কেন ছাত্রদের ভয় পাচ্ছে সরকার?
প্রেসক্লাবে ১২ নিখোঁজ ছাত্রের পরিবার
সরকারবিরোধী জোট করে ড কামাল হোসেন আর বদরুদ্দোজা চৌধুরি। আর সরকার ক্ষেপে আছে ছাত্রদের উপর। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪০ জন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মধ্যে ১২ জনকে এখনো আটকে রেখেছে ডিবি। তার কোন খোঁজ দিতেই রাজি না। রাজধানীতে টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২ ছাত্রকে গ্রেপ্তারের ৪ দিন পরও অস্বীকার ও আদালতে হাজির না করায় উদ্ধেগ প্রকাশ এবং অবিলম্বে তাদের সন্ধান দাবী করেছে গ্রেফতারকৃত ছাত্রদের পরিবারবৃন্দ।
গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে বহু ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্য ডিবি কার্যালয় থেকে অনেককে ছেড়ে দিলেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১২ জন ছাত্রকে ৪ দিন পরও এখনো আটক রেখেছে। যারা অনেকেই রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র।
তাদের মধ্যে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্র মেহেদী হাসান রাজিব, ইফতেখার আলম রুবেল, রায়হানুল আবেদীন জুয়েল, তারেক আজিজ, সজিব, মো: জহিরুল ইসলাম হাসিব, ইফতেখার আলম, রায়হানুল আবেদীন জুয়েল, তারেক আজিজ, বোরহান উদ্দিন, মুজাহিদুল ইসলাম, মাহফুজ আহমেদ, মেহেদী হাসান রাজিব, সরকারী তিতুমীর কলেজের ছাত্র সজিব, জাহাঙ্গীর আলম, সরকারী সাদাত কলেজের ছাত্র সাইফুল্লাহ বিন মানসুর, ভার্সিটি ভর্তিচ্ছু জহিরুল ইসলাম হাসিব ও আল আমিন।
নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও তাদের আদালতে হাজির করা হয়নি। অথচ শুক্রবার তাদের ব্যপারে ডিবি কার্যালয়ে অভিভাবকরা যোগাযোগ করলে তারা জানায় শনিবার তাদের আদালতে হাজির করা হবে। কিন্তু এদিন ছাত্রদেরকে আদালতে হাজির করা হয়নি। পুলিশ কর্মকর্তারা কখনো আশ্বাস দিচ্ছেন আবার কখনো গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করছেন। যা পরিবারের উদ্বেগকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।
গ্রেফতারকৃত মুজাহিদুল ইসলামের পিতা মাহবুবুল আলম বলেন, আমার সন্তানকে গ্রেপ্তারের পর অস্বীকার, দেখা করতে না দেয়া এবং আদালতে হাজির না করা প্রচলিত আইনে বেআইনি। এমনকি উচ্চ আদালতের নির্দেশেরও সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। যা অস্বাভাবিক বিষয়। আমি আমার সন্তানকে নিয়ে শঙ্কিত।
গ্রেফতারকৃত জহিরুল ইসলাম হাসিবের পিতা একজন শিক্ষক। তিনি সন্তানের গ্রেফতারের কথা শুনেই ঢাকা আসেন। তিনি বলেন, আমার সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোচিং করার জন্য ঢাকায় এসে মেসে উঠে। কোন রাজনীতির সাথে জড়িত না। সারাদিন ডিবির কার্যালয়ে ঘুরাঘুরি করার পরও সন্তানের কোন খোঁজ পাইনি।
অভিভাবকরা জানান, যাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমাদের সন্তানদেরকে ডিবি কার্যালয় রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সকল আইনি সুবিধা গ্রহণ করার অধিকার আমাদের আছে; কিন্তু এখানে আইনি অধিকার থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। আমরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে আমার সন্তানদের নিরাপত্তা দাবি করছি।
আজ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা অভিভাবকরা জানায়। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো কোটা আন্দোলন বা নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন দুইটার কোনটাই সরকার বিরোধী আন্দোলন নয়। কিন্তু তারপরও কেন সরকার এতটা ভয় পাচ্ছে ছাত্রদেরকে।
আসলে মূল কথা অন্য জায়গায়। ২০১৩ সালে ও ২০১৫ সালে বিরোধীদলের আন্দোলনে দমন পীড়ন চালিয়ে সরকার মূলত তার সকল বিরোধীকে দমিয়ে দিয়েছে। বিএনপিসহ সকল বিরোধী দল হতাশ হয়ে পড়েছিলো। সরকার দেশ পরিচালনা করছে একদম বাধাহীন, নির্বিঘ্নে।
নির্বাচনের বছর ছাত্রদের এই দুটি আন্দোলন বিরোধীদের আবার নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে। হতাশা ঝেড়ে নতুন উদ্যমে সরকার বিরোধীতা শুরু করেছে বিরোধী দলগুলো। এটাই ক্ষোভের কারণ আওয়ামীলীগের। তাই তারা নতুন করে যেন আর কোন ছাত্র আন্দোলন জমে উঠতে না পারে সেজন্য ছাত্রদের গুম করছে। নির্যাতন করছে।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.