আজ পিতার জন্মদিন

মধুমতি আর ঘাগোর নদীর তীরে এবং হাওড়-বাঁওড়ের মিলনে গড়ে ওঠা বাংলার অবারিত প্রাকৃতিক পরিবেশ টুঙ্গিপাড়া গ্রাম। গ্রামের সারি সারি গাছ ছবির মতো সাজানো। তখনও টুঙ্গিপাড়া অপরিচিত এলাকা। দু একটি বনেদী পরিবার এখানে বসবাস শুরু করে। টুঙ্গিপাড়ার একটি বনেদী পরিবারের নাম শেখ পরিবার।
সেই পরিবারে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ শেখ লুৎফর রহমান ও শেখ সাহেরা খাতুনের ঘরে জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে চেহারার শিশু। বাবা-মা আদর করে নাম রাখলেন খোকা। এই খোকাই হয়ে উঠলেন গণমানুষের নেতা, ইতিহাসের মহানায়ক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ তার ৯৯তম জন্মদিন।

ছবিঃ সাত মার্চের ভাষণ দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু
১৭ মার্চ যেন ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই অমোঘ বাণী - ‘ঐ মহামানব আসে/ দিকে দিকে রোমাঞ্চ লাগে/ মর্ত্যধূলির ঘাসে ঘাসে/ সুরলোকে বেজে ওঠে শঙ্খ/ নরলোকে বাজে জয়ডঙ্ক/ এল মহাজন্মের লগ্ন...’ এর মতো। আর এই অমর মহালগ্ন আজকের দিন। এই দিনেই জন্মেছিলেন তিনি। জাতি দিনটিকে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে উদযাপন করে।
শিশুকালে ‘খোকা’ নামে পরিচিত সেই শিশুটি পরবর্তী সময়ে হয়ে ওঠেন নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারি। গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ ও জনগণের প্রতি অসাধারণ মমত্ববোধের কারণেই পরিণত বয়সে হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা।

ছবিঃ তরুণ বয়সে জাতির পিতা
শেখ মুজিবুর রহমান কিশোর বয়সেই সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে প্রথমবার কারাবরণ করেন।
১৯৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচন ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে পরিণত হন।

ছবিঃ জাতির পিতা প্রস্তাবিত ছয় দফার দাবীতে গণমানুষের আন্দোলন
সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে যখন অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে পরিচালিত করছিলেন, তখনই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তার হাতে সপরিবারে নিহত হন তিনি।
‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তাঁর কর্ম ও আদর্শ চিরকাল আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে।’ তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কেবল বাঙালি জাতির নন, তিনি বিশ্বে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের স্বাধীনতার প্রতীক, মুক্তির দূত।

ছবিঃ জাতির পিতার সমাধিসৌধ, টুঙ্গিপাড়া
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.