জাতিসংঘেও নিরাপদ নন নারীরা

ছবিঃ মালাইয়া হার্পার, যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে যিনি মুখ খুলেছেন।
বিশ্বের সবচেয়ে আদর্শ প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি বলে মনে করা হলেও, জাতিসংঘের ভেতরেও যৌন হয়রানি ও অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সংস্থাটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই এরকম অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছে।
তারপরেও তাদের বিরুদ্ধে জোরালো কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে সংস্থাটির বিরুদ্ধে সমালোচনা করছেন বর্তমান ও সাবেক নারী কর্মীরা। জাতিসংঘকে অনেকেই আদর্শ একটি দপ্তর বা স্থান বলে মনে করেন। অনেকের কাছে এখানে কাজ করতে পারাটা গৌরব আর আকাঙ্ক্ষার একটি ব্যাপার।
কিন্তু যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে মি টু আন্দোলন জাতিসংঘ পতাকার নীচের একটি অন্ধকার দিকও বের করে এনেছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে ইউএন এইডসে কাজ করেছেন মালাইয়া হার্পার। তিনি তার সাবেক বস, জাতিসংঘের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা লুইজ লরেজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের বিস্তারিত অভিযোগ এনেছেন।
তিনি বলছেন, ''তিনি লিফটের ভেতরে প্রথমে আমাকে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর এর জোর করে আমাকে তার হোটেল রুমে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অন্য যে ক'জন নারীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি, তাদের ক্ষেত্রেও ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলছেন, পুরো জাতিসংঘ জুড়েই এই সমস্যা ছড়িয়ে রয়েছে। অভিযোগ তোলার পরেও তিনি এখনো কোন প্রতিকার পাননি।
লরেজের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ তুলেছেন আরো কয়েকজন নারীও। এরপর ইউএন এইডস এরপর একটি পুরাদস্তুর তদন্ত চালায়, যদিও মি. লরেজের বিরুদ্ধে অন্যায় কিছু করার যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ তারা পায়নি।
মিস হার্পার বলছেন, ''এটাই আমাকে সবচেয়ে অবাক করেছে। আসলে এখানে পুরো পদ্ধতিটাই এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন কোনভাবে এই সংস্থার মানসম্মান ক্ষুণ্ণ না হয়। তাই এসব বিষয়ে কেউ সামনে এগোতে চান না। কোন মেয়ে অভিযোগ নিয়ে সামনে আসতে চায় না, কারণ এরকম অভিযোগ যারা জানিয়েছেন, তাদের নানাভাবে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। এখানকার পদ্ধতির কারণে তারা আরো হয়রানির শিকার হন, তাই কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে চান না।''
জাতিসংঘের কর্মী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চালানো সাম্প্রতিক একটি জরিপে দেখা যাচ্ছে, জাতিসংঘে কর্মরত নারীদের খুব সামান্যই অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়ায় আস্থা রাখেন।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.