বাংলা প্রগতিশীল ভাবনা জগতে সামান্য চাষী আরজ আলী মাতুব্বর অসামান্য এক ব্যাক্তিত্ব! তাঁর চিন্তার জগত ঘিরে বাংলা প্রগতিশীলতার আবর্তন হয়েছে আরো সমৃদ্ধ। মজার ব্যাপার হল আরজ আলী মাতুব্বরকে প্রগতিশীল হতে শিখিয়ে গেছেন তাঁর ধর্মভীরু মা এবং ধর্মীয় সমাজ!

আরজ আলী মাতুব্বরের মা আরো দশজন মায়ের মতই আরজ আলীকে জীবনভর স্নেহের আলিঙ্গনে আবদ্ধ করেছিলেন। সাথে, সেই মায়ের নামাজের দৃশ্যও আরজ আলীকে আলিঙ্গন করত। বলতে পারেন আরজ আলীর দৃষ্টিতে দেখা ওই নামাজ আরজ আলীকে সত্যিই স্নেহ করত। আরজ আলীও মায়ের মতন করেই মায়ের আদর্শ ও আবেগকে ভালোবাসতেন।

আপনি কি জানেন, মৃত্যুর পর ঐ মায়ের জানাজার নামাজ পড়তে অস্বীকার করেছিলো সমাজের ধার্মিকেরা? আরজ আলী মাতুব্বরের মা প্রতিদিন পাঁচবার অজু করে রুকু-সেজদা করে নামাজ পড়লেও তার মৃত্যুর দাবি মাত্র এক রাকাত নামাজ পড়া হয়নি!

আরজ আলী মাতুব্বর তার সমাজের গোড়ামী, ধর্মান্ধতা নিয়ে জীবনমূখী চিন্তায় ডুব দিতে তো বাধ্যই হলেন!

যখন অনেক সহযোদ্ধা সমাজে ধর্মান্ধদের বাড়ন্ত অবস্থায় আশাহত হন, আমি তখন আরজ আলীদের খুব করে খুঁজি! আমি জানি বাংলার চাষীদের মাঝে আর শ্রমিকের মাঝে লাখ লাখ আরজ আলী মাতুব্বরেরা ঘুমিয়ে আছে।

মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে ললনা গার্মেন্টসের টাকায় সংসার চালিয়ে মৃত মা-বাবার জন্য হুজুর ডেকে মিলাদ পড়ান। বিনিময়ে 'হেজাবছাড়া' ইনকামের ময়লা নোট পরিস্কার হাতের ছোয়ায় হুজুরেরই পকেটে ঢুকে! -তখন সেই ললনার মনে একবারও কী ঘৃণারা এসে ভিড় করে না?

আবেগ ও অন্ধ বিশ্বাস কতক্ষণ খাটে?

জীবন মুখে চলতে গিয়েই তো হেজাবছাড়া গালাগাল খেতে হয়, উঠতে বসতে! যারা গাল দেয়, ওই মুখেই হেজাবছাড়া লোকমা পুরে দেয়!

জীবন ও অন্ধত্ব পুরোপুরি আলাদা। কেউ কারো সাথে টিকতে পারেনা।

চোখ খুলে দেখ ওহে সহযোদ্ধারা! তোমাদের দিকে জীবনের শক্তি। আর ওদের দিকে অন্ধত্ব। ভয়কে জয় করবে এসময়ের সামান্য আরজ আলী মাতুব্বরেরা! এরা হয়ে উঠবে একেকটি শক্তিশালী জীবনমূখী বিপ্লবী। প্রগতি আসবে জীবনের হাত ছুয়ে! মোল্লারা সেই পথকেই আরো বেগবান করবে।


ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ