রুপনগরের যুবরাজ, খালেদ খান।
আমার বয়স তখন আট কিংবা দশ! গ্রামের বিনোদনের অন্যতম বললে ভুল হবে,একমাত্র যায়গা ছিল, বাংলাদেশ টেলিভিশন। পাশাপশি ছিল ভিসিআর,সেটাও একবারে নতুন এসেছে। টাকার মাধ্যমে মানে প্রদর্শনীর বিনিময়ে দেখতে হত বলে ভিসিআর সর্বসাধারনের জন্য ছিলনা সমগ্র গ্রাম মিলিয়ে টেলিভিশন ছিল একটা, যেটা ছিল বাজার কমিটির। ফলে যে কোন অনুষ্ঠান চলাকালিন সময়ে যায়গার সংকুলান হতনা। মাসে একটি কিংবা দুটি নাটক হত,যা দেখার জন্য মাস ধরে প্রস্তুতি নিত গ্রামবাসী। কে কার আগে পিড়া বা টুল দিয়ে যায়গা বুকিং দিয়ে রাখতো তার ইয়ত্বা ছিলনা। সন্ধ্যার আগেই সবাই যে যার কাজ শেষ করে ফেলতো শুধু মাত্র টেলিভিশন অনুষ্ঠান দেখার জন্য।এমনি অবস্থাতে শুরু হল ইমদাদুল হক মিলনের“রুপনগর”ধারাবাহিক নাটকটি।
সমগ্র গ্রামে সাড়া পরে গেল নতুন নাটক,রুপনগর এর। সবার মত আমার মধ্যেও আগ্রহ জন্মালো রুপনগর নাটক দেখার জন্য। তখনকার দিনে কে খালেদ খান কে তৌকির আহমেদ আর কেইবা বিপাশা হায়াত এতকিছু জানার আগ্রহ কারো মধ্যে ছিলনা। সবাই চিনতো তিনজন ব্যাক্তি বা অভিনেতাকে,নায়ক-নায়িকা ও ভিলেন কে। আমার অবস্থাটাও অন্যন্যদের মত।নাটকটির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছিল সত্যিই ভয়ংকর,শুনলেই হৃদকম্পন বেড়ে যেত। ভয়ংকর সেই ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের প্রাণভোমড়া ছিলেন অভিনয়ের যুবরাজ খালেদ খান। হৃদয়ে কম্পন উঠানো ড্রাম্পস ও ভূতুরে অবস্থা সৃষ্টিকারী ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক যখন বেজে উঠতো তখন সবাই নড়েচড়ে বসতো,আর ভাবতো এই বুঝি ভিলেন হেলাল আসবে এবং নায়িকার জীবন নাশ করবে!সবার ধারনা কে সত্যি করে ভয়ংকর সেই মিউজিককে ভেদ করে যখন ভিলেন [প্রয়াত খালেদ খাঁন] প্রবেশ করতো এবং কালজয়ী ডায়ালগ,ছি..ছি..ছি..তুমি এত খারাপ! ডেলিভারি দিত,সত্যিই সবাই মানে দর্শকেরা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে বসতো।এই বুঝি,বিপাশা হায়াতকে ধরে ফেলবে!কি অদ্ভুত প্রতিটি পদক্ষেপ,চাহুনী আর ডায়ালগের ধরণ, মনে হত শিকার যেখানেই থাকুক সে ঠিকই বুঝে ফেলে।নায়িকাকে ধরার জন্য রুপনগরে প্রবেশ তার যথার্থ প্রমাণ। রুপনগর নাটকটি দেখার সময় সত্যি করে বলছি বিপাশা হায়াতের প্রতি যতটা ভালোবাসা জন্মেছিল তার চেয়ে বহুগুণ ঘৃণা ও ক্ষোভ জন্মেছিল ভিলেন নামের খালেদ খানের প্রতি। শুধু আমি নই তখনকার সময়ের গ্রামের প্রতিটি মানুষের কাছে ঘৃণা ও ভয়ের পাত্র ছিলেন হেলাল নামের খালেদ খান। আমার বিশ্বাস,নাটক চলাকালিন সময়ে খালেদ খান যদি গ্রামের রুপনগর দেখা মানুষের সামনে পরতেন নিশ্চিত হামলার শিকার হতেন অথবা মহিলারা ভয়ে দ্বিগবিদিক ছুটোছুটি শুরু করতো! এতটাই ভয়ংকর ভিলেন ছিলেন,খালেদ খান।
কিন্তু জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার করতে এসে বুঝলাম,ঐ সময়ের গ্রামের প্রতিটি মানুষের কাছে ভিলেন নামের হেলালকে সহ্য করতে না পারাটাই খালেদ খানের অভিনয়ের কারিশমা! আমার কাছে হেলাল নামের ভিলেন যে,ভয়ের অন্যতম কারন ছিল সেটাই অভিনেতা খালেদ খানের অভিনয় শিল্পের চরম ও পরম সফলতা। অভিনেতা খালেদ খান ছিলেন অল রাউন্ডার।তিনি মঞ্চে দেওয়ান গাজির কিচ্ছা,নুরুল দ্বীনের সারাজীবন,দর্পণ সহ ৩০টিরও বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন। এছাড়া পুতুল খেলা.ক্ষুধিত পাষাণ,রুপবতী সহ প্রায় ১০টির বেশি নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন। রক্তকরবী নাটকে বিশু পাগলের চরিত্রেও তিনি অভিনয় করেছেন। টেলিভিশন ও মঞ্চ সকল ক্ষেত্রেই ছিল খালেদ খানের একচেটিয়া আধিপত্য। কাজেই খালেদ খানকে অভিনয় জগতের যুবরাজ বললেও অত্যুক্তি হবেনা। অভিনয় জগতে খালেদ খানের বিভিন্ন পরিচয় থাকলেও আমার কাছে তার একটাই পরিচয়“রুপনগরের হেলাল নামের যুবরাজ খালেদ খান”। ছি,,ছি,,ছি,,তুমি এতো,খারাপ! এতটা বছর পার হয়ে গেলেও আপনার মুখ নিশ্রিত এই ডায়ালগটি এখনো মানুষের মুখে মুখে । যেখানেই থাকেন,ভালো থাকবেন,শুভ জন্মদিন-খালেদ খান।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
সমগ্র গ্রামে সাড়া পরে গেল নতুন নাটক,রুপনগর এর। সবার মত আমার মধ্যেও আগ্রহ জন্মালো রুপনগর নাটক দেখার জন্য। তখনকার দিনে কে খালেদ খান কে তৌকির আহমেদ আর কেইবা বিপাশা হায়াত এতকিছু জানার আগ্রহ কারো মধ্যে ছিলনা। সবাই চিনতো তিনজন ব্যাক্তি বা অভিনেতাকে,নায়ক-নায়িকা ও ভিলেন কে। আমার অবস্থাটাও অন্যন্যদের মত।নাটকটির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছিল সত্যিই ভয়ংকর,শুনলেই হৃদকম্পন বেড়ে যেত। ভয়ংকর সেই ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের প্রাণভোমড়া ছিলেন অভিনয়ের যুবরাজ খালেদ খান। হৃদয়ে কম্পন উঠানো ড্রাম্পস ও ভূতুরে অবস্থা সৃষ্টিকারী ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক যখন বেজে উঠতো তখন সবাই নড়েচড়ে বসতো,আর ভাবতো এই বুঝি ভিলেন হেলাল আসবে এবং নায়িকার জীবন নাশ করবে!সবার ধারনা কে সত্যি করে ভয়ংকর সেই মিউজিককে ভেদ করে যখন ভিলেন [প্রয়াত খালেদ খাঁন] প্রবেশ করতো এবং কালজয়ী ডায়ালগ,ছি..ছি..ছি..তুমি এত খারাপ! ডেলিভারি দিত,সত্যিই সবাই মানে দর্শকেরা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে বসতো।এই বুঝি,বিপাশা হায়াতকে ধরে ফেলবে!কি অদ্ভুত প্রতিটি পদক্ষেপ,চাহুনী আর ডায়ালগের ধরণ, মনে হত শিকার যেখানেই থাকুক সে ঠিকই বুঝে ফেলে।নায়িকাকে ধরার জন্য রুপনগরে প্রবেশ তার যথার্থ প্রমাণ। রুপনগর নাটকটি দেখার সময় সত্যি করে বলছি বিপাশা হায়াতের প্রতি যতটা ভালোবাসা জন্মেছিল তার চেয়ে বহুগুণ ঘৃণা ও ক্ষোভ জন্মেছিল ভিলেন নামের খালেদ খানের প্রতি। শুধু আমি নই তখনকার সময়ের গ্রামের প্রতিটি মানুষের কাছে ঘৃণা ও ভয়ের পাত্র ছিলেন হেলাল নামের খালেদ খান। আমার বিশ্বাস,নাটক চলাকালিন সময়ে খালেদ খান যদি গ্রামের রুপনগর দেখা মানুষের সামনে পরতেন নিশ্চিত হামলার শিকার হতেন অথবা মহিলারা ভয়ে দ্বিগবিদিক ছুটোছুটি শুরু করতো! এতটাই ভয়ংকর ভিলেন ছিলেন,খালেদ খান।
কিন্তু জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার করতে এসে বুঝলাম,ঐ সময়ের গ্রামের প্রতিটি মানুষের কাছে ভিলেন নামের হেলালকে সহ্য করতে না পারাটাই খালেদ খানের অভিনয়ের কারিশমা! আমার কাছে হেলাল নামের ভিলেন যে,ভয়ের অন্যতম কারন ছিল সেটাই অভিনেতা খালেদ খানের অভিনয় শিল্পের চরম ও পরম সফলতা। অভিনেতা খালেদ খান ছিলেন অল রাউন্ডার।তিনি মঞ্চে দেওয়ান গাজির কিচ্ছা,নুরুল দ্বীনের সারাজীবন,দর্পণ সহ ৩০টিরও বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন। এছাড়া পুতুল খেলা.ক্ষুধিত পাষাণ,রুপবতী সহ প্রায় ১০টির বেশি নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন। রক্তকরবী নাটকে বিশু পাগলের চরিত্রেও তিনি অভিনয় করেছেন। টেলিভিশন ও মঞ্চ সকল ক্ষেত্রেই ছিল খালেদ খানের একচেটিয়া আধিপত্য। কাজেই খালেদ খানকে অভিনয় জগতের যুবরাজ বললেও অত্যুক্তি হবেনা। অভিনয় জগতে খালেদ খানের বিভিন্ন পরিচয় থাকলেও আমার কাছে তার একটাই পরিচয়“রুপনগরের হেলাল নামের যুবরাজ খালেদ খান”। ছি,,ছি,,ছি,,তুমি এতো,খারাপ! এতটা বছর পার হয়ে গেলেও আপনার মুখ নিশ্রিত এই ডায়ালগটি এখনো মানুষের মুখে মুখে । যেখানেই থাকেন,ভালো থাকবেন,শুভ জন্মদিন-খালেদ খান।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
মন্তব্য: ৪ টি
০৯ ফেব্রুয়ারি ’১৬ সন্ধ্যা ০৭:১৪
আবারো মনে পড়ে গেল বিখ্যাত অভিনেতার কথা!ছি,,ছি,,ছি,,তুমি এতো খারাপ