নারী নির্যাতন বাড়ছেই...!!
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে মোট ৩ হাজার ৩৩৬ জন নারী ও কন্যাশিশু নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ৭৫৫ জন। এর মধ্যে ৫৯৭ জন শুধু ধর্ষণ এবং ১৫৮ জন নারী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। তা ছাড়া ধর্ষণ-চেষ্টার শিকার হয়েছেন মোট ১১১ জন নারী ও কন্যাশিশু।
ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন মোট ৭১ জন এবং স্বামীর বাড়িতে যৌতুকের কারণে হত্যার শিকার হয়েছেন ১৬১ জন নারী। এ ছাড়া আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের, রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ১১০ জনের এবং বিভিন্ন কারণে হত্যার শিকার হয়েছেন আরো ৫০০ নারী।
একই সঙ্গে বাসা-বাড়িতে কাজ (গৃহকর্মী) করতে গিয়ে হত্যার শিকার হয়েছেন ২৮ জন। সব মিলিয়ে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মোট ৮৮৭ জন নারী হত্যার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৩৬ জন নারীকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জানায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
প্রেম প্রত্যাখ্যান ও অন্যান্য কারণে অ্যাসিডদগ্ধ হয়েছেন ২৯ জন নারী। এ ছাড়া অগ্নিদগ্ধ হয়েছে আরো ২৮ জন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম বলেন, ‘গ্যাং রেপ (গণধর্ষণ) হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। এ বছর মোট নির্যাতিতের মধ্যে ৭৮ শতাংশ নারী নিজের ঘরে আপনজনদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ব্রুটাল টর্চারের (পাশবিক নির্যাতন) মাত্রাও বেড়ে গেছে অনেক।’
সেই তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬৫ জন নারী অপহরণের শিকার হয়েছেন। ৪৬ জনের ক্ষেত্রে পাচারের ঘটনা ঘটেছে এবং ১৫ জনকে পতিতালয়ে বিক্রি করা হয়েছে।
এ ছাড়া উক্ত সময়ে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন ৭৯ জন নারী। যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২৭ জন নারী। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২২২ জন, প্রেম প্রত্যাখানের জন্য নির্যাতিত হয়েছেন ৬ জন, উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন ২৯৩ জন, ফতোয়ার কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২৭ জন, পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩৫ জন, যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৪১ জন, বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছেন ৬৭ জন, জোরপূর্বক বিয়ের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫ জন এবং অন্যান্য কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আরো ১৫৭ জন নারী ও কন্যাশিশু।
অপরদিকে নির্যাতন বা লাঞ্ছনার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন মোট ২৩১ জন নারী। আত্মহত্যা-চেষ্টা করেছেন ১০ জন এবং আত্মহত্যার প্ররোচণার শিকার হয়েছেন আরো ৭ নারী।
সরকার, প্রসাশন, সুশীল সমাজ, মানবাধিকার সংগঠন কিংবা নারীবাদী সংগঠনগুলোর একক কিংবা সম্মিলিত উদ্যোগের পরও দেশে নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন বেড়ে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্যপারটা সত্যি উদ্বেগের বিষয়। প্রত্যেকের স্ব স্ব স্থান থেকে সচেতন হওয়াটাই পারে এই সমস্যার সমাধান করতে।
প্রয়োজন পরিবার কর্তৃক সন্তানের প্রতি লক্ষ রাখা, তাদের সকল চাহিদা পূরন করা, সামাজিক সচেতনতা, মিডিয়ার মাধ্যমে জনগনকে সচেতন করা, সরকারি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা এবং দোষীদের উপযুক্ত শাস্থির আওতায় আনা।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
মন্তব্য: ৯ টি
২২ ডিসেম্বর ’১৫ বিকাল ০৫:০৬
নারী মুক্তি নিয়ে আমরা আসলেই সচেতন হতে পারিনি। আমাদের আশেপাশেই এসব ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে। নারীমুক্তিতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নাই।
২২ ডিসেম্বর ’১৫ বিকাল ০৫:৫৪
এইসব নির্যাতন মৌলবাদের ফসল। এদের রুখে দাঁড়াতে না পারলে আমরা আরো অন্ধকারের দিকে চলে যাব।