স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ দের কথা- ১
ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সবচেয়ে সেরা সন্তানরা তাদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন বলেই মুক্তিযুদ্ধ সফল হয়েছিলো। বাংলাদেশ পেয়েছিলো লাল সবুজের পতাকা। ভাবলে খুব অবাক লাগে অত্যন্ত অল্প বয়সের তরুনরা ছিলেন সমানের শাহদাতের কাতারে। যেমন তাদের সামর্থ তেমনি তাদের দৃঢ়তা! কেউ বলতে পারবে না তারা ছোট! তেমন এক অরুন প্রাণ মাত্র ২৩ বছর বয়সেই আজকে পরিচিত বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর।
মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের জন্ম বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার আগরপুর ইউনিয়নের রহিমগঞ্জ গ্রামে ৮ই মার্চ ১৯৪৯ সালে৷ তার বাবার নাম ছিলো মোতালেব হাওলাদার৷ দাদা আবদুর রহিম হাওলাদার ছিলেন অত্যন্ত প্রভাবশালী ও সম্মানীয় ব্যক্তি৷ অত্যন্ত মেধাবী মহিউদ্দীন জাহাংগীর একবার পাকিস্তান সেনা বাহিনীতে যুক্ত হতে গিয়ে চোখের সমস্যায় ভর্তি হতে ব্যর্থ হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন কালে পাকিস্তান সামরিক একাডেমিতে যুক্ত হন। সেখান থেকে ক্যাডেটশিপ সমাপ্ত করে ১৯৬৮ সালের জুনে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে কমিশন লাভ করেন।
মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ছাত্রজীবন থেকে ছিলেন রাজনীতি সচেতন মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীনই সমাপ্ত করেন লেনিন, মাও-সেতুং, চে গুয়েভারার মত ব্যাক্তিদের জীবনী! ৩ জুলাই ১৯৭১ সালে মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর পাকিস্তান থেকে সীমান্ত পথে ভারতে প্রবেশ করেন। দীর্ঘদিন সুযোগ অন্বেষণের পর এই দিন স্বক্ষমভাবে পালিয়ে আসতে পারেন তিনি। সাথে আরো কয়েকজন বাঙ্গালী সামরিক অফিসারও তার সাথে পালিয়ে আসেন। তারা হলেন ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন মমতাজ, ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার রশিদ খান, ক্যাপ্টেন আব্দুল আজিজ পাশা এবং ক্যাপ্টেন আনাম। এরা একসাথে শিয়ালকোট সীমান্ত পাড়ি দেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রথমেই স্থানীয় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের অফিসে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে দীল্লি হয়ে সোজা কলকাতা চলে আসেন। কলকাতায় তখন বাংলাদেশীদের হাহাকার!
সীমান্ত পেরিয়ে অগনিত বনি আদম দেশহারা জীবন যাপন করছেন। ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গারীর সহ সামরিক অফিসাররা পাকিস্তান থেকে পালিয়ে যুদ্ধে যোগ দিতে এছেন শুনে তাদের মাঝে সে কী উল্লাশ! যা ছিলো দেখার মত। এই দলটির পালিয়ে আসার কথা শুনে তখন গোটা বাংলাদেশ ভাসছে আনন্দে। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়তক এম এ জি ওসমানি স্বয়ং কলকাতা চলে এসেছেন এই দলটিকে অভিভাদন করতে! এখান থেকেই মুক্তিযুদ্ধে যার যার সেক্টর ভাগ করার পর মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর পড়েন ৭ নাম্বার সেক্টরে মেহেদিপুর ক্যাম্পে। তরুন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর পরিধান করতেন লুঙ্গি, গেঞ্জি ও মাথায় একটি গামছা। এই বেশে তাকে দেখলে মনে হত কঠিন এক লড়াকু হাজির হয়েছেন। একই সাথে তার কন্ঠের দৃঢ়তা ও শৃঙ্খলা জ্ঞান অন্যদের মাঝে দ্রুতই তাকে মান্যবর করে তুললো। এর মাঝেই সময় কেটে গেলো।
ডিসেম্বরের ৩ তারিখ চাপাইনবাবগঞ্জ শহরকে শত্রুমুক্ত করার দ্বায়িত্ব পড়লো মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের ওপর। মহানন্দা নদীর অপর প্রান্তেই শক্তিশালী এক ঘাঁটি করেছে পাক বাহিনী। সেই ঘাটিকে রক্ষায় নদী তীরে নির্মান হয়েছে শক্তিশালী দূর্গ। জনহীন নদী তীরে সেই গূর্গের উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সামনে এগোনোর দ্বায়িত্ব পড়লো মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের ওপর। ১০ ডিসেম্বর ভোর রাতে নৌকযোগে একসাথে ৫০ জন মুক্তি সেনানী নিয়ে রওনা হলেন তিনি। পরিকল্পনা ছিলো ভারতীয় মীত্র বাহিনী হঠাত আকাশ থেকে গোলাবর্ষন করে পাক হানাদারদের দিকভ্রান্ত করে দেবে আর সুযোগ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা চালাবে স্থল অপারেশন। কিন্তু মীত্রবাহিনী না আসায় ৪ দিন অপেক্ষা করে ১৪ তারিখ ভোরবেলা মহিউদ্দীন জাহাংগীর সকল সঙ্গীকে উদ্দেশ্য করে বললেন তিনি আঘাত হানতে চান। আর সেটা চূড়ান্ত আঘাত। যেকোন মূল্যে পরাজিত করতে হবে শত্রুদের। একই সাথে মীত্রবাহিনী না আসায় এই হামলায় অংশ নেয়ার স্বাধীনতা দিয়ে তার সঙ্গী হতে আগ্রহী বাছাই করলেন। দেখা গেলো ২০ জন বীর যোদ্ধা এই অপারেশনে মহিউদ্দীনের সঙ্গী হয়ে জীবন বাজি রাখতে রাজি হলেন।
প্রচন্ড সেই শীতে ২০ জন যোদ্ধা নিয়ে মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর দেশমাতৃকার জন্য জীবন হাতে নিয়ে ছুটলেন! এই শীতে ঠান্ডা পানি পেরিয়ে নদী পার হলেন তারা। উত্তর দিক থেকে শুরু করলেন আক্রমন। একে একে নিরবে বেয়োনেটের আঘাতে শত্রু খতম করে দক্ষিন দিকে আগাতে লাগলো মহিউদ্দীন বাহিনী। মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের পরিকল্পনা ছিলো নিখুত। অত্যন্ত কার্যকর সেই পরিকল্পনায় একে একে সকল বাংকার শত্রুমুক্ত হতে লাগলো। এরই মাঝে যখন মাত্র কয়েকটা ব্যাংকার বাকী, ঠিক এমন সময় পাকিস্তানি সিভিল আর্মড ফোর্স বিষয়টী বুঝে ফেললো। তারা ছিলো বাঁধের ওপর। ফলে তারাও এবার মূল বাহিনীর সাথে আক্রমনে যোগ দিয়ে প্রচন্ড ভাবে গোলা বর্ষন করতে লাগলো।
পাকিস্তানিদের পূর্বপরিকল্পিত ঘাঁটি থেকে সজাগ আক্রমনের তীব্রতা প্রতিরোধ অসম্ভব ছিলো তখন। তবুও মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর সহযোগীদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন। এরই এক পর্যায়ে একটি গুলি এসে বিধলো মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের কপাল বরাবর। মুহুর্তে থেমে গেলো মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর জীবন। এরপর আক্রমন আরো তীব্র হলে সহযোদ্ধারা আত্মরক্ষার্থে পিছু হটার স্বীদ্ধান্ত নেন। এক পর্যায়ে নদী পথে ডুব সাঁতারে অর্ধ মৃত অবস্থান মুক্তি ঘাটিতে ফেরত আসেন যোদ্ধারা। চারিদিকে মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের আত্মত্যাগের গাঁথা ছড়িয়ে পড়লে মুক্তিবাহিনী প্রচন্ড আক্রোশে পাক বাহিনীর ঘাঁটি আক্রমন করে। পালিয়ে যায় পাক বাহিনী। এভাবেই সাহসের বীজ বুনে মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর শত্রুমুক্ত করে গেলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জকে!
পরবর্তীতে রক্তস্নাত শহীদী দেহ নদীর পাড় থেকে উদ্ধার করে পবিত্র সোনামসজিদ প্রাঙ্গনে দাফন করা হয়। বাংলাদেশের জীবন প্রদীতে প্রতিটি সময় কনিকায় মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর হয়ে আছেন অসীম উদ্যোমের প্রতিক হয়ে! রবেন চিরোকাল!
সূত্রঃ স্বাধীনতাযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা,
বীরশ্রেষ্ঠ,
স্বাধীনতা যুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা,
মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধূরী গবেষনা।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সবচেয়ে সেরা সন্তানরা তাদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন বলেই মুক্তিযুদ্ধ সফল হয়েছিলো। বাংলাদেশ পেয়েছিলো লাল সবুজের পতাকা। ভাবলে খুব অবাক লাগে অত্যন্ত অল্প বয়সের তরুনরা ছিলেন সমানের শাহদাতের কাতারে। যেমন তাদের সামর্থ তেমনি তাদের দৃঢ়তা! কেউ বলতে পারবে না তারা ছোট! তেমন এক অরুন প্রাণ মাত্র ২৩ বছর বয়সেই আজকে পরিচিত বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর।
মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের জন্ম বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার আগরপুর ইউনিয়নের রহিমগঞ্জ গ্রামে ৮ই মার্চ ১৯৪৯ সালে৷ তার বাবার নাম ছিলো মোতালেব হাওলাদার৷ দাদা আবদুর রহিম হাওলাদার ছিলেন অত্যন্ত প্রভাবশালী ও সম্মানীয় ব্যক্তি৷ অত্যন্ত মেধাবী মহিউদ্দীন জাহাংগীর একবার পাকিস্তান সেনা বাহিনীতে যুক্ত হতে গিয়ে চোখের সমস্যায় ভর্তি হতে ব্যর্থ হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন কালে পাকিস্তান সামরিক একাডেমিতে যুক্ত হন। সেখান থেকে ক্যাডেটশিপ সমাপ্ত করে ১৯৬৮ সালের জুনে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে কমিশন লাভ করেন।
মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ছাত্রজীবন থেকে ছিলেন রাজনীতি সচেতন মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীনই সমাপ্ত করেন লেনিন, মাও-সেতুং, চে গুয়েভারার মত ব্যাক্তিদের জীবনী! ৩ জুলাই ১৯৭১ সালে মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর পাকিস্তান থেকে সীমান্ত পথে ভারতে প্রবেশ করেন। দীর্ঘদিন সুযোগ অন্বেষণের পর এই দিন স্বক্ষমভাবে পালিয়ে আসতে পারেন তিনি। সাথে আরো কয়েকজন বাঙ্গালী সামরিক অফিসারও তার সাথে পালিয়ে আসেন। তারা হলেন ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন মমতাজ, ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার রশিদ খান, ক্যাপ্টেন আব্দুল আজিজ পাশা এবং ক্যাপ্টেন আনাম। এরা একসাথে শিয়ালকোট সীমান্ত পাড়ি দেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রথমেই স্থানীয় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের অফিসে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে দীল্লি হয়ে সোজা কলকাতা চলে আসেন। কলকাতায় তখন বাংলাদেশীদের হাহাকার!
সীমান্ত পেরিয়ে অগনিত বনি আদম দেশহারা জীবন যাপন করছেন। ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গারীর সহ সামরিক অফিসাররা পাকিস্তান থেকে পালিয়ে যুদ্ধে যোগ দিতে এছেন শুনে তাদের মাঝে সে কী উল্লাশ! যা ছিলো দেখার মত। এই দলটির পালিয়ে আসার কথা শুনে তখন গোটা বাংলাদেশ ভাসছে আনন্দে। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়তক এম এ জি ওসমানি স্বয়ং কলকাতা চলে এসেছেন এই দলটিকে অভিভাদন করতে! এখান থেকেই মুক্তিযুদ্ধে যার যার সেক্টর ভাগ করার পর মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর পড়েন ৭ নাম্বার সেক্টরে মেহেদিপুর ক্যাম্পে। তরুন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর পরিধান করতেন লুঙ্গি, গেঞ্জি ও মাথায় একটি গামছা। এই বেশে তাকে দেখলে মনে হত কঠিন এক লড়াকু হাজির হয়েছেন। একই সাথে তার কন্ঠের দৃঢ়তা ও শৃঙ্খলা জ্ঞান অন্যদের মাঝে দ্রুতই তাকে মান্যবর করে তুললো। এর মাঝেই সময় কেটে গেলো।
ডিসেম্বরের ৩ তারিখ চাপাইনবাবগঞ্জ শহরকে শত্রুমুক্ত করার দ্বায়িত্ব পড়লো মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের ওপর। মহানন্দা নদীর অপর প্রান্তেই শক্তিশালী এক ঘাঁটি করেছে পাক বাহিনী। সেই ঘাটিকে রক্ষায় নদী তীরে নির্মান হয়েছে শক্তিশালী দূর্গ। জনহীন নদী তীরে সেই গূর্গের উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সামনে এগোনোর দ্বায়িত্ব পড়লো মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের ওপর। ১০ ডিসেম্বর ভোর রাতে নৌকযোগে একসাথে ৫০ জন মুক্তি সেনানী নিয়ে রওনা হলেন তিনি। পরিকল্পনা ছিলো ভারতীয় মীত্র বাহিনী হঠাত আকাশ থেকে গোলাবর্ষন করে পাক হানাদারদের দিকভ্রান্ত করে দেবে আর সুযোগ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা চালাবে স্থল অপারেশন। কিন্তু মীত্রবাহিনী না আসায় ৪ দিন অপেক্ষা করে ১৪ তারিখ ভোরবেলা মহিউদ্দীন জাহাংগীর সকল সঙ্গীকে উদ্দেশ্য করে বললেন তিনি আঘাত হানতে চান। আর সেটা চূড়ান্ত আঘাত। যেকোন মূল্যে পরাজিত করতে হবে শত্রুদের। একই সাথে মীত্রবাহিনী না আসায় এই হামলায় অংশ নেয়ার স্বাধীনতা দিয়ে তার সঙ্গী হতে আগ্রহী বাছাই করলেন। দেখা গেলো ২০ জন বীর যোদ্ধা এই অপারেশনে মহিউদ্দীনের সঙ্গী হয়ে জীবন বাজি রাখতে রাজি হলেন।
প্রচন্ড সেই শীতে ২০ জন যোদ্ধা নিয়ে মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর দেশমাতৃকার জন্য জীবন হাতে নিয়ে ছুটলেন! এই শীতে ঠান্ডা পানি পেরিয়ে নদী পার হলেন তারা। উত্তর দিক থেকে শুরু করলেন আক্রমন। একে একে নিরবে বেয়োনেটের আঘাতে শত্রু খতম করে দক্ষিন দিকে আগাতে লাগলো মহিউদ্দীন বাহিনী। মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের পরিকল্পনা ছিলো নিখুত। অত্যন্ত কার্যকর সেই পরিকল্পনায় একে একে সকল বাংকার শত্রুমুক্ত হতে লাগলো। এরই মাঝে যখন মাত্র কয়েকটা ব্যাংকার বাকী, ঠিক এমন সময় পাকিস্তানি সিভিল আর্মড ফোর্স বিষয়টী বুঝে ফেললো। তারা ছিলো বাঁধের ওপর। ফলে তারাও এবার মূল বাহিনীর সাথে আক্রমনে যোগ দিয়ে প্রচন্ড ভাবে গোলা বর্ষন করতে লাগলো।
পাকিস্তানিদের পূর্বপরিকল্পিত ঘাঁটি থেকে সজাগ আক্রমনের তীব্রতা প্রতিরোধ অসম্ভব ছিলো তখন। তবুও মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর সহযোগীদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন। এরই এক পর্যায়ে একটি গুলি এসে বিধলো মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের কপাল বরাবর। মুহুর্তে থেমে গেলো মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর জীবন। এরপর আক্রমন আরো তীব্র হলে সহযোদ্ধারা আত্মরক্ষার্থে পিছু হটার স্বীদ্ধান্ত নেন। এক পর্যায়ে নদী পথে ডুব সাঁতারে অর্ধ মৃত অবস্থান মুক্তি ঘাটিতে ফেরত আসেন যোদ্ধারা। চারিদিকে মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের আত্মত্যাগের গাঁথা ছড়িয়ে পড়লে মুক্তিবাহিনী প্রচন্ড আক্রোশে পাক বাহিনীর ঘাঁটি আক্রমন করে। পালিয়ে যায় পাক বাহিনী। এভাবেই সাহসের বীজ বুনে মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর শত্রুমুক্ত করে গেলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জকে!
পরবর্তীতে রক্তস্নাত শহীদী দেহ নদীর পাড় থেকে উদ্ধার করে পবিত্র সোনামসজিদ প্রাঙ্গনে দাফন করা হয়। বাংলাদেশের জীবন প্রদীতে প্রতিটি সময় কনিকায় মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর হয়ে আছেন অসীম উদ্যোমের প্রতিক হয়ে! রবেন চিরোকাল!
সূত্রঃ স্বাধীনতাযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা,
বীরশ্রেষ্ঠ,
স্বাধীনতা যুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা,
মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধূরী গবেষনা।
ট্যাগ ও ট্রেন্ডঃ
কোন মন্তব্য নাই.