যেভাবে হারিয়ে যায় নেপালের ২৪০ বছরের রাজতন্ত্র
সপরিবারে রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ
যদিও ২০০৮ সালে নেপালের রাজতন্ত্রের অবসান হয়, তবে নেপালবাসীর মতে রাজতন্ত্রের সমাপ্তি ঘটেছে তাদের প্রাণপ্রিয় রাজা বীরেন্দ্রের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সেই ২০০১ সালেই। নেপালের রাজতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৭৬৮ সালের রাজা পৃথ্বী নারায়ণ শাহ এর মাধ্যমে। তিনি নেপাল ও নেপালের আশপাশের কিছু গ্রামকে নিয়ে শুরু করেন তার হিন্দু রাজতন্ত্র। তখন থেকেই সবাই নেপালকে চেনে The Hindu Kingdom of Nepal, তবে নেপালের আরেকটি নাম আছে The Kingdom of Gorkha।
রাজা সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ
২৪০ বছরের নেপালের রাজতন্ত্রের ইতিহাসে জন্ম নিয়েছেন রাজা নারা বাহাদুর শাহ, রাজা পৃথ্বী বীর বিক্রম শাহ, ত্রিভুবন বীর বিক্রম শাহ থেকে শুরু করে রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ এর মতো ক্ষমতাশালী ও প্রজাপ্রিয় রাজারা, যারা তাদের যোগ্যতাবলে তিব্বত,চীন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি থেকে শুরু করে ভারত এর থেকে পর্যন্ত নিজেদের রাজত্বকে টিকিয়ে রেখেছিলেন। তবে কেন আর কিভাবেই হারিয়ে গেলো নেপালের ২৪০ বছরের পুরাতন রাজতন্ত্র?
রাজা পৃথ্বী বীর বিক্রম শাহ
রাজা সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ যখন মারা যান তখন তার প্রথম রানীর সন্তান রাজা পৃথ্বী বীর বিক্রম শাহ ১৮৮১ সালে মাত্র ৮ বছর বয়সে রাজার সিংহাসনে অধিষ্ঠ হন। নাবালক রাজার রাজ্য শাসনে তখন সাহায্যের জন্য পাশের আসনে বসতেন তার মা রানী দেবশ্রী লক্ষ্মী দেবী শাহ। অল্প সময়েই প্রজাদের মাঝে জনপ্রিয়তা পান রাজা পৃথ্বী বীর বিক্রম শাহ, তিনিই নেপালে প্রথম অটোমোবাইলস চালু করনে, প্রজাদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি ও স্যানিটেশন সুবিধার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ১৯১১ সালে রাজা পৃথ্বী বীর বিক্রম শাহকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়, হত্যাকারী কে ছিল সেটার রহস্যই থেকে গিয়েছে।
রাজা ত্রিভুবন তার দুই স্ত্রীর সাথে।
যখন মাত্র ৩৬ বছর বয়সে রাজা পৃথ্বী বীর বিক্রম শাহ মারা যান তখন তিনি রেখে গিয়েছিলেন ৪ জন রানীকে। তাদের মাঝের দ্বিতীয় রানীর সন্তান ত্রিভুবন বীর বিক্রম শাহ মাত্র ১০ বছর বয়সে রাজ সিংহাসনে বসেন। অল্প সময়েই ত্রিবুভন তার রাজ্যে বিপুল উন্নয়ন সাধন করে প্রজাদের চোখের মনিতে পরিণত হন। কিন্তু ১৯৪৭ সাল থেকেই ভারতের স্বপ্ন ছিল নেপালকে তাদের অধিনস্ত করার কিন্তু রাজা ত্রিভুবন কখনই সেটা হতে দেন নাই।
অবশেষে ১৯৫০ সালে ভারত নেপালকে তাদের বন্ধু প্রতিম রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষনা দেন এবং ১৯৫১ সালে তৎকালীন রাজা ত্রিভুবনকে সরিয়ে তার নাতি জ্ঞানেন্দ্রকে রাজা সিংহাসনে অধিষ্ঠ করতে সাহায্য করেন। কিন্তু রাজা জ্ঞানেন্দ্রের বয়স তখন মাত্র ৩ বছর তাই প্রজারা জ্ঞানেন্দ্রকে মেনে নেয় নাই তাই মাত্র দুইমাস পরেই আবার সিংহাসন ফিরে পান রাজা ত্রিভুবন, কিন্তু তার রাজ্যকাল বেশিদিন স্থায়ী হতে পারে নাই। কারণ ১৯৫৫ সালে সুইজারল্যান্ডের জুরিখের ক্যান্টন হাসপাতালে রহস্যজনকভাবে মারা যান রাজা ত্রিভুবন।
রাজা মহেন্দ্র বীর বিক্রম তার স্ত্রীর সাথে
রাজা ত্রিভুবন মারা যাবার পর তার প্রথম সন্তান রাজা মহেন্দ্র ৩৪ বছর বয়সে নেপালের রাজতন্ত্রের হাল ধরেন ১৯৫৫ সালে। রাজা মহেন্দ্র ১৯৭২ সালে মারা যাবার পর নেপালের রাজা হন রাজা মহেন্দ্র এর পুত্র রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ। যদিও সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র ভেবেছিলেন তার বাবা মহেন্দ্র মারা যাবার পড় তিনিই নেপালের রাজা হবেন। কিন্তু নেপালের জনগন জ্ঞানেন্দ্রের চেয়ে বীরেন্দ্রকেই বেশি ভালোবাসতেন আর যোগ্যতাগুনে ও রাজা বীরেন্দ্র জ্ঞানেন্দ্রের চেয়ে উত্তম ছিলেন। তাই ১৯৭২ সালে নেপালের রাজ দরবার সামলাতে বসেন রাজা বীরেন্দ্র।
জনপ্রিয় রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম তার স্ত্রীর সাথে
রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ ছিলেন নেপালের ১০ম রাজা, যিনি প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। ভারতের দার্জিলিংয়ে অবস্থিত খ্রিস্টানদের স্কুল সেন্ট যোসেফ কলেজে আট বছর অধ্যয়ন করেন। তারপর ১৯৫৯ সালে রাজা বীরেন্দ্র ইংল্যান্ডের এটন কলেজে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যান। সেখানে পড়াশোনা শেষে ১৯৬৪ সালে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
১৯৬৭ সালে অল্প কিছুদিন টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯৬৭-৬৮ মেয়াদকালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক তত্ত্ব বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ৩১ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে পিতা মহেন্দ্রের মৃত্যু-পূর্ব পর্যন্ত তিনি কানাডা, লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকাসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন। তিনি চিত্রকর্ম সংগ্রাহক হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং নেপালী হস্তশিল্পী ও চিত্রকরদের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। এছাড়াও হেলিকপ্টার চালনা বিদ্যা রপ্ত করেন তিনি।
২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭০ তারিখে বিখ্যাত রানা পরিবারের কন্যা ঐশ্বরিয়া রাজ্য লক্ষ্মী দেবী রানাকে বিবাহ করেন। ঐ সময়কালে হিন্দু নিয়ম-নীতি অনুযায়ী সর্বাপেক্ষা ব্যয়বহুল বিবাহ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এতে ব্যয় হয়েছিল $৯.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাঁদের সংসারে তিন সন্তান ছিল, দীপেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব, প্রিন্সেস শ্রুতি, প্রিন্স নিরাজন।
রাজপ্রসাদের একটি অনুষ্ঠানে রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম
ধরা হয় রাজা বীরেন্দ্র শুধুমাত্র যে নেপালের সবচেয়ে শিক্ষিত রাজা ছিলেন তাই নয়, তিনি নেপালের ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজা ছিলেন। ১৯৫০ সাল থেকে নেপালে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আস্তে আস্তে আন্দোলন শুরু হয়তে থাকে, রাজা মহেন্দ্র সেসময় প্রজাদের মতামতের ভিত্তিতে শাষন ব্যবস্থা পরিচালনা ও নির্বাচন শুরু করলেও রাজা বীরেন্দ্র প্রথম গণতান্ত্রিক মনোভাব দেখিয়ে নেপালে বহুদলীয় সরকার পরিচালনা ব্যবস্থা শুরু করেন যা প্রজামনে স্বস্তি এনে দেয় যদিও এরপর রাজার হাতের অনেক ক্ষমতাই তার আয়ত্বের বাইরে চলে যায়।
রাজা হিসেবে তিনি অক্টোবর, ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো ভারত সফর করেন। এর দুইমাস পর চীন গমন করেন। তখন প্রবল এশীয় শক্তিধর এ দু’টি দেশের মধ্যে বিপরীতমুখী অবস্থান বিরাজ করছিল এবং উভয় দেশের সঙ্গেই চমকপ্রদ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে সচেষ্ট ছিলেন রাজা বীরেন্দ্র। পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় সরকার পরিচালনায় বিরুদ্ধাচরণ করায় বহুসংখ্যক নেপালি কংগ্রেস পার্টির নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেন।
রাজা বীরেন্দ্র ও রানী ঐশ্বরিয়ার বিয়ের অনুষ্ঠান
এর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল দলবিহীন বনাম বহুদলীয় পার্টির পদ্ধতিতে জনমত যাচাইয়ের লক্ষ্যে গণভোটের আয়োজন করা। মে, ১৯৮০ সালে অনুষ্ঠিত এ গণভোটে দলীয় পদ্ধতিবিহীন অবস্থায় দেশ পরিচালনার পক্ষে ৫৫% জনগণের রায় প্রতিফলিত হয়। ১৯৮০-এর দশকে রাজনৈতিক দলগুলো দেশকে অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যায় এবং ছাত্রদের সংগঠনগুলো নেপালের সংবিধান পরিবর্তনের জন্য ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
তিনি নেপালের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভারত, চীন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের ব্যাপক চাপ থেকে মুক্ত রাখতে সমর্থ হন। তাঁর শাসনামলে নেপালের পর্যটন শিল্প বেশ বিকশিত হয়। ১৯৯০ এর দশকের শুরুতে গণতন্ত্রের দাবীতে আন্দোলন চাঙ্গা হয়ে উঠলেও সৈনিক এবং পুলিশের রক্তাক্ত সংঘর্ষে তা প্রশমিত হয়। তারপরও অনেকগুলো হরতাল, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ ক্রমবর্ধমান চাপ ও দাবী আসতে থাকে। ফলে, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সংবিধান সংশোধন কমিশন গঠন করেন এবং রাজনৈতিক পূণর্গঠনের জন্য সচেষ্ট হন। কমিশন প্রস্তাবিত সংবিধানের খসড়া ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৯০ তারিখে উপস্থাপন করে। এরফলে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন ও বহুদলীয় গণতন্ত্রভিত্তিক নতুন সংবিধানে তাকে নেপালের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সাংবিধানিকভাবে রাজা হিসেবে পরিচিতি ঘটানো হয়।
অবশেষে খসড়া সংবিধানটি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কে.পি. ভট্টরাই ও তাঁর সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয় ৯ নভেম্বর, ১৯৯০ তারিখে। এছাড়াও, তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র, ক্ষমতার পৃথকায়ণ এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখার প্রয়াস চালান।তারপরও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কোন্দল, অগণিত সামাজিক সমস্যায় নিপতিত হয়ে মাওবাদী বিদ্রোহী নেপালি কমিউনিস্ট পার্টি ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে গৃহযুদ্ধের সৃষ্টি হয় যা ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল।
কিন্তু নেপালের ইতিহাসের সবচেয়ে ন্যাক্কারজনকভাবে খুন হন রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ। ২০০১ এক সালে যখন নেপালে কিছুটা স্থিতি অবস্থা চলছে তখন ১ই জুন রাজা বীরেন্দ্র নৈশ্যভোজের সময় নিজের জ্যোষ্ঠপুত্র যুবরাজ দীপেন্দ্রের বন্ধুকের গুলিতে নিহত হন। সেদিন যুবরাজ শুধু তার পিতাকেই খুন করেন নাই, খুন করেছিলেন তার মা, নিজের বোন, বোনের স্বামী, নিজের ছোট ভাই সহ ৯ জনকে। পরে নিজেই বেঁছে নিয়েছিলেন আত্নহত্যার পথ। তবে এসবই রাজা বীরেন্দ্রের মৃত্যু পরবর্তী গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে আসে যা আঁজ দেড় যুগ পরেও সম্পূর্ণ হয় নাই।
তিনদিনের রাজা দীপেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব। যার বিরুদ্ধে পুরো পরিবারকে হত্যার অভিযোগ উঠেছিলো
গোয়েন্দাদের মতে যুবরাজ দীপেন্দ্রের বাগদত্তার বিপক্ষে ছিলেন রাজার পুরো পরিবার, এই নিয়েই মাতাল অবস্থায় নৈশ্যভোজে কথা কাটাকাটির সূচনা হয় এবং এক পর্যায়ে যুবরাজ দীপেন্দ্র একে একে গুলি করে খুন করেন নিজের পরিবারের সকলকে। তবে নেপালবাসী এই ঘটনাকে অধিকাংশই বিশ্বাস করেন না। তাদের বিশ্বাস যুবরাজ কখনই এমন মানুষ ছিলেন না, তার দ্বারা এমন কাজ অসম্ভব। কিন্তু আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয় যুবরাজ দীপেন্দ্রকেই, আদালতে প্রমাণ করা হয় যে সেই রাতে একমাত্র যুবরাজ দীপেন্দ্রের কাছেই অস্ত্র ছিল।
তবে নেপালের অনেকেই মনে করেন যে এটা রাজার পরিবারে বেঁচে থাকা একমাত্র রাজা বীরেন্দ্রের একমাত্র ছোটভাই ও সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্রের চক্রান্ত আবার অনেকেই মনে করেন রাজার খুনের পিছনে ভারতের চক্রান্তও থাকতে পারে। যুবরাজ দীপেন্দ্রকে রাজপ্রাসাদের সাঁকোর নিচ থেকে উদ্ধার করে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানে কোন স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র পাওয়া যায়নি। তাহলে সেই অস্ত্র কেন উদ্ধার করা গেল না ? সেই অস্ত্র গেল কোথায় ? কিভাবে নিশ্চিত হওয়া গেল যে, যুবরাজই খুন করেছেন। রাজপরিবারে থেকে কেউ কি এতটা নৃশংস হওয়ার শিক্ষা পেতে পারেন? ‘অনেকেই বলেন, জ্ঞানেন্দ্র রাজা হওয়ার জন্য বীরেন্দ্রকে সপরিবারে খুন করেছেন। রাজা জ্ঞানেন্দ্রকে সন্দেহ করার অবশ্য আরো কারণ আছে। যে রাজপ্রসাদে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল সেটা তদন্ত চলাকালীন রাজা জ্ঞানেন্দ্র ভেঙ্গে ফেলেন। ফলে তদন্ত সম্পন্ন করা আজো সম্ভব হয়নি।
সর্বশেষ রাজা জ্ঞানেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব।
এমন হত্যাযজ্ঞয়ের পর রাজা হিসাবে অধিষ্ঠিত হন মৃত্যুপযাত্রী যুবরাজ দীপেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ। কিন্তু মাত্র ৩ দিন পড়েই দীপেন্দ্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাই রাজপরিবারের হাল ধরার জন্য বেঁচে থাকেন একমাত্র রাজা মহেন্দ্রর ছোট ভাই জ্ঞানেন্দ্র। ১৯৫১ সালে সিংহাসন হারানোর ৫০ বছর পর আবার সিংহাসন ফিরে পান রাজা জ্ঞানেন্দ্র। তবে তার রাজ্যকাল বেশীদিন টিকতে পারেন নাই জন্মোগণের আন্দোলনের তোপের মুখে। প্রথমত তিনি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েই স্বৈরাচারী আচরণ শুরু করেন। দ্বিতীয়ত নেপালের জনগণ তাকে তাদের প্রিয় রাজা বীরেন্দ্রর খুনি মনে করতো। তাই আদালতের আদেশ অনুসারে ২০০৮ সালে সিংহাসন ছাড়তে তাকে বাধ্য করা হয় এমনকি তার রাজ প্রাসাদ থেকেও। এখানে যবনিকা পরে নেপালের ২৪০ বছরের রাজতন্ত্রের, শুরু হয় গণতন্ত্র।
বর্তমানে কাঠমুন্ডুর থামিলের পাশে অবস্থিত নারায়নহাতি রাজপ্রাসাদটিকে রাজার মিউজিয়াম হিসাবে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন ও হাজার হাজার নেপালি তাদের রাজাদের স্মরণ করতে মিউজিয়ামে ভিড় জমায়। এখন ও আপনি নেপালিদের বাড়ী অফিসে গেলে এখন ও রাজা বীরেন্দ্রের ছবি দেখতে পারবেন। এখন ও নেপালের জনগন তাদের প্রাণপ্রিয় রাজা বীরেন্দ্রকে গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.