তমিজ মিয়া,একজন মুচি। দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে সাধারণ থেকে শুরু করে অসাধারণ সকল শ্রেনীর মানুষের জুতো মালিশ করে আসছেন। ও আচ্ছা ,ভুলে গেছি,মাঝে এক বছর বিরতি দিয়েছিলেন। ব্রাশ ও জুতোর কালি ছেড়ে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন,দেশকে পাকিস্থানের জান্তাদের হাত থেকে মুক্ত করবেন বলে। দেশ স্বাধীন হলে আবারো তমিজ মিয়া তার নিজ কর্মে ফিরে যায় মানে মুচিগিরিতে! স্বাধীনতার ৪৬ বছরে কত কিছু বদলালো শুধু বদলায়নি তমিজ চাচার ভাগ্য। দেশ স্বাধীন হল,আইয়ূব গেট হল আসাদ গেট,কত ডোবানালা লেকে পরিণত হল,মাথার উপর দিয়ে রাস্তা হল,কত রাজাকার স্বাধীনতার পাহারাদার হল! ব্যাতিক্রম শুধু তমিজ চাচাদের মত কিছু হতভাগা ছাড়া।

পাশের গ্রামেই আয়োজন চলছে,মুক্তিযোদ্ধাদের পুরস্কার বিতরনের উৎসব। যেটি আয়োজন করেছেেএকটি মাল্টি ন্যাশনাল বহুজাতিক কোম্পানী। তো অন্যন্য মুক্তি যোদ্ধাদের মত তমিজ চাচাও সেখানে নাম এন্ট্রি করেছে।সবার শেষে ডাক আসলো চাচার। বিস্তারিত জানার পরে চাচার হাতে সম্মাননা তুলে দেবার পরে,হঠাৎ তারা চাচাকে জিজ্ঞাস করেন,আচ্ছা তমিজ সাহেব,আপনার সার্টিফিকেট আছে?কিসের সার্টিফিকেট? আরে আপনি যে মুক্তিযোদ্ধা,তার সার্টিফিকেট! নাতো,আমরাতো সার্টিফিকেটের জন্য যুদ্ধ করিনাই। ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে,সাথে সাথে চাচার সম্মানা কেড়ে নিয়ে,ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। চাচা সেদিন চিল্লায়-গলা ফাটিয়ে বলেছিলেন,আর একবার যদি রাইফেলটা হাতে থাকতো তাহলে এই নব্য রাজাকারদের গুলি করে মারতাম,যারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাণিজ্য করছে। ২৬ শে মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর অমর হোক!


ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ