত রমজান মাসে ব্যবসাকে আদ্ধাত্মিক দিক থেকে বিবেচনা করা হয়। এমনিতেই ভেজাল নাই সারা বছর। ফলে পণ্যে ছাড় দেয়ার পর ক্রেতারা সত্যিকার অর্থেই উপকৃত হয়। যেহেতু মানুষের চাহিদা বাড়ে সেহেতু ছাড় দিয়ে আরো উপকার করার চেষ্টা রমজানের উপলব্ধি বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে আমাদের দেশে রমজান মানেই মুনাফার পাহাড়। ব্যবসায়ীরা এই মাসটাতে মুনাফা করার জন্যই বোধহয় সারা বছর অপেক্ষা করে। আর রমজানের শেষ দশদিন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ? সেটাও তারা পালন করে। ইদ কে কেন্দ্র করে আরেক দফা আগুন লাগানো হয় বাজারে। ফলে রমজানে লাগানো আগুন আরো চাউড় দিয়ে ওঠে এই সময়। ক্রেতার পকেটে রাখা গলিত বরফ বাজার সুদ্ধ আগুন দমাতে পারেনা। ফলে ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ আগুন মেজাজ নিয়ে বাড়ি ফিরে। এখানে এসে চাওয়া পাওয়ার হিসাব আরেক আগুন। রমজানে কথা কম বলার একটা নির্দেশনা আছে ইসলামে। ঝগড়া বিবাদ এড়িয়ে যাওয়া বিশেষ নির্দেশ। বাঙ্গালীরা এই মাসে ভেজাল যেমন বেশি করে কথাটাও আগ বাড়িয়ে বলে। বাজার থেকে গৃহ পর্যন্ত সেই কথা কথায় ঝগড়ায় ঝগড়ায় ইফতারের সময় হয়।
বাঙ্গালীর রোজা নিয়ে কথা বলতে গেলে তাই অতিরিক্ত বিষয় গুলো যুক্ত হয়ে রোজা হয়ে যায় 'বাঙ্গালীর রোজা'। রবীন্দ্রনাথের আফসোস আজন্ম বয়ে বেড়াবে বুঝি বাঙ্গালী।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
২৮ জুন ’১৬ সন্ধ্যা ০৬:০২
দাদা আলাদা করে বাঙ্গালীর ত্রুটি বাইর না করলেও পারতেন। আমি তো দখতাছি রোজা যাদের জন্য তারা সবাই প্রায় একই রোগে আক্রান্ত। কোন মুসলিম দেশে দূর্নীতি বন্ধ হয়ে গেছে দেখাতে পারবেন? অন্য দিকে ইউরোপ আমেরিকার রোজা দরকার নাই সারা বছর দূর্নীতি মুক্ত থাকে। মানুষ হলেই হয় দাদা। আলাদা করে ধর্মের মোড়ক কী দরকার?
২৮ জুন ’১৬ সন্ধ্যা ০৬:০৫
ভালো বলেছেন। আমরা সত্যিই যদি মুসলমান হতাম। সত্যিই যদি রোজা রাখতাম তাহলে সত্যিই সুখে থাকতে পারতাম।
২৮ জুন ’১৬ সন্ধ্যা ০৬:১০
দাদা সবাই যদি নিজ নিজ ধর্মীয় বিধান সঠিক ভাবে পালন করতো তাহলে সমাজ বসবাসের উপযোগী হয়ে উঠতে সময় নিতো না। দুঃখজনক হল আমরা ধার্মিকও নই ধর্ম্পরায়নও নই। সবই মিথ্যাচার। শ্রষ্ঠার সাথে মিথ্যাচার করার কারনে অশান্তি আরো বেশি হচ্ছে।