সংবাদ পত্রের আজ কালো দিবস
গোয়েবলস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের একান্ত অনুগত হিসেবে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্বটি পান। আর এই দায়িত্ব পাওয়ার পর গোয়েবলস তার কাজে নেমে পড়লেন। তিনি প্রথমেই হিটলারকে বুঝাতে সক্ষম হলেন যে, “ প্রথমেই মানুষের মাঝে কনফিউশন তৈরী করুন। তারপর একটি মিথ্যাকে আপনি ১০ বার প্রচার করুন! বার বার প্রচার করুন! তখন সেই মিথ্যাটাই সত্যের মত শোনাবে”। আর তখন প্রচার মাধ্যম হিসেবে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ছিল রেডিও। কিন্তু সমস্যা হলো, শহরের মানুষ না হয় রেডিও শুনে কিন্তু জার্মানির গ্রাম গুলোতে তখনও তেমন রেডিও পৌছায় নি। তখন হিটলারের সরকার সিদ্ধান্ত নিল, রাস্তার মোড়ে মোড়ে রেডিও সেট করা হবে! চায়ের দোকান রেষ্টুরেন্ট এবং জনপূর্ণ এলাকায় রেডিও সেট করা হবে! সেই রেডিওগুলো শুধুমাত্র হিটলারে ভাষনের সময়েই চালু করা হবে। কিন্তু এতেও সন্তুষ্ট হতে পারেন নি হিটলারের তথ্যমন্ত্রী গোয়েবলস। গোয়েবলস জার্মানির তৎকালীন সবচেয়ে রেডিও কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক করে নতুন একটি রেডিও বাজারে আনার ব্যবস্থা করলেন। সেই রেডিওটির নাম ছিল “Peoples Receiver”। এটি পাওয়া যেত মাত্র ৪০ মার্কে! আর এই রেডিওটির অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য ছিল, এটি নাৎসি চ্যানেল ছাড়া আর কোনটাই শোনা যেত না। বহি:বিশ্বের আর কোন চ্যানেলও এটাতে সযোগ পেত না। আর যার কারণে “Peoples Receiver” এ জার্মানির মানুষ যা শুনতো তাই বিশ্বাস করতো। আর এভাবেই মিথ্যা গুলোকে জার্মানির মানুষের কাছে সত্য হিসেবে প্রচারিত হতে লাগল এবং প্রতিষ্ঠিত হতে লাগল।
গোয়বলস এর সেই তরিকানুসারে আমাদের শেখ মুজিব সাহেব ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন এক অধ্যাদেশ জারি করে চারটি পত্রিকা রেখে বাকি সব পত্রিকা বন্ধ করে দেন। আর সেই চারটি পত্রিকাগুলো হল, দৈনিক বাংলা,বাংলাদেশ অবজারভার,ইত্তেফাক এবং বাংলাদেশ টাইমস।
উল্লেখ্য এর আগে শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ২৫ শে জানুয়ারী সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনী বলে দেশে এক দলীয় শাসন প্রবর্তন করেন এবং ২৫ শে জানুয়ারী এক নায়কের মত নিজেই প্রেসিডেন্ট পদে ৫ বছরের জন্য গদি দখল করেন। ১৯৭৫ সালের ২৫ ফেব্রয়ারী বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামীলীগ (বাকশাল) গঠনের আদেশ জারি করেন। উল্লেখ্য এর আগে ১৯৭৩ সালের ২৯ মে আওয়ামীলীগ, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টি (মস্কো) ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (মস্কো) ত্রিদলীয় ঐক্যজোট গঠন করেছিল। আর এই ঐক্যজোটের প্ররোচনায় শেখ মুজিব বাকশাল গঠন করতে মনস্থির করেন। বাকশাল গঠনের ঘোষনার পর উপরেল্লিখিত এই তিনটি দল বাদে সেই সময়ে নিবন্ধন কৃত বাকি ১৪ টি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়। সেই সাথে শেখ মুজিব ঘোষনা নিজের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে ঘোষণা করেন, ২৫ এপ্রিল ১৯৭৫ এর মধ্যে সকল সংসদ সদস্যকে বাকশালে যোগদান করার জন্য ফরমান জারি করেন। যেসব সদস্যরা বাকশালে যোগদান করবে না, তাদের সংসদ সদস্যপদ বাতিল করা হবে বলে ঘোষনা দেন। আর এভাবেই ধীরে ধীরে শেখ মুজিব গোয়েবলস এর নীতির কাছে নতি স্বীকার করে নেন। নিজের গুনগান প্রচারের নিমিত্তে এবং সরকারের সমালোচনা রোধে তিনি হাজার হাজার সংবাদ কর্মীর পেটে লাত্থি দিয়ে মাত্র চারটি পত্রিকা রেখে বাকি সব পত্রিকা বন্ধ করে দেন। আর এই চারটি পত্রিকার সম্পাদক নিয়োগও শেখ মুজিব কতৃক প্রদান করা হয়।
৭ মার্চ এর ভাষণে শেখ মুজিব গলা উচিয়ে বলেছিল, আমি ক্ষমতা চাই না! আমি বাংলার মানুষের শান্তি চাই। আমি বাংলার মানুষের মুখে খাবার দিতে দেখতে চাই। তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। কিন্তু শেখ সাহেব নিজে ক্ষমতায় বসার পর সেসব কথাকে ফাঁকা বুলি বলে প্রমাণিত করতে একটুও ভুল করলেন না। স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে যেসময় দেশ গোছানোর কথা ছিল! তখন শেখ মুজিব ক্ষমতা স্থায়ী করনে ব্যস্ত ছিলেন। একটি নব্য স্বাধীন দেশকে যখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার কথা ছিল! তখন শেখ মুজিব দেশ প্রধান হিসেবে সারাবিশ্বে পুরষ্কার গ্রহণে ব্যস্ত ছিলেন। যার ফলে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে ঘটেছিল ভয়াবহ দূর্ভিক্ষ! যেসব নতুন একটি দেশের আইন শৃঙ্খলা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করার কথা ছিল তখন শেখ সাহেব বিরোধী দল দমনে ব্যস্ত ছিলেন। যখন নতুন একটি দেশের মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার কথা ছিল তখন তিনি পত্রিকা অফিসগুলো বন্ধ করে দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে বেকার বানিয়ে দিলেন! তাদের মুখের খাবার কেড়ে নিলেন! আর এসবের কারণেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের প্রেক্ষাপট তৈরী হয়ে যায়। এ যেন মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনা বধ’ এর সেই উক্তি, “নিজ-কর্মদোষে,হায়,মজাইলা এ কনক-লঙ্কা রাজা মজিলা আপনি”।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
১৬ জুন ’১৬ রাত ০২:২২
জয় বাংলার দেশে কোন কথা হবে না। দৈনিক সংগ্রাম আর নয়া দিগন্ত এবার বন্ধ হবে !
১৬ জুন ’১৬ বিকাল ০৩:২৪
হা হা হা । ব্লগে মিথ্যাচারের জন্য আপনি বেশ বিখ্যাত। গোয়েবলসের কাহিনী গিলিয়ে গোয়েবলসের মত করেই বঙ্গবন্ধুকে গোয়েবলস সাজালেন। আপনি তো থ্রি স্টার!! যদি পত্রিকা বন্ধ করা মানেই গোয়েবলসের মত মিথ্যা প্রতীষ্ঠার নামান্তর হয় তাহলে সম্ভবত আপনার থিওরি মতে ইরানের খোমেনি নিজেও গোয়েবলসের মত একটা মিথ্যা প্রতীষ্ঠা করেছিলেন। সেটা হল ইসলামী সাম্রাজ্য। খোজ নিলে জানতে পারবেন খোমেনিকে যখন ইরানের মানুষেরা পীরের আসনে বসিয়ে ক্ষমতা দিয়েছিলো তখন তিনি বহু বছর দেশের শিক্ষা প্রতীষ্ঠান গুলো সব বন্ধ করে রেখেছিলেন। তাই, অন্যের বিরোধীতা করে এতটাই অন্ধ হবেন না যে পরিনতিতে এমন সব স্থানে আপনার মিথ্যাচার গিয়ে পড়ে যে তার ব্যাখ্যা আপনার কাছে নেই।
শুধু পত্রিকা বন্ধ করা কিংবা বাকশাল গঠনের দ্বারাই প্রমাণ হয়না যে বঙ্গবন্ধু সঠিক কাজ করেননি। বাকশাল গঠন ও পত্রিকা বন্ধের প্রেক্ষাপটএও নজর দিতে হবে। গুপ্ত হত্যা, মিডিয়া আগ্রাসন, রাষ্ট্রজুড়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি ইত্যাদিকে নিশ্চই সমর্থন করবেন না?
১৬ জুন ’১৬ বিকাল ০৩:৩২
এখনও জামাতী পত্রিকাগুলো চালু আছে। তবুও তো শেখ হাসিনাকেও গোয়েবলস বানিয়ে দিস ছাগু! কী থেকে যে ছাগু হয়????