অবশেষে মোহাম্মদপুরের মাদ্রাসা মামুনুলদের দখলমুক্ত হচ্ছে
মোহাম্মদপুরের জামি'আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা ছেড়ে দিয়েছেন মাদ্রাসাটির মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হক। আজকে সকাল পৌনে ৯টার দিকে তিনি উপস্থিত শিক্ষক-ছাত্রদের নিয়ে মাদ্রাসার মূল ফটকে তালা দিয়ে বেরিয়ে যান। পরে মাদ্রাসার চাবি সরকার স্বীকৃত ইসলামি শিক্ষা বোর্ড আল হাইআতুল উলয়ার চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসানের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে মাদ্রাসা থেকে ফেসবুক লাইভে আসেন মাওলানা মাহফুজুল হক। মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিভিন্নভাবে কথা আসছে- আমাদের এ প্রতিষ্ঠান ছাড়তে হবে, এ ভবন আমাদের ছাড়তে হবে। আমরা লক্ষ্য করছিলাম, কাছে নিয়মতান্ত্রিকভাবে কোনও নোটিশ আসেনি। আমাদের দেশের শীর্ষ আলেমরা এ বিষয়টি নিয়ে কোনও পরামর্শও করছেন না।
দেশের প্রসিদ্ধ কওমি মাদ্রাসাগুলোর একটি মোহাম্মদপুরের জামি’আ রাহমানিয়া আরাবিয়া। ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ মাদ্রাসাটি ওয়াকফ প্রশাসনে নিবন্ধিত। ওয়াকফ সম্পত্তিতে গড়ে ওঠা এই মাদ্রাসাটি ২০০১ সালে নিয়ন্ত্রণে নেয় হেফাজত নেতা মাহফুজুল হক, মামুনুল হকের পরিবার। সেই সময় থেকে মাদ্রাসাটির পরিচালনার দায়িত্ব ফিরে পেতে আইনি লড়াই চালিয়ে যায় ওয়াকফ অ্যাস্টেট পরিচালনা কমিটি। আদালতের রায়, ওয়াকফ প্রশাসনের আদেশ থাকার পরও অদৃশ্য কারণে ব্যর্থ হন তারা।
সম্প্রতি হেফাজেতের তাণ্ডব ও মামুনুল হকের রিসোর্ট কাণ্ডের পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। মাদ্রাসা ভবন ওয়াকফ প্রশাসনের অনুমোদিত কমিটির কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য মাদ্রাসাটির বর্তমান মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হককে ‘চাপ দেওয়া হয়’।
এদিকে গতকাল রবিবার (১৮ জুলাই) আল হাইআতুল উলয়ার চেয়ারম্যান ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার সভাপতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মুফতি রুহুল আমিন, হেফাজত মহাসচিব নূরুল ইসলাম জেহাদী, মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, মুফতি এনামুল হকসহ কয়েকজন এ বিষয়ে পরামর্শ করেছেন বলেও জানান মাহফুজুল হক। তিনি বলেন, আমরা জেনেছি তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মন্ত্রী তাদের আশ্বাসও দিয়েছেন। এতে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি, দীর্ঘদিন ধরের চলে আসা এই অবস্থার একটি চূড়ান্ত পরিণতির দিকে যাবে।
মাহফুজুল হক আরও বলেন, শীর্ষ আলেমদের পরামর্শের পর আমরাও মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়ে পরামর্শ করেছি। দুপুরে (রবিবার) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আমাদের কাছে বার্তা আসে, আমরা যেন মাদ্রাসার চাবি আল হাইআতুল উলয়ার চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসানে কাছে বুঝিয়ে দেই।
চলমান অবস্থার অবসান হওয়া দরকার উল্লেখ করে তিনি জানান, ইতোমধ্যে আমাদের উপস্থিত শিক্ষক ও ছাত্ররা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আশপাশে চলে যাচ্ছেন। আমরা অল্প সময়ের মধ্যে মাদ্রাসার সকল গেটে তালা দিয়ে শীর্ষ আলেমদের কাছে চাবি হস্তান্তর করবো।
মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের অধৈর্য না হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে মাদ্রাসা ভবনটির দাবিদার জামিআ রাহমানিয়া আরাবিয়া সাত মসজিদ মাদ্রাসা ওয়াকফ এস্টেট অনুমোদিত কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, আজ সোমবার ম্যাজেস্ট্রেটের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযান হওয়ার কথা ছিলো। তারা (মাওলানা মাহফুজুল হক) আগেই মাদ্রাসা ছেড়ে চলে গেছেন। তারা চাবি মাওলানা মাহদুমুদল হাসানের কাছে হস্তান্তর করবেন। এখন আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করছি, আশা করছি মাদ্রাসার ভবনটি কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.