ভেঙ্গে পড়েছে ঢাবি ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হটকারি সিদ্ধান্তে দলের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরী হয়েছে। সকল সাধারণ ছাত্রদের বহুদিনের দাবি কোটা সংস্কার করার। সেই দাবীর বিরুদ্ধে গিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি-সেক্রেটারী নিজ দলের মধ্যেই তোপের মুখে আছেন। আট এপ্রিল রাতে আন্দোলনরত ছাত্রদের শাসাতে গিয়ে ধাওয়া খেয়েছেন তারা দুজনে। এটা ছাত্রলীগের জন্য বড় লজ্জার! এমন পরিস্থিতিতে তারা আগে কখনো পড়েনি।
আগেই বলে রাখি ঢাবিতে যারা বর্তমানে হলে থাকেন তারা ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক তাদের ছাত্রলীগ করতেই হয়। ছাত্রলীগের রাজনীতির বাইরে কারো হলে থাকার সুযোগ নেই। এর মধ্যে যারা সোহাগ-জাকিরকে ধাওয়া দিয়েছে তারা ছাত্রলীগেরই নেতা কর্মী।
এই ছাড়াও কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা এবং শিক্ষার্থীদের দাবির বিপক্ষে দাঁড়ানোয় ছাত্রলীগ থেকে গণহারে পদত্যাগ করছেন সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।পাশাপাশি চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যৌক্তিক দাবি করে এর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন তারা।
আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেয়া ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক সহ-সভাপতি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন একটি যৌক্তিক আন্দোলন। এ আন্দোলনে সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ রয়েছে। ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গিয়ে আন্দোলনের বিরোধিতা করায় আমি সজ্ঞানে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করছি। শিগগিরই পদত্যাগপত্র জমা দেব।
সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষদের সাধারণ সম্পাদক ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘আমি লজ্জিত, ক্ষমাপ্রার্থী। আমি বিবেক বিক্রি করতে পারব না।’এ ছাড়া ছাত্রলীগের আরো বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ছাত্রলীগের বর্তমান অবস্থান নিয়ে ক্ষুব্ধ। এবং নিজেদের নাম দ্রুতই ছাত্রলীগের পদ থেকে প্রত্যাহার করে নিবেন।
অনেক ছাত্রলীগ নেতাই ইতিমধ্যে পদত্যগের ঘোষণা দিয়েছে। আরো অনেকে পদত্যাগের ঘোষণার জন্য তৈরী হচ্ছে। আরেকটা ব্যাপার হলো গত রাতে এশা নামের একটি ছাত্রলীগের এক নেত্রী মোর্শেদা নামের এক মেয়ের পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। এতে পাল্টা অবস্থান সৃষ্টি হয় কবি সুফিয়া হলে। এশাকে জুতিয়ে জুতার মালা পরিয়ে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
সোহাগ-জাকির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎক্ষণাৎ এশাকে দল থেকেও বহিষ্কার করে। এতে নিরাপত্তা শংকায় পড়ে অন্যান্য নেতারা। খবর নিয়ে জানা গেল ঢাবির বেশিরভাগ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী এখন সোহাগ জাকিরের কথা শুনছে না। ভেঙ্গে পড়েছে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব। এই নেতৃত্ব ভেঙ্গে পড়ার আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো সোহাগ-জাকির বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে ঢাবির প্রত্যেকটি হলে ছাত্রদের মারপিট করেছে।
সব মিলে ঢাবি ছাত্রলীগ এখন পুরোটাই ছত্রভঙ্গ অবস্থায় আছে। আর এজন্য বেশিরভাগ নেতাকর্মী দায়ি করছেন সোহাগ-জাকিরের হটকারি সিদ্ধান্তকে।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.