কেন ঐক্যফ্রন্ট থেকে বাদ পড়লেন বি চৌধুরী এন্ড সন্স?
শেষ পর্যন্ত জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়ছেন বিকল্পধারার সভাপতি বি চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক জোট গঠনের শুরু থেকেই এই দু’জনকে নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। তাই গত কয়েকদিন ধরেই দলটির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া অন্য দলগুলো।
গত কয়েকদিন ধরে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কোনোও আয়োজনেই বিকল্পধারার সভাপতি বি চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরীকে দেখা যাচ্ছে না। গত রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে ড. কামাল অংশ নিলেও, দেখা যায়নি বিকল্পধারার প্রধানকে।
সেদিন রাতেই আবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসার জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, যুক্তফ্রন্ট ও বিএনপি নেতাদের বৈঠকে টেলিফোনে যোগ দিয়েছেন ড. কামাল। কিন্তু সেখানেও বিকল্পধারা অনুপস্থিত।
এখানেই শেষ নয়। গত সোমবার উত্তরায় জেসিডি নেতা আ স ম আব্দুর রবের বাসায় জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে আরও এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু লক্ষ্যণীয় হলো, এই উদ্যোগের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরী একেবারেই নীরব। যদিও দলটির প্রধান হিসেবে বি. চৌধুরীরই সকল বৈঠকে দলটির প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেওয়ার কথা।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারেরবিরোধী জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আন্দোলনে ড. বি চৌধুরী ও মাহী বি চৌধুরী থাকছেন কি না— জানতে চাইলে গণফোরাম নেতা ও জাতীয় ঐক্য প্রকিয়ার লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জগলুল আফরিদ বলেন, এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না।
কিছুক্ষণ আগে হওয়া সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সম্মিলিত সাত দফা ঘোষণা আসে। এতে ছিলেন না বি চৌধুরী বা তার দলের কেউ।
আজ বেলা সাড়ে ৩টায় বি চৌধুরী ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় যান। কিন্তু এ সময় ড. কামাল বাসায় ছিলেন না। সেখানে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করে ড. কামালের বাসা থেকে ফিরে যান বি. চৌধুরী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মাহী বি. চৌধুরীও। পরে মাহী বি. চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, কারা জাতীয় ঐক্য চায়, আর কারা চায় না- সেটা পরিষ্কার হয়ে গেছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার একাধিক নেতা বলেন, ব্যারিস্টার মঈনুল ইসলাম ও ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ একাধিক শুভাকাঙ্খী এই আন্দোলন প্রক্রিয়ায় বিকল্পধারা সভাপতি বি. চৌধুরী ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরীকে না রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। তাদের দাবি, এই দু’জন ভিন্ন কৌশলে চলছেন।
ধারণা করা হচ্ছে এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে জামায়াত। বি চৌধুরী ও মাহি বি চৌধুরী বিএনপিকে বার বার চাপ দিতে থাকে বিএনপি-জামায়াত জোট ভাঙার জন্য। তাই জামায়াত বি চৌধুরী কে বাদ দেয়ার ক্ষেত্রে কলকাঠি নেড়েছে।
সর্বশেষ বি চৌধুরীর বাসায় হওয়া ঐক্য প্রক্রিয়ার একটি বৈঠক বিকল্প ধারাকে বাদ দেয়ার ক্ষেত্রে ভালো ভূমিকা রাখে। বৈঠক চলাকালে মাহির কাছে একটি ফোন আসে। সেখান থেকে জানা যায়। এই মিটিং এ থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের একটি ফোন লন্ডনে কানেক্টেড। তখন মাহি সবার ফোন জমা দিতে বলে। সবাই ফোন জমা দেয় কিন্তু একই সাথে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে।
বিকল্প ধারার সাথে সরকারের সম্পর্ক রয়েছে। নইলে ফোনে লন্ডনের খবর কে দিল? আড়ি পাতার ক্ষমতা তো সরকার ছাড়া আর কারো কেউ নেই। বিকল্পের হম্বি-তম্বি ও সর্বশেষ ঘটনা ও জামায়াতের ভূমিকা সব মিলে বাদ পড়েছে বি চৌধুরী এন্ড সন্স।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.