জেলা কোটা পিছিয়ে পড়া জেলার জন্য নয়

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন করে কোটা নিয়ে নানান কথা বলেছেন। হা-হুতাশ কেন প্রশ্ন করেছেন? অথচ কে হা হুতাশ করেছে আমাদের জানা নেই। শ্যামল দত্তের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এছাড়া তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, জেলা কোটাও বাতিল হয়ে গেছে। এখন পিছিয়ে পড়া বলে কেউ অভিযোগ করতে পারবে না। আন্দোলনের সময় অনেকের ছবি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে, এখন কেউ এসে পিছিয়ে পড়া হিসেবে চাকরি না পাওয়ার অভিযোগ করতেও পারবে না।
মনে হচ্ছে যেন জেলা কোটা বরাদ্দ হয়েছে পিছিয়ে পড়া ইস্যুতে। আসলে জেলা কোটা নির্ধারণ হয়েছে জনসংখ্যার ভিত্তিতে। সেই হিসেবে সবচেয়ে বেশি কোটা বরাদ্দ ঢাকা জেলার জন্য ৮.৩৬। আর সবচেয়ে কম কোটা বান্দরবনের জন্য ০.২৭।
আর বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমীক্ষায় সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জেলা কুড়িগ্রাম। তার জন্য বরাদ্দ ১.৩৪। এরপর বরিশাল জেলা। তার জন্য বরাদ্দ ১.৬১।
বাংলাদেশের সবচেয়ে এগিয়ে থাকা জেলা ঢাকার জন্য বরাদ্দ ৮.৩৬। এরপর এগিয়ে থাকা জেলা চট্টগ্রামের জন্য বরাদ্দ ৫.২৯।
বাংলাদেশে জেলা কোটায় পিছিয়ে পড়া জেলার জন্য কোন সুবিধা নাই। প্রধানমন্ত্রী হয়তো এসব বিষয়ে জানেন না। আর নতুবা তিনি আমাদের বেকুব মনে করেন।
যাই হোক, আসুন দেখে নিই জেলা কোটায় কোন জেলার জন্য কত বরাদ্দ।
ঢাকা বিভাগ: ঢাকা ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ, গাজীপুর ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ, মানিকগঞ্জ শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ, মুন্সীগঞ্জ এক শতাংশ, নারায়ণগঞ্জ ২ দশমিক ০৫ শতাংশ, নরসিংদী ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ, ফরিদপুর ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, গোপালগঞ্জ শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ, মাদারীপুর শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ, রাজবাড়ী শূন্য দশমিক ৭৩ শতাংশ, শরিয়তপুর শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ, কিশোরগঞ্জ ২ দশমিক ০২ শতাংশ এবং টাঙ্গাইল ২ দশমিক ৫০ শতাংশ কোটা পাবে।
ময়মনসিংহ বিভাগ: ময়মনসিংহ ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ, জামালপুর ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ, নেত্রকোণা ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং শেরপুর জেলা শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ কোটা পেয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগ: চট্টগ্রাম ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ, বান্দরবান শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ, কক্সবাজার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ, ব্রাহ্মবাড়িয়া ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ, চাঁদপুর ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ, কুমিল্লা ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ, খাগড়াছড়ি শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ, ফেনী এক শতাংশ, লক্ষ্মীপুর ১ দশমিক ২০ শতাংশ, নোয়াখালী ২ দশমিক ১৬ শতাংশ, রাঙ্গামাটি শূন্য দশমিক ৪১ শতাংশ কোটা পেয়েছে।
রাজশাহী বিভাগ: রাজশাহী ১ দশমিক ৮০ শতাংশ, জয়পুরহাট শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ, পাবনা ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সিরাজগঞ্জ ২ দশমিক ১৫ শতাংশ, নওগাঁ ১ দশমিক ৮১ শতাংশ, নাটোর ১ দশমিক ১৮ শতাংশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং বগুড়া জেলা ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ কোটা পাবে।
রংপুর বিভাগ: রংপুর ২ শতাংশ, দিনাজপুর ২ দশমিক ০৮ শতাংশ, গাইবান্ধা ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ, কুড়িগ্রাম ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ, লালমনিরহাট শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ, নীলফামারী ১ দশমিক ২৭ শতাংশ, পঞ্চগড় শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ, ঠাকুরগাঁও শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ কোটা পেয়েছে।
খুলনা বিভাগ: খুলনা ১ দশমিক ৬১ শতাংশ, যশোর ১ দশমিক ৯২ শতাংশ, ঝিনাইদহ ১ দশমিক ২৩ শতাংশ, মাগুরা শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ, নড়াইল শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ, বাগেরহাট ১ দশমিক ০২ শতাংশ, সাতক্ষীরা ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ, চুয়াডাঙ্গা শূন্য দশমিক ৭৮ শতাংশ, কুষ্টিয়া ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং মেহেরপুর জেলা শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ কোটা পেয়েছে।
বরিশাল বিভাগ: বরিশাল ১ দশমিক ৬১ শতাংশ, ভোলা ১ দশমিক ২৩ শতাংশ, ঝালকাঠি শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ, পিরোজপুর শূন্য দশমিক ৭৭ শতাংশ, বরগুনা শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ এবং পটুয়াখালী ১ দশমিক ০৭ শতাংশ কোটা পেয়েছে।
সিলেট বিভাগ: সিলেট ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ, মৌলভীবাজার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, সুনামগঞ্জ ১ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং হবিগঞ্জ জেলা ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ কোটা পেয়েছে।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.