এই লর্ড কার্লাইল কে?
আজ সারাদিন খবরের শিরোনাম লর্ড কার্লাইল। খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবীদের পরামর্শ ও সহযোগিতার জন্য ব্রিটেনের এক আইনজীবীকে নিয়োগ দিয়েছে দলটি। তিনি খালেদা জিয়ার ৩৬টি মামলায় পরামর্শ ও সহযোগিতা করবেন।
মির্জা ফখরুল জানান, বিদেশী এ আইনজীবীর নাম লর্ড কারলাইল। ব্রিটেনে যারা আমাদের রাজনীতির সমর্থক রয়েছেন তাদের সাথে আলোচনা করে এ ব্রিটিশ আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ হাউস অব লর্ডসের স্বতন্ত্র সদস্য কারলাইল ব্রিটেনের শীর্ষ আইন বিশেষজ্ঞদের অন্যতম।
পোলিশ ইহুদি অভিবাসী পরিবারে তার জন্ম ১৯৪৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে আইনে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন ১৯৬৯ সালে। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে তিনি ‘কুইন’স কাউন্সেল (কিউসি)’ নিযুক্ত হন। লর্ড কারলাইল একজন ব্যারিস্টার এবং লন্ডনের শীর্ষস্থানীয় ব্যারিস্টারদের চেম্বার ‘ফাউন্ড্রি চেম্বারসের সাবেক প্রধান।
লর্ড কারলাইল দীর্ঘদিন ধরে আইনি পেশার পাশাপাশি রাজনীতির সাথেও জড়িত। লর্ড কারলাইল খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনায় আইনজীবী টিমের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গত সপ্তাহে ব্যক্তি উদ্যোগে বাংলাদেশবিষয়ক সেমিনার আয়োজন করে আলোচনায় এসেছেন লর্ড কারলাইল। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিরা অংশ না নেওয়ায় সেটি কার্যত বিএনপি ও জামায়াতের একতরফা অভিযোগ জানানোর মঞ্চে পরিণত হয়।
এছাড়া ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের শুরু থেকেই কারলাইল ছিলেন তার বিরোধী। ২০১২ সালের ২৫ নভেম্বর এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সমালোচনা করেন তিনি। ট্রাইব্যুনালের ভূমিকাকে ‘প্রতিশোধমূলক’ বলে অভিযোগ করে দক্ষিণ আফ্রিকা ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের মতো ‘ন্যায়বিচার ও পুনর্মিলনের নীতি’ অনুসরণ করার আহ্বান জানান কারলাইল।
সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেন, ‘লর্ড কারলাইল আইসিটি নিয়ে বিদ্বেষমূলক অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি এ সম্পর্কে যেসব কথা বলেছেন, তা একটি স্বাধীন দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি হস্তক্ষেপের শামিল।’
২০১৬ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা ও যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখার পর লর্ড কারলাইল বাংলাদেশ সরকার বরাবর একটি চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিটি তিনি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসে পৌঁছে দেন। ওই চিঠিতে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং ওই আদালতের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার সুপারিশ করেন। তিনি লেখেন, ‘মামলাটি অসাঞ্জস্যতায় পরিপূর্ণ, একপেশে, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপপূর্ণ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো মান না মেনেই প্রতিষ্ঠিত।’
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.