বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসায় সিক্ত কবি আজ নিগৃহিত!
কবি আলমুদ মনে করেন,শিল্প-সাহিত্যের বিকাশের জন্য রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা দরকার রয়েছে কিন্তু মনে রাখতে হবে এটা করতে গিয়ে যেন রাজনীতির মধ্যে শিল্প-সাহিত্য বিলীন হয়ে না যায়,যা শিল্পের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর!তিনি কোন রাজনৈতিক দলের শুভাকংখী তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও তার কবিতা ছিল সার্বজনীন,এটা নিয়ে কারও মধ্যে ব্যাক্তিগত ভাবে কোন দ্বিমত লক্ষ্য করা যায়নী।যার দরুন সমসাময়ীক সরকার প্রধানদের সাথে কবির ছিল দারুন সম্পর্ক।বিশেষ করে জাতির জনক শেখ মুজিবের সাথে আল মাহমুদের সম্পর্ক ছিল খুবই অম্লমধুর।কবির ভাষ্যমতে,ব্যাক্তিগত ভাবে শেখ মুজিবুর রহমান আমার প্রতি ছিলেন অনেক সফট।কেন?প্রশ্নের উত্তরে কবির জবাব“
আমি সরাসরিই বলি।আমি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছি ছয়দফা দাবীর আবেগে এবং বাঙ্গালী জাতী সত্বার সমর্থনে।তখন থেকেই শেখ সাহেবের সাথে আমার একটা সম্পর্ক ছিল।পরবর্তী সময়ে যখন গণকন্ঠে যোগ দেই তখন থেকে সন্দেহের চোখে দেখতে থাকেন।ব্যাক্তিগত ভাবে যদিও তিনি আমার প্রতি সফট ছিলেন কিন্তু তবুও তার সরকার প্রায় একবছর আমাকে জেল খাটিয়েছেন। কিন্তু একটা কথা স্বিকার করতেই হবে,জেলখানা থেকে বের হওয়া মাত্র তিনি আমাকে খবর দিয়ে নিয়ে গেছেন।আমি জেলখানা থেকে বেরিয়ে শুধু রাতটা কাটিয়েছি,সকালবেলা আমার বাড়িতে টেলিফোন আসে। ওনার সেক্রেটারী ফোন করে বলেছেন,শেখ সাহেব আপনার জন্য অপেক্ষা করছে,আমি যেন সেখানে চলে যাই। আমি গিয়েছি,তিনি আমাকে চাকরীর অফার দিয়েছেন।আমি তাকে বলেছি আমি আমার পেশায় মানে সাংবাদিকতায় থাকতে চাই। কিন্তু তিনি সেটা করতে দেননী,আমাকে শিল্পকলা একাডেমীতে যোগদান করতে বলেন। আমি অনেক চিন্তা করে তার কথা রাখতে সেটা করেছি। আমার মত একজন কবিকে তিনি সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ দিলেন,এটা আমার কাছে অদ্ভুত লাগে। আমি মনে করি,এটা একটা ঋণই বটে”।
কবি আল মাহমুদের দৃষ্টিতে শেখ মুজিব কেমন ছিল,এমন প্রশ্নের জবাবে সোনালী কাবিনের স্রষ্ট্রা বলেন,
আমি কখনো ভূলিনী শেখ সাহেবের কি ভূমিকা ছিল?আমার জানামতে,তৎকালীন সময়ের চিত্রে শেখ মুজিবের যে ইমেজ ছিল,সে ইমেজটাই আমি ধারন করি। এই যে, পাকিস্থান ভেঙ্গে গেল এবং এই যে টানাপেড়েন,এর উপর একটা উপন্যাস লিখেছি। ওই উপন্যাসে[কাবিলের বোন] শেখ মুজিবের ছবিটা খুব কম,দু-একবার প্রস্ফুটিত হয়েছে কিন্তু সেখানে আমি তাকে এমন মরযাদা দিয়েছি,আমি মনে করি ইতিহাস যদি সমকালীন উপন্যাস অনুসন্ধান করে,তাহলে সেখানে শেখ মুজিবের আসল চরীত্রটি দেখো যাবে।একটা ছায়ার মত এসে [মুজিব] উপস্থিত হবে।
যে কবিকে এত ভালোবাসতেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,যে কবিকে জোর করে শিল্পকলায় নিয়োগ করেছিলেন স্বাধীনতার স্থপতি সেই কবি আল মাহমুদ বিছানায় ধুকে ধুকে মরছে! যে কবির বক্ষপটে চিত্রিত থাকে স্বাধীনতার নায়ক শেখ মুজিবের ইমেজ,বঙ্গবন্ধুর ছয়দফার আবেগে পড়ে যে কবি ঝাপিয়ে পড়েছিলেন স্বাধীকারের আন্দোলনে সেই কবি আজ মৃত্যুর সাখে লড়ছে! অথচ রাষ্ট্রের কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা। এ যে বড় বেমানান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আপনার বাবা যাকে বুকে তুলে নিয়েছিলেন কার কথায় আপনি তাকে নিগৃহিত করছেন রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা থেকে।যতটুকু জানি, কোন কান কথায় আপনি বিশ্বাস করেননা। আপনার হৃদয়, জাতির জনকের মতই বিশাল।শিল্প সাহিত্যের জন্য আপনার সরকার যে কোন সরকারের চাইতে উদার হস্ত।তাহলে কেন এখনো নীরবতা?মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার প্রতি বিনীত অনুরোধ,ব্যাকি্ত আল মাহমুদ নয় কবি আল মাহমুদকে বাঁচানোর জন্য আপনার হাত প্রশস্ত করুন।তাতে আশা করছি আপনার সম্মান ও গ্রহনযোগ্যতা আরো বাড়বে সর্বমহলে।
১৯৫৪ সালের শীতের সকালে যে,যুবকটি রাবারের স্যান্ডেল পায়ে টিনের স্যুটকেস নিয়ে পদার্পণ করেছিলেন ঢাকায় কেবলই কবিতাকে অবলম্বন করে,সে আজ বার্ধক্যে ন্যুয়ে পড়া এক জ্ঞানবৃদ্ধ,যে মৃত্যুর সাথে পান্জা লড়ছে। জীবনের কতকিছুকে তিনি পেছনে ফেলে এসেছেন,কতকিছু তাকে ফেলে রেখে চলে গেছে। কিন্তু কবিতাকে তিনি যেমন ফেলে দেননি তেমনি কবিতাও তাকে ফেলে দেয়নী। আশা করছি রাষ্ট্রের সম্মান থেকে আপনিও তাকে নিরাশ করবেন না,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
২০ জানুয়ারি ’১৬ বিকাল ০৩:০৪
বাপের প্রিয় ভাজনদের সবাইকে শেখ হাসিনা সম্মান জানিয়েছেন,আশা করছি আল মাহমুদের বেলাতেও এর ব্যাত্যায় ঘটবেনা।
২০ জানুয়ারি ’১৬ বিকাল ০৩:০৭
“গাংয়ের ঢেউয়ের মত কন্যা বল,কবুল..কবুল..কবুল”কি প্রেম ও ছন্দরে ভাই!আমারও আশা রাষ্ট্র তাকে নিগৃহিত করবেনা
২০ জানুয়ারি ’১৬ সন্ধ্যা ০৭:৩৪
এই বিখ্যাত কবির সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের নিকট দাবি জানাই।
২০ জানুয়ারি ’১৬ রাত ১০:১৭
বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের মানুষ ধর্মের ব্যাপারে উদার। কিন্তু ধর্মাব্ধতাকে কোনদিনই সহ্য করে নি। আল মাহমুদের সাহিত্যমর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু তার অবস্থানের ব্যাপারে প্রশ্ন তোলার অধিকার আমার আছে।
২৩ জানুয়ারি ’১৬ বিকাল ০৩:৪২
অবশ্যই আছে,আমি আমার লেখার ভিতরেও বলেছি যে,ব্যাক্তি আল মাহমুদ নয় কবি আল মাহমুদের পাশে দাড়াতে রাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছি